মালিকের গাফলতিতে

তৈরী পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির নেতারা নিহতের প্রত্যেক পরিবারকে দুই লাখ টাকা করে সাহায্য দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্ত ছাড়াই পুলিশ প্রহরায় লাশ আত্নীয়স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শ্রমিক ফেডারেশনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিজিএমইএ আলাদাভাবে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তিনদিনের শোক প্রকাশ করেছে। একটি সূত্র জানিয়েছে, পোশাক কারখানার ছয়তলা ভবনের ছাদের ওপর নির্মিত টিনের ছাপড়ায় আটকে পড়েই বেশিরভাগ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। ছাপড়ায় আলো-বাতাস চলাচলের কোন রাস্তা নেই।

শুক্রবার সকালে গাজীপুর সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় সারিবদ্ধ করে লাশ রাখা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা লাশ আঁকড়ে ধরে আহাজারি করছেন। তাদের আহাজারিতে পুরো এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। বিজিএমইএ পক্ষ থেকে কফিন দেয়া হয়। ওই কফিনে করেই নিহত ২১ শ্রমিকের আত্বীয়স্বজন লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যায়। এ সময় হাসপাতালের চারপাশে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়। অগ্নিকাণ্ডে নিহতরা হলেন গাইবান্ধার রওশন আরা বেগম (৪৪), কুমিল্লার রিনা আক্তার (২৬), জাহানারা বেগম (৩৬), রহিমা আক্তার (৩৫), সিরাজগঞ্জের মমতাজ বেগম (৪০), নরসিংদীর সাফিয়া বেগম (৪০), রংপুরের সান্ত্বনা বেগম (৩৪), শাহিনুর বেগম (৩০), মোস্তাফিজুর রহমান (৪০), জরিনা বেগম (৪৫), সালমা আক্তার (২৮), ঠাকুরগাঁওয়ের আলমগীর হোসেন (৪০), বরিশালের ফরিদ উদ্দিন (৩৪), ফরিদপুরের সুফিয়া বেগম (৪০), জরিনা আক্তার (৪৫), ফরিদা বেগম (৪০), ময়মনসিংহের মজিদা বেগম (৩৫), আবুল কাশেম (৪১), রহিমা আক্তার (২৮), মাজেদা বেগম (৩০) ও প্রদীপ কুমার দে (৩০)।

ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডের চৌধুরীপাড়া ভোগড়া এলাকায় গরিব এন্ড গরিব সোয়েটার ফ্যাক্টরি কারখানার অবস্থান। বিশাল এ কারখানায় প্রায় সাড়ে চার হাজার শ্রমিক কাজ করেন। কারখানার মালিক নাজমুল হাসান ভুইয়া ও বজলুর রহমান ভুইয়া। কারখানায় ১৪টি গেট রয়েছে। তবে ইমার্জেন্সি কোন গেট রাখা হয়নি। অনেকটা ঘিঞ্জি পরিবেশের মধ্যে শ্রমিকরা কাজ করে আসছেন। ৬ মাস আগে একই গার্মেন্টসে দু’বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই সময় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীসহ দু’জন মারা যান। গার্মেন্টস কারখানায় অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতি থাকা সত্ত্বেও সেগুলো সচল ছিল না। কারখানায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ফায়ার কর্মী থাকা সত্ত্বেও অগ্নিকাণ্ডের সময় তারা উপস্থিত ছিলেন না। কারখানার সিকিউরিটি গার্ডরা জানান, আগুন লাগার সময় সবগুলো গেট খোলা থাকার পরও ধোয়ার কারণে কেউ বের হতে পারেননি। কর্তৃপক্ষের কোন গাফিলতি ছিল না। তবে এতবড় ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পরও কারখানার মালিকরা শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত কেউ আসেননি। এ নিয়ে শ্রমিক ও গার্মেন্টস ফেডারেশনের নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মালিকদের আচরণে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার সকালে কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, কারখানার মেশিন, সুতাসহ অন্যান্য আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। ভবনের দ্বিতীয় তলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সপ্তম তলায় নামাজের রুমে শ্রমিকদের স্যান্ডেল, টিফিন বক্সে রাখা ভাত, ডিম, পানের বাটা, ওড়না, জামা-কাপড় ও বোরকা এলোমেলোভাবে পড়ে আছে। অনেক স্থানে রক্তের ছোপ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। প্রথম তলা থেকে সপ্তম তলা পর্যন্ত প্রচণ্ড তাপ বের হচ্ছিল। প্রতিটি ফ্লোর লণ্ডভণ্ড। ভেতরে কালো রঙের ময়লা পানিতে ভরপুর। কারখানার ভেতরে জানালার গ্লাস ভেঙে আটকে পড়া শ্রমিকরা বের হওয়ার চেষ্টা করেছিল। এ গার্মেন্টসে দায়িত্ব পালন করেন ৩৬ জন সিকিউরিটি গার্ড। প্রতি শিফটে ১২ জন করে সিকিউরিটি গার্ড দায়িত্ব পালন করেন। অগ্নিকাণ্ডের সময় গার্ড মোজাম্মেল, সাহাবউদ্দিন, দেলোয়ার, নজরুল, কুতুবউদ্দিন, আবদুল মালেক, মোখলেছুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, আবুল কাশেম, কাদির ও হাদি দায়িত্ব পালন করেন। তবে ঘটনার পর থেকে তাদের কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। সিকিউরিটি ইনচার্জ মোজাম্মেল হক জানান, গার্মেন্টস ছুটি হওয়ার পরপরই ভবনের দ্বিতীয় তলায় আগুনের ফুলকি উঠতে দেখা যায়। শ্রমিকরা চিৎকার শুরু করলে ইমার্জেন্সি এলার্ম বাজানো হয়। অগ্নিনির্বাপণের নিজস্ব যন্ত্রপাতি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু আগুনের লেলিহান শিখা অল্প সময়ের মধ্যে পুরো ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে। কালো ধোয়ার জন্য কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। তিনি আরও বলেন, গার্মেন্টসের দু’দিকে ১৪টি গেট রয়েছে। সবগুলো গেট খোলা ছিল। গেট খোলা থাকলে কি হবে ধোঁয়ার জন্য কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। তিনি আরও বলেন, সপ্তম তলায় ১৭ থেকে ১৮ জন শ্রমিকের নাইট ডিউটি করার কথা ছিল। সব মিলিয়ে অফিসে ৩৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিক ছিল কারখানায়। শ্রমিকদের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করছে। নিচতলার গেট শুধু একটু চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল যাতে কেউ মালামাল লুট করতে না পারে। এ ঘটনার পর মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।

গরিব এন্ড গরিব কোম্পানির মালিক ফজলুল হক ভুইয়া টেলিফোনে জানান, নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।
ফায়ার সার্ভিসের সাবেক মহাপরিচালক সেলিম নেওয়াজ ভুইয়া সাংবাদিকদের জানান, ভবন থেকে ধোঁয়া বের না হওয়ায় তারা মারা গেছেন। যেসব গার্মেন্টসে ধোঁয়া বের হওয়ার পর্যাপ্ত পথ নেই সে ধরনের কারখানার অনুমোদন বাতিল করার পক্ষে মত দেন তিনি।
নামে মাত্র অগ্নিনির্বাপণের যন্ত্র
গরিব এন্ড গরিব ফ্যাক্টরির প্রথম থেকে সপ্তম তলায় প্রায় ২৫টি অগ্নিনির্বাপণের যন্ত্র ছিল। ওইসব যন্ত্র দেয়ালে সাজানো ছিল। কিন্তু একটিও সচল ছিল না। এ ব্যাপারে গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা আবু জাফর আহম্মদ জানান, নামমাত্র সাজিয়ে রেখেছিল যন্ত্র। আগুন লাগার সময় এগুলো কোন কাজেই আসেনি। কারখানার রিজার্ভ ট্যাংকে পানি ছিল না। প্রতি ফ্লোরে হোসপাইপ থাকলেও সেগুলোতে পর্যাপ্ত পানির স্রোত ছিল না। ফলে সেগুলো অকার্যকর হয়েছিল। সরু গলি হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের বড় গাড়ি প্রবেশ করতে পারেনি। তৃতীয় তলার গ্রিল কেটে আহতদের উদ্ধার করা হয়।

