বগুড়ায় পুলিশকে লক্ষ করে শিবিরের ককটেল হামলা

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি, গাইবান্ধা ॥  বগুড়ায় শিবিরের ডাকা হরতালের পক্ষে মিছিল করার সময় পুলিশকে লক্ষ করে ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। পুলিশ শিবির কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে ২৫/৩০ রাউন্ড রাবার বুলেটের গুলিবর্ষণ করেছে। মঙ্গলবার  যোহরের নামাজের পর শিবির কর্মীরা শহরের খান্দার এলাকায় বুধবারের সকাল-সন্ধ্যা হরতালের পক্ষে মিছিল বের করে। এ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশকে লক্ষ করে শিবির কর্মীরা ৬/৭টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় পুলিশ শিবির কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে ২৫/৩০ রাউন্ড রাবার বুলেট বর্ষণ করে। পরে শিবির কর্মীরাও পুলিশের উপর পাল্টা আক্রমনের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যায়।বগুড়া সদর থানার ওসি সৈয়দ সহিদ আলম এবিনিউজকে জানান, আগামীকাল বুধবারের হরতালের পক্ষে শহরের খান্দার এলাকায় শিবির মিছিল করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় পুলিশকে লক্ষ করে তারা ৬/৭টি ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটায়। পরে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে ৩০ রাউন্ড রাবার বুলেটের গুলি বর্ষণ করে।

 

 

কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যে

রংপুরের পীরগঞ্জে বিভিন্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী’ নিয়োগে কোটি টাকার বাণিজ্যের অভিযোগে উপজেলার সর্বত্রই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসের মদদপুষ্ট ৫ শিক্ষক নেতার মাধ্যমে নিয়োগের ওই টাকা আদায় করা হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান। ১৭টি বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে উৎকোচসহ বিভিন্ন অভিযোগ দাখিল করলেও ফাঁকফোঁকর গলিয়ে নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে।জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের অধীনে ‘পিইডিপি-৩’ প্রকল্পের আওতায় ৫ বছর মেয়াদে গত ডিসেম্বর মাসে প্রথম পর্যায়ে উপজেলায় রাঙ্গামাটি, পালগড়, ভেন্ডাবাড়ী, পানবাড়ী, বড়দরগাহ, গুর্জিপাড়া, ছোট মির্জাপুর, রসুলপুর, চন্ডিপুর, শ্যামপুর, খালাশপীর, কাদিরাবাদ, সুজারকুঠি, টুকুরিয়া, খষ্ট্রি, পতœীচড়া, বাঁশ পুকুরিয়া, নখারপাড়া, রায়পুর, বাহাদুরপুর, পীরগঞ্জ আদর্শ, মকিমপুর-২, আরাজী গঙ্গারামপুর, শানেরহাট, পাহারপুর, জ্যোতিডাঙ্গা, জাহাঙ্গীরাবাদ, দুরামিঠিপুর, মাদারগঞ্জ, খেজমতপুর, দ্বারিয়াপুর, কাঁঠালপাড়া, লালদিঘী, বিষ্ণপুর এই ৩৬ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী নিয়োগের আবেদন গ্রহণ করা হয়।  ৩৭ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী’ নিয়োগের আবেদন গ্রহণ করা হয়। প্রতিটি বিদ্যালয়েই ৮ থেকে ১০ জন প্রার্থী চাকরীর জন্য আবেদন করেন। নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের সভাপতি, প্রধান শিক্ষক ও ক্লাষ্টারের সহকারী শিক্ষা অফিসার সমন্বয়ে ৩ সদস্য বিশিষ্ট নিয়োগ বোর্ড গঠন করা হয়।

 

 

