এলাকাবাসির মধ্যে চরম আতংক : গৌরনদীতে অজ্ঞাতরোগে একই পরিবারের দু’জনের মৃত্যু ॥ আক্রান্ত আরো ২ জন

২ জন মারা গেছেন। এছাড়াও আক্রান্ত হয়েছে ওই পরিবারের আরো দু’জন। এ নিয়ে এলাকায় চরম আতংক দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বহীনতার অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছুটে যান। তারা রোগ সনাক্তের জন্য রুবেল সরদার নামের এক যুবকের লাশ বরিশাল মর্গে প্রেরন করেছেন।

উত্তর বাউরগাতি গ্রামের নুরুল হক সরদার জানান, দিনমজুর কুদ্দুস সরদারের স্ত্রী শাহেরুন নেছা (৩৫) গত ৮ সেপ্টেম্বর মাথা ব্যাথায় আক্রান্ত হয়ে ডাকচিৎকার শুরু করেন। কিছুক্ষনের মধ্যে তার নাক ও মুখ দিয়ে সাদা ফেনা বের হতে থাকে। মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে গৌরনদী হাসপাতালে নেয়া হলে কর্ত্যবরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে একইভাবে আক্রান্ত হয় শাহেরুনের বড়পুত্র রুবেল সরদার (২০)। মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে বিকেল চারটায় দিকে গৌরনদী হাসপাতালে নেয়া হলে কর্ত্যবরত চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আলহাজ্ব মোঃ মনিরুজ্জামান তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।

রুবেলের লাশ নিয়ে বাড়ি ফেরার পর পরই তার (রুবেলের) ভাই ফয়সাল হোসেন (১২) ও তার পিতা দিনমজুর কুদ্দুস সরদার (৪০) অসুস্থ্য হয়ে পরেন। মুমুর্ষ অবস্থায় ফয়সালকে গৌরনদী হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ফয়সালকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। অর্থাভাবে ফয়সালকে বরিশাল হাসপাতালে না নিয়ে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গৌরনদী সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার মোঃ জাকির হোসেন, গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নুরুল ইসলাম-পিপিএম ঘটনাস্থলে ছুঁটে যান।    

গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, এলাকাবাসির সাথে আলাপ করে রোগ নির্নয়ের জন্য রুবেলের লাশ বরিশাল মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। এছাড়াও গুরুতর অসুস্থ্য ফয়সালকে পুলিশের তত্বাবধানে বরিশাল পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

ওই এলাকার গিয়াস উদ্দিন সরদার জানান, মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে অজ্ঞাতরোগে মা ও ছেলের মৃত্যুর পর পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পরেছে। তিনি আরো বলেন, এনিয়ে এলাকাবাসির মধ্যে চরম আতংক দেখা দিলেও স্থানীয় হাসপাতালের চিকিৎসকদের কোন মাথা ব্যাথা নেই।

এ ব্যাপারে গৌরনদী হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার আলহাজ্ব মোঃ মনিরুজ্জামান মনির জানান, শাহেরুন ও তার পুত্র রুবেল অজ্ঞাতরোগে মারা গেছেন। রোগ নির্নয় করতে হলে লাশের ময়না তদন্ত করতে হবে। একই ভাবে রুবেলের ভাই ফয়সাল আক্রান্ত হওয়ায় তাকে বরিশাল হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার রবিন্দ্র নাথ গাইন রবিনের কাছে এ প্রসঙ্গে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি কাজে আমি বরিশাল থাকায় এ বিষয়ে কিছুই জানি না।