মৌনতা পরিহার করি-ইভটিজিং এর প্রতিরোধ গড়ি

আকার ধারন করল এর দায়ভার এখনও কেউ স্বীকার করেনি করবেও না জানি। কারন দায় স্বীকার করে আত্মশুদ্ধি করবার ইতিহাস আমাদের জাতীয় জীবনে নেই। অন্তত আমার জানামতে। নাটোরে শিক্ষক ও ফরিদপুরে মাকে হত্যা ঘটনা দুটো মহা সমুদ্রে শৈবাল এর এক ফোটা শিশীর বিন্দু দানের মতো। এ দুটি প্রতিবাদী মানুষে আত্মদানের ফলে শব্দটা বেশ পীড়া দিচ্ছে আমাদেরকে। কিন্তু ইভটিজিং এর ভুক্তভোগী এবং প্রতিনিয়ত ইভটিজিং এর স্বীকার অগনিত পরিবারের কন্যা সন্তান নিয়ে উৎকন্ঠা ও রুর্দ্ধশ্বাষে জীবন যাপন এর চিত্র আর বেশি ভয়াবহ। একটু পরালোচনা না করে পারিনা। বছর কয়েক আগের কথা জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষীকা তার সাক্ষাৎকারে বলেছেন-সহপাঠিদের মাঝে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠা দোষের কিছু নয়। এ উদার ভাষ্য শুনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এক শ্রেনীর উদারপন্থী তরুন-তরুনী উক্ত উদার কাজের মহাউৎসব শুরু করে দিল। যার ফলে ক্যাম্পাসে দেয়ালের এপাশে-ওপাশে ইন্টারনেট ক্যাফেতে কিছু শিক্ষিত লোকের এসকল উদার কাজ দেখে ইস্কু কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা লাভে বঞ্চিত কিছু লোক উদারপন্থী হবার মানষে ইভটিজিংকে বেছে নেয়। যেহেতু তারা অশিক্ষিত সেহেতু উদার কাজের প্রকাশ ভঙ্গী শিক্ষিত উদার লোকের চাইতে ভিন্ন হওয়াটা স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে তাদের উদার কাজে বাধাদানকারী ব্যাক্তিকে হত্যা করা নেহায়েত একটা স্বাভাবিক ব্যপার উনাদের উদারতার মাপকাঠিতে।

এতো গেল কিছু শিক্ষিত উদার লোকের কর্মফল। এর পর আসে আকাশ সংষ্কৃতির জয়-জয়কার। ইনটানেটে অশ্লীল ভিডিও দর্শন। মোবাইল ফোনে অশ্লিল ছবির আদান-প্রদান। অশ্লীল সিডির সহজলভ্যতা। চলচিত্র্রে অশ্লীলতা। পাবলিক পার্ক ও সিনেমাহল গুলোতে শালীনতা বোধের চরম অবনতি। নাটক-সিরিয়ালে প্রেম নিবেদনের নিত্য নতুন কৌশল ইভটিজিং এ নতুন প্রজন্মকে উৎসাহিত করছে।  এছাড়াও পারিবারি ও সামাজিক মূল্যেবোধ এর অভাব। গনসচেতনতা এবং ঐক্যবদ্ধ সামাজিক আন্দোলনের অভাব প্রাশাসন এর নিরব ভূমিকাই মুলত দায়ী। এ সমস্যা সমাধানে কয়েকটি টকশো এর আয়োজন এবং হাটা স্বাস্থ্যের জন্য ভাল এই মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে কিছুটা পথ বিক্ষোভ মিছিল করে দায় এড়ানো যাবে? যাবে না। প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ সামাজিক প্রতিরোধ আন্দোলন এবং ব্যপক গনসচেতনতা।

বিচ্ছিন্ন প্রতিবাদ হয়তো আরো মৃত্যূর কারন হতে পারে। আমাদের রয়েছে ভাষা আন্দোলন এবং স্বাধীনতা সংগ্রাম এর মতো ঐক্যবব্ধ আন্দলনের সমৃদ্ধ ইতিহাস। আসুন এ সমৃদ্ধ ইতিহাসকে স্বরন করে ইভটিজিং, ধর্ষন, এসিড নিক্ষেপ, নারী নির্যাতন এর মতো সামাজিক  ব্যাধিগুলোর বিরুদ্ধে আর একটি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলি। আর যদি বলি ধর্মীয় অনুশাসন এর চর্চা এ সকল সামাজিক ব্যাধি উপশমের প্রধান নিয়ামক তাহলে আবার মৌলবাদী হবার ভয় আছে। তাই এ বিষয়ে গুরত্ব দেয়া থেকে বিরত থাকলাম। ভয় এবং গা বাঁচিয়ে চলার কারনে আমরা দিন দিন হয়ে পরছি মৌনবাদী। মানে সৎ কাজের মৌন সম্মতি খারাব কাজের মৌন বিরোধীতা। এই মৌনতাই হচ্ছে সামাজিক আন্দোলনের পথে প্রথম বাধা। তাই আসুন মৌনতা পরিহার করি ইভটিজিং এর প্রতিরোধ গড়ি। আমাদের জতীয় জিবনে উদারপন্থী লোকের শংখ্যা যতো বাড়ছে ক্ষমার ইতিহাস যতো সমৃদ্ধ হচ্ছে সামাজিক অপরাধের ভিত্তিমূল ততই শক্ত হচ্ছে। আমাদের ক্ষমা যেখানে বার বার দূর্বলতা হিসাবেই প্রকাশ পাচ্ছে সেক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের ভাষয় “নিষ্ঠুর যেন হতে পারি তথা”। তাই আসুন শপথ গ্রহন করি এই মর্মে যে- আমরা উদারপন্থী হবোনা, আমরা মৌনবাদী হবোনা, টকশোবাঁজ ও সেমিনার সূশীল? হবোনা। আমরা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব সমূহ নিজ নিজ জায়গা থেকে নিজ নিজ পেশা থেকে যথাযথ ভাবে পালন করব।