ওই নিয়োগ কমিটি গত ১৯ থেকে ২৬  জানুয়ারীর মধ্যে প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা গ্রহনের মাধ্যমে নিয়োগের জন্য এক দফা টাকা নিয়ে প্রতি স্কুলে ৩ জন করে চাকুরী প্রত্যাশীর প্যানেল তৈরী পূর্বক উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা দেয়। প্যানেলের ১নং তালিকাভুক্ত প্রার্থীর কাছে ৩ লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত উৎকোচ নেয়া হয় বলে ভুক্তভোগী প্রার্থীরা জানায়। কোন কোন ক্ষেত্রে ওই নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত উৎকোচক নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।যে কারণে ১৭ টি বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে উৎকোচ গ্রহন, শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্নদের আবেদন গ্রহন না করা, স্বজনপ্রীতি, বিজ্ঞাপন গোপন রাখা, ক্যাচমেন্ট এলাকার বাইরের প্রার্থী, ভুয়া সনদপত্রসহ বিধি বহির্ভুতভাবে প্যানেল তৈরীর অভিযোগে লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ শিক্ষা অফিসে দাখিল করা হয়। এতে এক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অপর সহকারী শিক্ষা অফিসার দিয়ে তদন্ত করা হয়। এ ব্যাপারে তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী শিক্ষা অফিসার শামছুল হক জানান, ১০টি বিদ্যালয়ে তদন্ত করে অভিযোগের বেশীর ভাগেরই সত্যতা পেয়েছি, প্রতিবেদন শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে জমা আছে।অপরদিকে উপজেলা শিক্ষা অফিসের আশ্বির্বাদপুষ্ট চন্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিরুজ্জামান সুমন, দুরামিঠিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ, রাঙ্গামাটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরে আলম শাপলা, আরাজী গঙ্গারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, নখারপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাফ্ফর হোসেন উপজেলা শিক্ষা কমিটির নামে উল্লেখিত বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৮টির কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে প্রায় ১৪ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন।

 

 

এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কমিটির সদস্য নখারপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে টাকা তোলার অভিযোগ সত্য নয়। তবে কোন প্রতিষ্ঠানের সমস্যা হলে সমন্বয় করতে হয়। পাশাপাশি নিয়োগের ক্ষেত্রে যাতে কোন দুর্নীতি না হয়, তাই বিদ্যালয়গুলোতে গিয়েছি। একই কথা বলেন, রংপুর জেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ  সম্পাদক রফিকুল ইসলাম। চাকরী পাওয়া এক যুবক নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, জমি বিক্রি করে টাকা দিয়ে চাকরী নিয়েছি।উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ক.খ আলাওল হাদী বলেন, নিয়োগের বিষয়টি আমার যোগদানের আগেই হয়েছে। দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী নিয়োগ ও যোগদানের কোন ফাইলপত্র পায়নি। পরিপত্র অনুযায়ী নিয়োগ অনুমোদন দেয়ার ক্ষমতা এমপি, ইউএনও এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের হতে। এক্ষেত্রে আমার ভূমিকা কিছুটা ডাক বিভাগের রানারের মতো।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফিকুল হক বলেন, টাকা নেয়ার বিষয়টি লোক মূখে শুনেছি। তদন্তে টাকা নেয়ার অভিযোগ প্রমান হয়নি। দুটি বিদ্যালয়ের তদন্তে দোষী হওয়ায় সে দুটি’র নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে। নিয়োগ কমিটির পাঠানো তালিকা থেকে নিয়োগের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। কেউ যদি টাকা গ্রহন করেন, তাতে আমার কিছু করার নেই।উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান মোনসেফা পারভীন বলেন, যে তালিকা পেয়েছি সেই তালিতার ভিত্তিতেই নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা এমপি আবুল কালাম আজাদ বলেন, সংশ্লিষ্ঠ বিদ্যালয়ের সভাপতি, প্রধান শিক্ষক ও ক্লাষ্টারের সহকারী শিক্ষা অফিসার সমন্বয়ে ৩ সদস্য বিশিষ্ট নিয়োগ বোর্ড মেধার ভিত্তিতে যে প্যানেল তৈরী করেছেন। ওই প্যানেলের প্রথমস্থান অধিকারকারীকেই নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

