গোবিন্দগঞ্জে অপহৃত উদ্ধার : অপহরণকারী গ্রেফতার

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা ॥  গত ১১ জুন মোঃ মোশারফ হোসেন মল্লিক র‌্যাব-১, উত্তরা ক্যাম্পে অভিযোগ করে যে, তার ভাতিজা নাজিমকে অপহরণ করা হয়েছে এবং মুক্তিপণ বাবদ ৪০ হাজার টাকা দাবী করছে। র‌্যাব-৫, রাজশাহী রংপুর ক্যাম্পের একটি অপারেশন দল ১৫ জুন অভিযান পরিচালনা করে অপহৃত নাজিমকে উদ্ধার সহ অপহরণকারী মোঃ হুমায়ুন কবীরকে গ্রেফতার করে।

পরে অপহৃত ব্যক্তি এবং অপহরণকারীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, অপহৃত ব্যক্তি নিজেই তার অপর সহযোগীদের মাধ্যমে অপহরণের ঘটনা সাজিয়ে তার আত্মীয়দের নিকট থেকে টাকা আদায়ের চেষ্টা করছিল। এ ব্যাপারে মোঃ আরিফ শেখ (২২) যাবতীয় পরিকল্পনা করে এবং তার বাসাতেই মোঃ নাজিমুদ্দিন মল্লিককে আশ্রয় দিয়ে অপহরণের নাটক সাজিয়ে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করে। এ ব্যাপারে অপহৃত মোঃ নাজিম উদ্দিন এর আত্মীয় মোঃ শাহজাহান শেখ বাদী হয়ে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। আসামী মোঃ আরিফ শেখ (২২) পলাতক রয়েছে এবং পলাতক আসামীকে গ্রেফতারের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

 

ডাকাতির অভিযোগে দু’জন গ্রেফতার

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সদস্য সন্দেহে ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার উপজেলার ঝালিঙ্গী বিল থেকে  তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের মধু মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর (৩০) এবং  একই গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে পাপুল (২৫) পলাশবাড়ী থানার উপপরিদর্শক আকতার হোসেন জানান, জাহাঙ্গীর ও  তাজুল দীর্ঘদিন থেকে নিজ এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চুরি-ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল।

সাত টাকার জন্য একজনকে পিটিয়ে হত্যা
রংপুরের বদরগঞ্জে সোমবার সাত টাকা বাকি রাখাকে কেন্দ্র করে একজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের রাজারামপুর মধ্যপাড়া গ্রামের আব্দুর রশিদের স্ত্রী মনসুরা বেগম (৫৫)। নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সোমবারে বাড়ির পাশে মুদি দোকানে বাকিতে ৭ টাকা খরচ করে ওই গৃহবধূর ছেলে হজরত আলী। এ নিয়ে মুদি দোকানদার আলমগীর ও হজরত আলীর মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। এরই এক পর্যায়ে দোকানদার আলমগীর দোকানে রাখা লাঠি দিয়ে হজরত আলীকে বেদম মারধর শুরু করে। খবর পেয়ে ছুটে যান হজরত আলীর মা মনসুরা বেগম। কিন্তু দোকানদার আলমগীর ও তার মা বাছিরন নেছা তাকে দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং লাঠি দিয়ে নির্মম ভাবে পেটাতে থাকে। এতে ঘটনাস্থলেই মনসুরা বেগম মারা যান। তারা ঘটনার পর পরই বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছে। এ ব্যাপারে বিকালে বদরগঞ্জ থানায় যোগাযোগ করা হলে ওসি নূরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, লাশ উদ্ধার হয়েছে, তবে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি।

 

আদিবাসীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার

মিঠাপুকুরে গতকাল সোমবার নওয়াপুকুর বিল থেকে এক আদিবাসী যুবকের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। উপজেলার বড় হযরতপুর ইউনিয়নের নওয়াপুুকুর বিলে খিতিশ উড়াও (৪৮) নামে এক আদিবাসীর জবাই করা লাশ দেখতে পান তার স্ত্রী দুলো মাই। নিহত ওই আদিবাসী নওয়াপুকুর গ্রামের মৃত ভারত উড়াওয়ের ছেলে। তিনি খামার তৈয়বপুর গ্রামের আসাদুজ্জামান কেনেডির বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে পাহারাদারের চাকরি করতেন। পুলিশ গতকাল সকালে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। নিহতের চাচাত ভাই গণেশ উড়াও জানান, বিশ্বনাথ উড়ায়ের সাথে খিতিশ উড়াওয়ের ৪২ শতক জমিজমা সংক্রান্ত ৬টি মামলা চলছে। এর মধ্যে ৪টি মামলায় খিতিশের পক্ষে রায় হয়েছে। গত রোববার রাতে অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারীরা তাকে জবাই করে হত্যার পর বিলে লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। সোমবার নিহতের জন্য স্ত্রী দুলো মাই ভাত নিয়ে যাওয়ার সময় স্বামীর লাশ দেখতে পান। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মিঠাপুকুর থানার পুলিশ পরিদর্শক সাজেদুল ইসলাম বলেন, হত্যাকারীদের শনাক্ত করে অবিলম্বে গ্রেফতার করা হবে।

যুবকের গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা

মিঠাপুকুর উপজেলার তুলশীপুর গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে রফিকুল ইসলাম কুড়ানু রোববার রাতে নিজ শয়ন ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। সোমবার প্রতিবেশীরা তার লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়। ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমে পাঠিয়েছে।

 

মোটরসাইকেল উদ্ধারের ঘটনায় তোলপাড়

 

গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের কাজকর্মে বাধা প্রদান করায় মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে সন্ত্রাসীরা এক ব্যবসায়ীর পথরোধ করে মোটরসাইকেল কেড়ে নিয়েছে। এ ব্যাপারে ঐ ব্যবসায়ী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে সাদুল্যাপুর থানার ধাপেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই হাফিজ এ ঘটনার সাথে জড়িত এক সন্ত্রাসীর বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করলেও রহস্যজনক কারণে কাউকে গ্রেফতার করেনি বলে ঔ ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন। ধাপেরহাট সাদুল্যপুর রোডের কাঠ ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক তার অভিযোগে জানান, ধাপেরহাট এলাকায় জুয়াখেলায় বাধা দেয়ায় জুয়ার সাথে জড়িত স্থানীয় কয়েকজন সন্ত্রাসী তাকে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে আসছিল। গত বুধবার ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক রংপুর থেকে বাড়ি ফেরার পথে আনুমানিক রাত ১২টায় কয়েকজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী তার পথরোধ করে মোটরসাইকেলটি কেড়ে নিয়ে যায়। গত ১৩ জুন আব্দুর রাজ্জাক সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সাদুল্যাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। কিন্তু ধাপেরহাট পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সন্ত্রাসীর বাড়ি হতে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করলেও কাউকে গ্রেফতার না করায় এবং মোটরসাইকেলটি ফেরত দিতে টালবাহানা ও কালক্ষেপণ করায় এলাকাবাসীর মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে ধাপেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রেও ইনচার্জ এসআই হাফিজের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান উদ্ধারকৃত মোটরসাইকেলটি তাদের জিম্মায় রয়েছে। তিনি মোটরসাইকেল ছিনতাই ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিষটির সত্যতা স্বীকার করলেও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি।

 

যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি : ভয়াবহ ভাঙ্গন

যমুনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার গোবিন্দী, কামারপাড়া, বাঁশহাটা, সাঁথলিয়া, হাসিলকান্দি, চিনিরপটল, নলছিয়া, চরহলদিয়া, পাতিলবাড়ী, গুয়াবাড়ী, কালুর পাড়া, কুমারপাড়া, দীঘলকান্দি, গাড়ামারা সহ  গ্রাম সহ প্রায় ২০ টি গ্রামে ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। সেই সঙ্গে পাট ক্ষেত নদী গর্ভে বিলিন হচ্ছে। গত ১০ দিনে প্রায় ৩০০ পরিবার বাড়িঘর হারিয়ে অন্যত্রে আশ্রয় নিয়েছে। ১০ দিন ধরে অব্যাহত ভাঙ্গনে বাড়িঘর হারিয়ে আব্দুল ওয়াহেদ অন্যের বাড়ীতে আশ্রয় নিয়ে কষ্টে জীবন যাপন করছে। কেউ বা ওয়াপদা বাধে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।  ভাঙ্গন রোধে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠিকাদারের মাধ্যমে সাঘাটা রক্ষা প্রকল্পের সিসি ব্লক ও মাটি ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গনরোধের চেষ্টা করলেও গতি কম হওয়ায় চিন্তিত যমুনাপাড়ের লোকজন। সাঘাটার হলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মন্ডল এ জানান, নদী ভাঙ্গন রোধ কল্পে জরুরী পদক্ষেপ না নেওয়া হলে উল্লেখিত গ্রাম গুলির জনসাধারণের দুর্ভোগ আরো বাড়বে।

দৈনিক জনতার ৩০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী

 

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় দৈনিক জনতা পত্রিকার ৩০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত হয়েছে। আজ সোমবার উপজেলা রিপোটার্স ইউনিটি আয়োজিত প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভা দৈনিক জনতার উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ ফরিদুল হক রুবেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। রংপুর বিভাগীয় সাংবাদিক সংস্থার সভাপতি সাংবাদিক নুরুজ্জামান প্রধান বিশেষ অতিথি ছিলেন- রিপোটার্স ইউনিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক ছাদেকুল ইসলঅম রুবেল, সাংবাদিক  মোশফেকুর রহমান রিপন,শাহ-আলমপ ্রমুখ। আলোচনার পূর্বে প্রধান অতিথি কেক কেটে ৩০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

 

জামায়াত কর্মী গ্রেফতার

 

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় গতকাল রবিবার রাতে অভিযান চালিয়ে জামায়াত-শিবিরের ১ সমর্থকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ।থানা সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত আসামি হুড়াভায়া খাঁ গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের পুত্র মাহফুজার রহমানকে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ও ১ মার্চ জামায়াত-শিবিরের সৃষ্ট নৈরাজ্য ঘটনা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

 

 

বিশটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ঝুঁকিপূর্ণ

 

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পাঠদান চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক জরীপে ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ঝুঁকিপূর্ণ বলে সনাক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩টি বিদ্যালয় ভবনকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে সীলগালা করা হয়েছে। বাকিগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। উপজেলা প্রকৌশলী শামছুল আরেফীন খান জানান, যে সমস্ত ভবন বেশি ঝুঁকিপূর্ণ তা পরিত্যক্ত ঘোষণা করে সীলগালা করে দেয়া হচ্ছে। সে ভবনগুলো ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ঘোষণাকৃত বিদ্যালয়সমূহে শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে বসে পাঠদান করা হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন বিশিষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, পাঠদানের বিকল্প ব্যবস্থা বা দ্রুত ভবন নির্মাণ করা না হলে শিক্ষার্থীদের ভবিষৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। চলতি বর্ষা মৌসুমে ওই সকল শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের অভিভাবকরা তাদের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্নতায় পড়েছেন। এব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার অধিকারী জানান, ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ের ভবনগুলো অপসারণ করে দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে।

 

সকল শিশুর জন্য মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণ সভা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা উন্নয়ন কমিটির আয়োজনে জিইউকে ও নেটস বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় সকল শিশুর জন্য মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।আজ সোমবার উপজেলা কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে শিক্ষা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপিকা নাছরিন সুলতানার সভাপতিত্বে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন- ইউএনও আহসান হাবিব। বিশেষ অতিথি ছিলেন- উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, কৃষি কর্মকর্তা সত্যেন কুমার, মৎস্য কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক, সাংবাদিক রাশিদুল আলম চাঁদ, শিক্ষক উজাশ মন্ডল, জিইউকে প্রতিনিধি নাছিমা বেগম প্রমুখ।

 

 

দপ্তরী নিয়োগে অর্থবাণিজ্যের অভিযোগ

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে ‘দপ্তরী কাম প্রহরী’ পদে নিয়োগে গাইবান্ধার ফুলছড়িতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উৎকোচের বিনিময়ে নিয়োগ দেয়া হয়েছে পছন্দের প্রার্থীদেরকে।জানা যায়, ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৩৮.০০২.০১৫.০০.০০.০২৪.২০১০-১৪২৫ নং স্মারক মোতাবেক সারাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে ‘দপ্তরী কাম প্রহরী’ পদে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়। সে মোতাবেক ফুলছড়ি উপজেলার ১৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। দরখাস্ত আহবান, আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই, নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ ও প্যানেল তৈরি, স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের পরামর্শক্রমে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুমোদনসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষে গত ১১ জুন চূড়ান্তভাবে মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। এরপর থেকেই দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্যসহ দুর্নীতির নানা অভিযোগ প্রকাশ পেতে থাকে। সর্বাধিক আলোচিত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো গলাকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উদাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কঞ্চিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পারুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাঠুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাতলামারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গুণভরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া প্রায় প্রতিটি বিদ্যালয়েই অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু জিগাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জটিলতার কারণে নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে বলে শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে। ভুক্তভোগীরা জানান, অর্থের বিনিময়ে বাছাই ও নিয়োগ কমিটি প্যানেল তালিকায় প্রথম স্থান নির্ধারণ করেছে। এখানেই শেষ নয়, চূড়ান্ত অনুমোদনের ক্ষেত্রেও অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষকে অর্থ দিতে হয়েছে। অর্থের পরিমাণ মনপুত না হওয়ায় কোনও উপযুক্ত কারণ ছাড়াই প্যানেল তালিকার শীর্ষে থাকা প্রার্থীকে বাদ দিয়ে ২ ও ৩নং ক্রমিকে থাকা প্রার্থীদের চাকরি দেয়া হয়েছে।উপজেলার উদাখালী ইউনিয়নের গলাকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য আতাউর রহমান অভিযোগ করে বলেন, কথিত ভুয়া অষ্টম শ্রেণী পাশ সার্টিফিকেটধারী ও সভাপতির ভাতিজা আলামিনকে অর্থের বিনিময়ে প্রধান শিক্ষক সভাপতির যোগসাজশে শিক্ষা অফিসারকে ম্যানেজ করে ১নং প্যানেল দেখিয়ে নিয়োগ প্রদান করেন। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন শিকদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অষ্টম শ্রেণীপাশ সার্টিফিকেট দেখেই নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সার্টিফিকেট ঠিক বা বেঠিক সেটা আমার দেখার বিষয় নয়। উদাখালী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হক এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রন্জু মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা টাকার বিনিময়ে মিজানুর রহমানকে নিয়োগ দেয়ার কথা অস্বীকার করেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগের জন্য সর্বনিম্ন ২ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত উৎকোচ নিয়েছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন প্রধান শিক্ষক বলেন, তিনজন শিক্ষক নেতার মাধ্যমে চূড়ান্ত নিয়োগ পত্রে অনুমোদন নিতে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে ২৫ হাজার করে টাকা দিতে হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু বকর সিদ্দিককে উৎকোচ গ্রহণের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি প্রসঙ্গ এড়িয়ে বলেন, উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভায় তিনজন শিক্ষক নেতাকে সকল দপ্তর ম্যানেজ করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তারা কিভাবে ম্যানেজ করেছে তা আমার জানা নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহেদি-উল-সহিদ বলেন, প্রতিটি বিদ্যালয়ের বাছাই ও নিয়োগ কমিটির দেয়া তিনজনের প্যানেল প্রাপ্তির পর সংসদ সদস্য ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সুপারিশক্রমে দপ্তরী নিয়োগে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।