স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় সেনাসদস্য জেলহাজতে

বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবুল হোসেন বেপারী গতকাল সোমবার সেনাসদস্যকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। সেনাসদস্যের নাম মোঃ মাহাবুব আলম (৩৪) সৈনিক নম্বর: ৪০২০৯৩৯। সে রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর সেনানিবাসের ওয়ান বীর কোম্পানীতে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ী বরিশালের গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া গ্রামে। মামলার অভিযোগ গঠনের সময় তিনি (সেনা সদস্য) জামিন চেয়ে আদালতে হাজির হলে বিচারক তার জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আইনজীবি হুমায়ুন কবির বলেন, বাকেরগঞ্জের কবাই ইউনিয়নের কালেরকাঠী গ্রামের তাজমিন নাহার লিমার সঙ্গে পারিবারিক ভাবে ২০০৫ সালের ২৯ জুলাই সেনা সদস্য মোঃ মাহাবুব আলমের বিয়ে হয়। বিয়ের আড়াই বছরের পর তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। সেনাসদস্যর স্ত্রী তাজমিন নাহার লিমার অভিযোগ, কন্যা সন্তান জন্ম নেয়ার পর থেকেই তার স্বামী মাহাবুব আলম তাকে বাবার বাড়ি কালেরকাঠী গ্রামে ফেলে রাখে। শশুড় বাড়িতে আসতে হলে নলচিড়ায় নতুন বাড়ি তৈরী করতে হবে। এরজন্য লিমাকে তার বাবার কাছ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা আনার জন্য সেনাসদস্য চাপ প্রয়োগ করেন। অভিযোগে আরো জানা গেছে, চলতি বছরের ২ এপ্রিল লিমার স্বামী, শাশুড়ি, ননদ ও দেবর তার বাবার কালেরকাঠীর বাড়িতে এসে তাকে মারধর করে। একইসাথে বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। ওইসময় গৃহবধূ লিমাকে তার বাবার বাড়ির লোকজনে বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরবর্তীতে এ ঘটনায় লিমা বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামলাটি তদন্তের জন্য বাকেরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ওসিকে নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী ওসি গত ৯ এপ্রিল মামলাটি রুজু করে থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) হুমায়ুন কবিরকে তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই হুমায়ুন কবির চলতি বছরের ৭ জুলাই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আদালতে সেনা সদস্য মাহাবুব আলম, তার মা, ভাই ও বোনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

গতকাল সোমবার অভিযোগ গঠনের দিন সেনা সদস্য মাহাবুব আলম জামিন চেয়ে আদালতে হাজির হন। বিচারক তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে পাঠানো নির্দেশ দেন।