খুদিকে জাসদের প্রার্থী ঘোষণা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৩ (পলাশবাড়ী-সাদুল্যাপুর) আসনে জাতীয় সমাজ তান্ত্রিক দল জাসদের দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে সাদুল্যাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক এস এম খাদেমুল ইসলাম খুদিকে। সোমবার অনুষ্ঠিত পলাশবাড়ী উপজেলা জাসদের ত্রিণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের এক প্রতিনিধি সভায় এ ঘোষণা দেয়া হয়।জেলা জাসদ কার্যালয়ে জেলা জাসদের সহ-সভাপতি ও পলাশবাড়ী উপজেলা জাসদের সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক নূরুজ্জামান প্রধান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ প্রতিনিধি সভায় বক্তব্য রাখেন, সাদুল্যাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক এস এম খাদেমুল ইসলাম খুদি, জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মারুফ মনা, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়উল হক জনি, পলাশবাড়ী উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক শাহ্্ আলম ফুল্কু মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মজিবর রহমান, উপজেলা যুবজোট সাধারণ সম্পাদক শিপন প্রধান, উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আশাদুজ্জামান রুবেলসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের জাসদ নেতারা।বক্তারা উল্লেখ করেন, পলাশবাড়ী-সাদুল্যাপুর উপজেলাবাসী আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাাচনে স্থানীয় প্রার্থীকে বিজয়ী হিসেবে দেখতে চায়। আর, স্থানীয় প্রার্থী হিসেবে জনগণ এস এম খাদেমুল ইসলাম খুদিকেই মনে করেন। কারণ, যে মানুষ দু উপজেলার জনগণের সুখে-দু:খে অংশীদার হতে পারবেন, তাকেই তারা নির্বাচিত করবেন। আর সেই সুখ-দু:খের অংশীদার হিসেবে জনগণ এস এম খাদেমুল ইসলাম খুদিকেই মনে করেন। এস এম খাদেমুল ইসলাম খুদি যদি দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হন, তাহলে তাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করারও ঘোষণা দেয়া হয় প্রতিনিধি সভায়। পলাশবাড়ী উপজেলা জাসদের তৃণমূল পর্যায়ের এ প্রতিনিধি সভায়, উপজেলা,  ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

তাঁরা ডাক্তার হত্যা মামলা আসামী ৫ দিনের রিমান্ডে

গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার ছান্দিয়াপুর বাজারের পল্লী চিকিৎসক তারা ডাক্তার হত্যা মামলার অন্যতম আসামী আতিয়ার হোসেন (৩৫) কে ৫ দিনের রিমান্ড এনে মামলা তদন্ত কর্মকর্তা অফিসার ইনচার্জ মজনুর রহমান জিজ্ঞাসাবাদ করছে।হত্যার রহস্য উৎঘাটনের জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অফিসার ইনচার্জ মজনুর রহমান গত ১৬/০৫/১৩ ইং তারিখে ওই আসামী কে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করলে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। কিন্ত আসামী আতিয়ার রহমান ওই সময়ে অসুস্থ থাকার কারনে গত ১ জুলাই থেকে ৫ দিনের রিমান্ড শুরু হয়েছে। তিনি আরো জানান, মামলার তদন্তের সার্থে এই মহুত্বে কিছু বলা যাচ্ছে না তবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। হত্যার মুটিভ বের হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।উল্লেখ্য যে, উক্ত পল্লী চিকিৎসক তারা ডাক্তারকে গত ২০১১ সালের জুলাই মাসের মাঝা মাঝি সময়ে এলাকার কিছু চাঁদাবাজ প্রকৃতির লোকজন তাদের চাহিদা মত চাঁদা না পাওয়া স্থানীয় মীরপুর বাজার এলাকা থেকে তার ব্যবহৃত একটি ডিসকভার মোটর সাইকেলসহ তাকে অপহরন করার ৩ মাস পরে পার্শ্ববতী পীরগঞ্জ থানার কুমারপাড়া নামক স্থানের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সেপটি টেংক থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনা তার পরিবারের পক্ষ থেকে সাদুল্যাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার নং জিআর ২৫১/১১।