তদন্ত কমিটি গঠন
অগ্নিকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে বৃহস্পতিবার রাতেই সরকার গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হাসান সারোয়ারকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন-গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান ও গাজীপুরের ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম। আগামী তিনদিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তাছাড়া বিজিএমইএ’র সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমান পরিচালক মোঃ আতিকুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিনদিনের মধ্যে রিপোর্ট দিবেন তারা। সরকার গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান মোহাম্মদ হাসান সারোয়ার জানান, অগ্নিকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। প্রত্যক্ষদর্শী পাওয়া যাচ্ছে না। গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলা হবে। আশা করি তিনদিনের মধ্যেই রিপোর্ট দেয়া সম্ভব হবে।
জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল উদ্দিন তালুকদার জানান, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। কালো ধোঁয়ায় সবাই মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি একটি টেকনিক্যাল ব্যাপার। শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগতে পারে। তদন্ত কমিটির লোকজন সেটি ভালভাবে তদন্ত করে দেখবেন। তিনি আরও জানান, যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে। কারখানার গেট বন্ধ ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্তে এর প্রমাণ মিললে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গাজীপুরের পুলিশ সুপার এসএম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান জানান, তদন্ত ছাড়া কোন কিছু বলা সম্ভব নয়। তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করে দিয়েছে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটার প্রমাণ মিললে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চ গার্মেন্টস বন্ধ থাকবে।

পরিবারের সদস্যদের কথা
নিহত মমতাজ বেগমের স্বামী বিল্লাল উদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার সকালে সে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় কি মনে করে ক্ষমা চায় সে। কারণ জিজ্ঞেস করলে সে বলে স্বামীর কাছে এমনিই মাফ চাওয়া যায়। এ কথা বলেই তিনি হাউ-মাউ করে কাঁদতে থাকেন। গেট বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা বাইরে বের হতে পারেননি। ওই কারখানায় আগুন নেভানোর যন্ত্রপাতি নেই। নিহত আলমগীরের স্ত্রী শাহনাজ বেগম হাসপাতালে কয়েকবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তার আহাজারীতে হাসপাতালের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। শাহনাজ জানান, তার বেতনের টাকা দিয়েই সংসার চলে। আঁখি নামে এক বছরের একটি সন্তানকে কিভাবে মানুষ করব এ কথা বলেই তিনি হাউ-মাউ করে কাঁদতে থাকেন। প্রত্যক্ষদর্শী ইউসুফ হোসেন সুমন জানান, দ্বিতীয় তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। কালো ধোঁয়ার জন্য কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। গেটগুলো বন্ধ ছিল। তবে ইমার্জেন্সি গেট ছিল না কারখানায়। আগুনে তার শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে। তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তৃতীয় তলার স্যাম্পল বিভাগের কর্মী আবদুল মান্নান জানান, দোতলার মেঝ থেকে ছাদ পর্যন্ত সোয়েটারের স্তূপ করে রাখা হয়েছিল। তার মধ্যেই আগুন লাগে। অগ্নিকাণ্ডের পরপরই মেইন সুইচ বন্ধ করে দিলে কারখানায় সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। অন্ধকারের মধ্যে কালো ধোঁয়ায় চোখ খুলে রাখা যাচ্ছিল না। দম বন্ধ হয়ে আসছিল। মূল গেট বন্ধ থাকায় অনেকে ছাদে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করে। জানালার গ্রিল কেটে সবাইকে বের করে আনা হয়।

