প্রথম স্ত্রীকে গাছের সাথে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন

স্বামী তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও নিকট আত্মীয়দের হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন মোমেনা বেগম নামের এক গৃহবধূ। পাষন্ড স্বামী ও তার সহযোগীরা শনিবার গভীর রাতে জঙ্গী নেতা শায়খ আব্দুর রহমান ও বাংলা ভাইয়ের মতো গাছের সাথে বেঁধে মোমেনাকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন চালিয়েছে বলে গৃহবধূ মোমেনা বেগম (২৯) অভিযোগ করেন। স্থানীয়রা গতকাল রবিবার সকালে মুমুর্ষ অবস্থায় গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় আগৈলঝাড়া থানায় মামলা দায়ের করা হলে পুলিশ ওইদিন বিকেলে মোমেনার স্বামী জামায়াত নেতা মাওলানা ইব্রাহিম খানকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ জানায়, গত ১০ বছর পূর্বে পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ থানার চৈতামাধবখালী গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেন খানের পুত্র মাওলানা ইব্রাহিম খানের সাথে ঢাকার নবাবগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা শেখ কাজিম আলির কন্যা মোমেনার বিবাহ হয়।

নির্যাতনের স্বীকার গৃহবধূ মোমেনা বেগম জানান, বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই তার স্বামী ইব্রাহিম খান তার বাবার কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা যৌতুক আনার জন্য তাকে (মোমেনাকে) চাপ প্রয়োগ করে। এসে সে অপরাগতা প্রকাশ করায় প্রায়ই তাকে শারিরিক নির্যাতন করা হতো। তিনি আরো জানান, তার স্বামী মাওলানা ইব্রাহিম খান প্রভাবশালী জামায়াত নেতা হওয়ার সুবাধে বিভিন্ন অজুহাতে প্রায়ই সে দেশের বিভিন্নস্থানে যাতায়াত করতেন। যাতায়াতের সুবাধে গত জুন মাসে গোপনে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা গ্রামের জামাল উদ্দিন মিয়ার কন্যা হাফিজা খানমকে (১৮) তার স্বামী ইব্রাহিম দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেন।

বিশ্বস্ত সূত্রে এখবর জানতে পেরে স্বামীর খোঁজে গত শনিবার  (২০ নবেম্বর) সন্ধ্যায় মোমেনা বেগম ঢাকা থেকে বাগধা গ্রামে আসেন। ওইদিন রাতে কৌশলে তার স্বামী মাওলানা ইব্রাহিম খান তার দ্বিতীয় স্ত্রী হাফিজা খানম ও তার ভাই ছালাম মিয়া, আবু কালাম মিয়া, রবিউল মিয়া মোমেনা বেগমকে গাছের সাথে বেঁধে মুখে কাপর ঢুকিয়ে দিয়ে বিবস্ত্র করে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে। নির্যাতনকারীরা মোমেনার সাথে থাকা নগদ অর্থ ও ব্যবহৃত স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

গতকাল রবিবার সকালে এলাকাবাসি মুমুর্ষ অবস্থায় মোমেনাকে উদ্ধার করে স্থানীয় বাগধা ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়। বাগধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল ভাট্টি জানান, মোমেনা বেগমের কাছ থেকে তিনি নির্যাতনের বর্ননা শুনে থানা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মুমুর্ষ অবস্থায় গৃহবধূ মোমেনাকে উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এ ঘটনায় গৃহবধূ মোমেনা বেগম বাদি হয়ে ওইদিন দুপুরে আগৈলাঝাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তাৎক্ষনিক বিশেষ অভিযান চালিয়ে মোমেনার স্বামী মাওলানা ইব্রাহীম খানকে গ্রেফতার করে। আগৈলঝাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অশোক কুমার নন্দি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।