একজন সংগীত বোদ্ধা

বহুমুখী এ প্রতিভার অধিকারী হচ্ছেন বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার চেঙ্গুটিয়া গ্রামের কাঞ্চন আলী তালুকদারের পুত্র ফিরোজ আল মামুন (৪৩)। স্কুল জীবন থেকেই সংগীত প্রেমী মামুন প্রথমে স্থানীয় প্রখ্যাত বাউল সম্রাট ওস্তাত সামসুল আলমের সানিধ্য লাভ করেন। পড়াশুনার ফাঁকে ফাঁকে সংগীতের তালিম নেন। বি.এ পাশ করে চাকুরির সুবাধে তাকে যেতে হয় ভোলা, যশোর, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ির সোনাপুরসহ দেশের বিভিন্নস্থানে। ওইসব স্থানের সংগীত বোদ্ধা একাধিক ওস্তাদের সানিধ্য পান তিনি। ফরিদপুরের ফকির আজমল বিশ্বাসের কাছে তিনি লালন গীতির ওপর তালিম নেন। ওস্তাতদের সানিধ্য আর বিভিন্ন বই পড়ে সংগীত বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেন মামুন।
ক্রমেই সংগীত শিল্পী হিসেবে সর্বত্র তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। শুধু কন্ঠ শিল্পী হিসেবেই তার সুনাম থেমে থাকেনি। সুরকার, গীতিকার, অভিনেতা ও মডেল হিসেবেও তিনি ইতোমধ্যে বেশ সুনাম কুঁড়িয়েছেন। তার লেখা ও কন্ঠের যাদুতে গাওয়া গানের মধ্যে রয়েছে দেশের অবহেলিত জনগোষ্ঠির দুঃখ, কষ্ট ও বেদনার কথা। তার নিজ কন্ঠে গাওয়া জীবনমূখী গণসংগীতের ক্যাসেট ‘জীবনের যন্ত্রনা’ দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এছাড়াও ১৯৯৭ সালে সরকারের উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আয়োজনে “চেতনা” অডিওর ৫টি গানের কন্ঠ ও সুর করেন তিনি। তার লেখা গানে কন্ঠ দিয়ে স্বনামধন্য সংগীত শিল্পী ও বর্তমান সাংসদ মমতাজ, দরদী কন্ঠ শিল্পী শরিফ উদ্দিন, বাউল শিল্পী লাল মিয়া, লিপি সরকারসহ অনেক খ্যাতিমান শিল্পীরা দেশব্যাপী ব্যাপক ঝড় তুলেছেন। ছোট ছোট বাচ্চাদের স্কুলে যাবার উৎসাহ যোগাতে তিনি গানে ও সুরে ‘বাচ্চাদের স্বরবর্ণ’ নামের অডিও-ভিডিও সিডি বের করে সর্বস্তুরে বেশ প্রশংসা কুঁড়িয়েছেন। অর্ধশতাধিক বিজ্ঞাপন স্ত্রিপ্ট লিখেছেন মামুন। যা বর্তমানে দর্শক মাতিয়ে বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচার করা হচ্ছে। যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রনে সরকারের “যক্ষ্মা বনাম হাজির” শিরোনামের স্ট্রিট ও লাইভ প্রোগ্রামের একক মডেল ও একক অভিনেতা হিসেবে অংশগ্রহন করে বেশ সুনাম কুঁড়িয়েছেন তিনি। তার লেখা একাধিক ধারাবাহিক নাটক বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেল প্রচার করে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে। স্ত্রী সোহেলী রহমান একজন প্রতিষ্ঠিত আবৃত্তিকার, উপস্থাপক, লেখক ও সমাজকর্মী। মহিলা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালকের গুরু দায়িত্ব পালন করছেন সোহেলী।
মামুন বলেন-এ দেশের সংগীত ভান্ডারে বর্তমানে ভাল গানের শূণ্যতা রয়েছে। আর সেজন্যই কিছু ভাল গান, নাটকসহ বিষয় ভিত্তিক ম্যাসেস তৈরি করতে চাই। সংবাদ পত্রের মতো আমি কথা ও সুরের মাধ্যমে সংগীত সাংবাদিকতা করছি। যতদিন এ ধরায় বেঁচে আছি ততদিন ফুটপাত, পতিতা, বস্তি, টোকাইসহ সমাজ উন্নয়নে অবহেলিত জনগনের কথা গানের সুরে ও গণজাগরন শিল্পী গোষ্ঠীর মাধ্যমে প্রচার করে যাবো।