গত শুক্রবার দুপুরে গার্মেন্টস শিল্প সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত গার্মেন্টস পরিদর্শন করেন ও হাসপাতালে হতাহতদের দেখতে যান। বেলা ২টার দিকে নেতারা গরিব এন্ড গরিব গার্মেন্টসের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে শ্রম ও কর্মসংস্থান অধিদফতরের প্রধান পরিদর্শকের (চিফ ইন্সপেক্টর অব ফ্যাক্টরিজ) পদত্যাগ দাবি করেন। সমাবেশে বাংলাদেশ বস্ত্র ও পোশাক শিল্প শ্রমিক লীগের সভাপতি জেডএএম কামরুল আনাম, জাতীয় শ্রমিক লীগ সভাপতি আবদুল মতিন মাস্টার, গার্মেন্টস টেইলার্স ওয়ার্কার্স লীগের সাধারণ সম্পাদক বদরুদ্দোজা নিজাম বলেন, চিফ ইন্সপেক্টর অব ফ্যাক্টরিজের দায়িত্বে যিনি আছেন তিনি কোন দিনই ফ্যাক্টরি পরিদর্শন করেন না। অব্যবস্থাপনার অভিযোগে কোন মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয় না। অপরিকল্পিভাবে এ ফ্যাক্টরি নির্মাণ করা হয়েছে। ফ্যাক্টরির সপ্তম তলায় অপরিকল্পিতভাবে ঘর নির্মাণ করে ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিটি ফ্লোরে আলো বাতাস আগমন ও নির্গমনের জন্যও কোন জানালা নেই। এ কারণে ভবনের দোতলায় আগুন লেগে এর ধোঁয়া সিঁড়ির ফাঁকা স্থান দিয়ে সপ্তম তলা পর্যন্ত পৌঁছে। পর্যাপ্ত জানালা না থাকায় প্রতিটি ফ্লোরে আগুনের ধোঁয়া সৃষ্টি হয়। এ থেকে শ্রমিকরা মারা যান।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয় প্রশাসন,বিজিএমইএ নেতারা নিহত ২১ শ্রমিকের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। এ সময় বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে লাশ নেয়ার জন্যে ২০টি কফিন, কাফনের কাপড় ও ১৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয়। বিজিএমইএ’র মহাসচিব এম ফসিহুর রহমান জানান, নিহত প্রত্যেক পরিবারকে দুই লাখ টাকা প্রদান করা হবে। আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সবকিছুই করা হবে। যারা মারা গেছেন তাদের পরিবারের সদস্যদের পোশাক শিল্পে চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। তিনি আরও বলেন, ২১ জন মারা যাওয়ায় সব পোশাক কারখানায় তিনদিন কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে।

শুক্রবার বিকালে এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ও গাজীপুর ২ আসনের সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অগ্নিকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা হবে বলে তিনি জানান। কেউ দোষী হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে শুক্রবার দুপুরে ভোগড়া গরিব এন্ড গরিব কোঃ লিঃ সোয়েটার গার্মেন্টসের সামনে কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের উদ্যোগে নিহত ও আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দাবি করে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে শ্রমিকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আঃ মতিন মাস্টার, শ্রমিক লীগ নেতা ওসমান আলী, মাহাবুবুর রহমান, পারভীন লাভলী, জেটএ কামরুল আনাম, সাবেক এমপি দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় বক্তরা অগ্নিকাণ্ডে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি করেন। এছাড়াও আহতদের সুচিকিৎসার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।

এদিকে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন, গণসংহতি আন্দোলন, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি, বিপ্লবী নারী সংহতি, কর্মজীবী নারী, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, জাতীয় শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল, বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা, ইসলামী আন্দোলন, বাংলার পাঠশালা, বাংলাদেশ ন্যাশনাল কাউন্সিল, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, জাতীয় নিট ড্রাইং গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশন, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ, বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন ও জাতীয় শ্রমিক দল নেতারা ২১ শ্রমিকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। তারা নিহতদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি করেন। এগুলতো মনের সান্তনা আমরা পারবনা আহত পরিবারকে শান্তনা দিতে শুধু পারব সাহস যোগাতে চলুন এগিয়ে যাই। আমরা নিহতদের পক্ষে বলব সরকার জেন পরিপুর্ন ভাবে ভাবে সকল প্রকার সহযোগিতা নিশ্চিত করেন ।

এইচ,এম সুমন গৌরনদী.কম