বরিশালে বিআইডব্লিটিএ’র কর্মকর্তাকে লাঞ্চিত

বিশেষ প্রতিনিধি ॥  বরিশাল নগরীর কীর্তনখোলা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে ৫টি বলগেটসহ ১১ জন শ্রমিককে আটক করেছে বিআইডব্লিউটিএ’র বিশেষ টিম। শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে ৫টি বলগেট ও ৯টি লঞ্চ আটক করে ২১হাজার টাকা জরিমানা ও বলগেটগুলোর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযান পরিচালনার কারণে বালুর ইজারাদাররা বিআইডব্লিউটিএ’র এক কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের উপ-পরিচালক আশরাফুল ইসলামের নেতৃত্বে নৌ-বন্দরের পরিচালক শহিদুল্লাহ, নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক আবুল বাসার মজুমদারসহ ৪ সদস্যের একটি টিম পুলিশের সহায়তায় কীর্তনখোলা নদীতে অভিযান চালায়। এসময় শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর ঢাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় এমভি দেওয়ান, এমভি প্রিন্স, বিউটি অব নদিয়া, এমভি গাজিপুর, ওল্ড ভাই ভাই নামের পাঁচটি বলগেট ও নিবন্ধনবিহীন লঞ্চ এমভি আয়েশা বিবি, এমভি কওমি, এমভি প্রিন্সেস মনিষা, এমভি সাগর হোসেন, এমভি শেখ এন্টারপ্রাইজ, এমভি জিবারুন, এমভি গোল্ডেন রোড, এমভি বসুন্ধরা-১৮, এমভি জলপদসহ ১১ জন শ্রমিককে আটক করে।

এদেরমধ্যে বলগেট ৫টি বিরুদ্ধে মেরিন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপরদিকে শ্রমিকদের মুচলেকা রেখে ও এমভি জলপদ, ওল্ড ভাই ভাই, এমভি গাজিপুর এ তিনটি লঞ্চকে ২ হাজার ৫’শ টাকা করে মোট সাড়ে সাত হাজার টাকা এবং বাকীগুলোকে বিভিন্ন পরিমাণে জরিমানাসহ মোট ২১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এ ঘটনার পর পরই বালুর ইজারাদার জাকির হোসেন কয়েকজন যুবককে নিয়ে বরিশাল আধুনিক নৌ-বন্দর অফিসের দ্বিতীয় তলায় প্রবেশ করে আটক বলগেট ও শ্রমিকদের ছেড়ে দিতে শহিদুল্লাহকে চাপ প্রয়োগ করে। কিন্তু তিনি এতে অপারগতা প্রকাশ করলে তারা উত্তেজিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে হুমকি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ আসার পূর্বেই তারা স্থানত্যাগ করেন। তবে অভিযুক্ত বালুর ইজারাদার জাকির হোসেন জানান, আটকের পর জেলা প্রশাসনের বৈধ কাগজপত্র দেখানোর পরেও তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়নি। এছাড়া বন্দর কর্মকর্তা প্রতিমাসে তাদের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহন করে আসছেন। এ মাসে উৎকোচ দিতে দেরি হওয়ায় বলগেটসহ শ্রমিকদের আটক করা হয়। পরবর্তীতে বলগেট ও ১১ জন শ্রমিককে ছেড়ে দিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ।

বরিশাল বন্দর ও পরিবহন বিভাগের যুগ্ম-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) শহিদুল্লাহ বলেন, কয়েকজন যুবক অকথ্য ভাষা ব্যবহার করে হুমকি-ধামকি দিয়েছে। তবে পুলিশ এসে তাদের পায়নি। আর উৎকোচ নেয়ার কোন প্রশ্নই আসে না। এছাড়া বলগেট ও লঞ্চগুলোকে জরিমানা এবং আটক শ্রমিকদের মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।