আত্মহত্যার পূর্বে যুবতীর লিখে যাওয়া শেষ চিঠি

মা, আমার মৃত্যুর জন্য জসীম ও তার পরিবারই দায়ি। আমি বেঁচে থাকার জন্য ওদের পরিবারের সবার কাছে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু ওরা আমাকে অস্বীকার করেছে। পৃথিবীতে মৃত্যুর সময় কোন মানুষ মিথ্যে কথা বলে না। আমি চেয়েছিলাম প্রমান করাতে কোরআন শরীফ দিয়ে। জসিম যদি বলতে পারে তার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই তাহলে আমি জসিমের পথ থেকে ফিরে আসব। জসিম ও তার ভাই ইব্রাহিম কোনকিছুতেই রাজি হয়নি। কারন প্রমান করলে জসিম আমাকে অস্বীকার করতে পারবেনা। আমার মৃত্যুর বিচার চাই। আমার মৃত্যুর পরও সবাই প্রমান করেন ওর সাথে আমার সম্পর্ক ছিলো। এটাই আমার শেষ অনুরোধ। ভাইয়া তুই আমাকে অনেক ভালবাসোস। তাই কষ্ট পেয়ে অনেক কথা বলতি। ভাইয়া, আব্বাকে আর মাকে কোন কথা বলবি না। তারা অনেক কষ্ট পাবে। আমার মৃত্যুর জন্য আমার বাবা-মা দায়ি না। ভাইয়া তোরা সবাই সুখে থাকিস। আমি তোদের আদরের ছোট বোন ছিলাম। তোদের সম্মান রাখতে পারিনি। তাই আত্মহত্যার পথ বেঁছে নিলাম” গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার পূর্বে বাবা-মা ও ভাইয়ের কাছে লেখা যুবতী রুমা আক্তার রিতুর চিঠির ভাষাগুলোছিলো এ রকম হৃদয়বিদারক।

গতকাল রবিবার ভোর রাতে পরিবারের সবার অজান্তে ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া ইউনিয়নের হরিদ্রাপুর গ্রামের সৈয়দ সুলতান আহম্মেদের কন্যা রুমা আক্তার রিতু (২১)। রুমার পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচবছর ধরে একই উপজেলার হানুয়া গ্রামের জসিম উদ্দিনের সাথে রুমার প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিলো। প্রেমের সুবাধে তাদের সাথে দৈহিক মেলামেশাও হয়। গত ৩ বছর পূর্বে জসিমের বর্ডার অব গার্ডে চাকুরী হয়। চাকুরীর পর থেকে জসিম রুমাকে এড়িয়ে চলতে থাকে। একপর্যায়ে রুমাকে সে (জসিম) অস্বীকার করে। এতে অভিমানী রুমা গত সেপ্টেম্বর মাসে উজিরপুরের মেজর এম.এ জলিল সেতুর ওপর দিয়ে সন্ধ্যা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। ওইসময় স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় রুমা বেঁচে যায়।

গতকাল রবিবার উজিরপুর থানা পুলিশ রুমার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে প্রেরন করে। এ ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে।