মহাজোটের গণজোয়ার, বেকায়দায় বিএনপি

বলেখ্যাত বরিশাল জেলার পাঁচটি পৌরসভায় বইতে শুরু করেছে ভোটের হাওয়া। বর্তমানে নির্বাচনের আমেজে ভাসছে জেলার গৌরনদী, মুলাদী, বানারীপাড়া, বাকেরগঞ্জ ও মেহেন্দীগঞ্জের পৌর এলাকা। আগামি ১৩ জানুয়ারি এসব পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থীসহ সমর্থকদের কারো চোখেই যেন এখন ঘুম নেই। রাত-দিন তারা ছুটে চলছেন হাট-বাজারসহ মাঠে-ময়দানে ও চায়ের দোকানে। কুশল বিনিময় করছেন ভোটারদের সাথে। নির্বাচনকে ঘিরে অতীত, বর্তমান ও রাজনৈতিকভাবেও কঠিন হিসেব-নিকেশ করছেন সাধারন ভোটাররা।

নির্বাচনের শুরুতেই আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, জাতীয় সংসদের সাবেক চীফ হুইপ ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র প্রচেষ্টায় দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে পাঁচটি পৌরসভায় মহাজোটের মেয়র প্রার্থী ঘোষনা করা হয়। ইতোমধ্যে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, এডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস-এমপি, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও জনতা ব্যাংকের পরিচালক এডভোকেট বলরাম পোদ্দার বাবলুসহ দলের র্শীর্ষ ও তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা এসব পৌরসভার মহাজোট মনোনীত মেয়র প্রার্থীদের পক্ষে ভোট ভিক্ষার জন্য প্রতিটি পৌর এলাকার বিভিন্ন মহল্লায় গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক অব্যাহত রেখেছেন। 

অপরদিকে অভ্যন্তরীন কোন্দলের কারনে এসব পৌরসভায় শুরুতেই প্রার্থী ঘোষণায় বিএনপি হোঁচট খেয়েছে। পরবর্তীতে চারদলীয় জোটের প্রার্থী ঘোষনা করা হলেও ওইসব প্রার্থীদের পক্ষে এখনো নির্বাচনের তেমন কোন তোরজোর লক্ষ্য করা যায়নি। অবশ্য এ জন্য দলের তৃণমূল নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা কেন্দ্রীয় নেতাদেরকেই দায়ি করছেন। কেন্দ্রীয় নেতারা প্রার্থীদের পক্ষে কেউ মাঠে না নামায় তৃণমূল নেতা-কর্মীরা গায়ে পরে কেহই নির্বাচন করছেন না। সেক্ষেত্রে নির্বাচনের দিন যতোই ঘনিয়ে আসছে এসব পৌরসভার মহাজোট মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থীদের পক্ষে ততোই গণজোয়ার লক্ষ্য করা গেছে।   

 
সূত্রমতে, গৌরনদী পৌরসভায় মেয়র পদপ্রার্থী হিসেবে রয়েছেন মহাজোটের মোঃ হারিছুর রহমান হারিছ-দেয়াল ঘড়ি। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্ধী হিসেবে রয়েছেন বর্তমান মেয়র ও চারদলীয় জোটের প্রার্থী হাওলাদার নুরুল ইসলাম-আনারস। নির্বাচনের প্রচার-প্রচারনা, গণসংযোগ, সৎ-যোগ্য, ব্যক্তি ইমেজ ও সাধারন ভোটারদের গ্রহনযোগ্যতায় হারিছ রয়েছেন অনেকটাই এগিয়ে। মুলাদী পৌরসভায় মহাজোটের মেয়র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন সফিকুজ্জামান রুবেল-আনারস, চারদলীয় জোটের হারুন-অর রশিদ খান-দেয়াল ঘড়ি, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন শুক্কুর আহম্মেদ খান-দোয়াত কলম। এখানে মহাজোটের প্রার্থীর সাথে ভোটের লড়াই হবে চারদলীয় জোটের প্রার্থীর। নির্বাচনের প্রচার প্রচারনায় মহাজোট প্রার্থী এখানেও রয়েছেন এগিয়ে।

বানারীপাড়া পৌরসভায় ত্রি-মুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে মহাজোটের প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র গোলাম সালেহ্ মঞ্জু মোল্লা-দেয়াল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে লড়াই করছেন। ভোটারদের জনপ্রিয়তায় তিনি অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন চারদলীয় জোটের প্রার্থী গোলাম মাহমুদ (মাহবুব মাষ্টার)-টেলিভিশন। তবে নির্বাচনের দিন যতো ঘনিয়ে আসছে স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক মন্টু লাল কুন্ডর দোয়াত কলম মার্কাও ততো এগিয়ে যাচ্ছে। বাকেরগঞ্জ পৌরসভায় মহাজোটের মেয়র প্রার্থী লোকমান হোসেন ডাকুয়া-দেয়াল ঘড়ি, চারদলীয় জোটের নাসির উদ্দিন জমাদ্দার-জাহাজ প্রতীক নিয়ে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুব আলম-টেলিভিশন প্রতীক নিয়েও এগিয়ে যাচ্ছেন। এখানেও ত্রি-মুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা থাকলেও মহাজোট প্রার্থীর গণজোয়ার লক্ষ্য করা গেছে। মেহেন্দীগঞ্জ পৌরসভায় মহাজোটের মেয়র প্রার্থী আলহাজ্ব কামাল উদ্দিন খান-জাহাজ, চারদলীয় জোটের সাহাবুদ্দিন হিমু-দেয়াল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে প্রচার প্রচারনা ও ব্যাপক গণসংযোগ করছেন। তবে ব্যক্তি ও যোগ্য প্রার্থী হিসেবে এখানেও মহাজোট প্রার্থীর গণজোয়ার বইতে শুরু করেছে।