Menu Close

ফরহাদ মুন্সীর নামে ফিলিং স্টেশন দখলের অভিযোগ

Arif filling station tarakupi kataksthal gournadi barishal

টি এম তুহিন, গৌরনদীঃ বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ঘনিষ্ঠ হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে গৌরনদীতে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে আসছিলেন উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুন্সী। তিনি গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

ফরহাদ মুন্সী এবং গৌরনদী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও তিনবারের মেয়র মো. হারিছুর রহমান হারিছের সঙ্গে যোগসাজশে গৌরনদী এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতেন। তাদের প্রভাবের কারণে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী হিরা মাঝি ও মানিক মাঝির মতো ব্যক্তিদের উত্থান ঘটে, যা গৌরনদীকে মাদক ব্যবসার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি দেয়।

ফিলিং স্টেশন দখলের অভিযোগ
ফরহাদ মুন্সীর কর্মকাণ্ডের ভুক্তভোগী হয়েছেন গৌরনদীর আরিফ ফিলিং স্টেশনের মালিক হারুন অর রশিদ বেপারী। তার স্বজনদের অভিযোগ, ফরহাদ মুন্সী প্রভাব খাটিয়ে জাল কাগজপত্র তৈরি করে ফিলিং স্টেশনের ৬২ শতাংশ মালিকানা নিজের নামে করে নেন। এই ঘটনার চাপ সহ্য করতে না পেরে হারুন স্ট্রোক করেন এবং বাকশক্তি হারান।

হারুনের মেয়ে সুমাইয়া পপির ভাষ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ফরহাদ মুন্সী হারুনকে অংশীদার হওয়ার প্রস্তাব দিয়ে শুরুতে ৩৩.৩৩ শতাংশ মালিকানা নেন। পরে জালিয়াতির মাধ্যমে ৫০ শতাংশ এবং এরপর আরও নতুন চুক্তিপত্র বানিয়ে নিজের দোসরদের মালিকানা দেখান। অভিযোগ অনুযায়ী, এই চুক্তিপত্রে হারুনের সই জাল করা হয় এবং তা ইংরেজিতে লেখা, যেখানে হারুন সবসময় বাংলায় সই করতেন।

নির্যাতনের শিকার হারুনের পরিবার
এ ঘটনায় বিচার চেয়ে হারুনের পরিবার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে অভিযোগ করলেও কোনো সুরাহা হয়নি। পপি জানিয়েছেন, তারা ন্যায়বিচার পাওয়ার বদলে পাতানো সালিশের শিকার হয়েছেন। বর্তমানে ফরহাদ মুন্সী আত্মগোপনে থাকলেও তার হয়ে হিরা মাঝি ও মানিক মাঝি প্রতি মাসে ফিলিং স্টেশনের লাভের ৬২ শতাংশ নিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু আব্দুল্লাহ খান জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফরহাদ মুন্সীর প্রতিক্রিয়া
ফরহাদ মুন্সীর মোবাইল বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তার স্ত্রী উম্মে সালমা হালিমা জানিয়েছেন, তিনি ২০১৯ সাল থেকেই ঢাকায় থাকেন এবং স্বামীর ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কে কিছু জানেন না।

এই ধরনের কার্যক্রম ফরহাদ মুন্সীর ব্যাপক ক্ষমতার অপব্যবহারের দৃষ্টান্ত এবং এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছে।

Related Posts