করোনা ভাইরাসের আতংকে সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য প্রতিনিয়ত সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। অথচ সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জীবনের চেয়ে মেলার মূল্য যে বেশি, তাই প্রমাণিত করলো বরিশাল জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
থানা পুলিশের উপস্থিতে বানারীপাড়ায় স্বাস্থ্য বিধি না মেনেই চলছে মেলা। পাশাপাশী চলছে যাত্রা পালার নামে অশ্লীল নৃত্য ও জুয়ার আসর। প্রশাসনের এমন সিন্ধান্ত দেখে হতভম্ব বরিশালের সকল মানুষ। কার স্বার্থে মেলা পরিচালনার অনুমতি দেয়া হয়েছে, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।
মেলার অনুমতির বিষয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউই কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন (বিপিএম) বলছেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মাস ব্যাপী যুগ যুগ ধরে সূর্যমণি মেলা ও পুজো পরিচালনা করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য পুজো ও মেলার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে পুজোর কথা বলে অশ্লীল নৃত্য বা জুয়ার আসর বসানোর কোন সুযোগ নেই। অশ্লীল নৃত্য বা জুয়ার আসর বসানো হলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন (বিপিএম)।
এদিকে বরিশাল জেলা প্রশাসক মো: জসিম উদ্দিন হায়দারকে মুঠোফোন করা হলে ফোন রিসিভ না কেটে দেন। তবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) প্রশান্ত কুমার বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে মেলার অনুমতি দেয়া হয়েছে।’ করোনার মত মহামারী ভাইরাসের কারণে যেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে সারাদেশে, সেখানে মেলার অনুমতি কতটুকু যুক্তিযুক্ত?
এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) প্রশান্ত কুমার। বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলায় প্রতিদিন বিকাল থেকে সারারাত সূর্যমণি মেলার নামে চলছে জুয়ার আসর ও অশ্লীল নৃত্য। স্থানীয়রা বলছেন, ‘যেখানে পুুরো পৃথিবী করোনা ভাইরাসের কারণে অচল (লকডাউন) পর্যন্ত করে দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত দেশের কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সাহস পাচ্ছেন না সরকার।
এরই মধ্যে স্বাস্থ্যবিধির মেনে চলার কথা বলে মেলার অনুমতি দেয়ার কোন যুক্তি দেখিনা।’ তারা আরো অভিযোগ করেন, ‘প্রতিদিন মেলার নামে জুয়া ও যাত্রা পালার নামে অশ্লীল নৃত্য পরিচালনা করা হচ্ছে। যার ফলে যুব সমাজকে ধ্বংসের পথে ঢেলে দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।’ সূর্যমণি মেলার পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আওয়ামীলীগ নেতা আক্তার হোসেন মোল্লা বলেন, ‘প্রশাসনকে টাকা দিলে সব কিছুই সম্ভব। দপ্তরে দপ্তরে সময় মত টাকা পৌছানো হলেই সব মুখ বন্ধ করা সম্ভব। প্রয়োজন হলে আপনার পত্রিকার মুখও।