প্রচারনা নেই বিএনপির ॥ নেতা কর্মীরা হতাশ

পাওয়ার পরেও নির্বাচনে কোন প্রচার প্রচারনা নেই ৪ দলীয় জোটের প্রার্থী মোঃ নুর আলম হাওলাদারের আনারস মার্কার প্রতীকের। মেয়র প্রার্থীর রহস্যজনক এ নিরবতায় তৃণমূল নেতা কর্মী ও ভোটাররা অনেকটাই হতাশ। পক্ষান্তরে গৌরনদী পৌর সভার  বিএনপির দূর্গ ভেঙ্গে জয় ছিনিয়ে নিতে তৎপর আওয়ামীলীগ সমর্থিত মহাজোট প্রার্থী হারিসুর রহমান।

দলীয় সূত্র, পৌরবাসী ও ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকেই গৌরনদীতে বিএনপি ত্রি-বিভক্ত হয়ে রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। স্থানীয় বিএনপি নেতা কর্মীরা জানান, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৪ দলীয় জোট  মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আঃ সোবাহান , সংস্কারপন্থী নেতা সাবেক সাংসদ জহির উদ্দিন স্বপন  ও বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আকন কুদ্দুসুর রহমান   গ্রুপ তিনটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।   পৌরসভা  নির্বাচনে তিনটি গ্রুপই পৃথক পৃথক সভা করে ঐক্যমতের ভিত্তিতে বর্তমান মেয়র ও গৌরনদী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোঃ নুর আলম হাওলাদারকে মেয়র পদে প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেন। পৌর বিএনপির নেতা কর্মী ও সমর্থকরা জানান, মোঃ নুর আলম হাওলাদার মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর মনোনয়ন পত্র দাখিল করে অদ্যবদি কোন প্রচার প্রচারনা নামেননি । এমন কি তিনি কোন কোন নেতা কর্মীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেননি । তার এ রহস্যজনক নিরবতায় নেতা কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। গৌরনদী উপজেলা যুবদলের সভাপতি মোঃ সফিকুর রহমান স্বপন ও যুগ্ম সম্পাদক মোঃ রফিক চোকদার মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী মোঃ নুর আলম হাওলাদারের প্রতি ক্ষুদ্ব প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করে  বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর থেকে দলীয় প্রার্থীর মাইকিং পোস্টারিংসহ  কোন প্রচার প্রচারনা না থাকায় নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে প্রার্থীর  সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময়  প্রার্থী তাদের জানিয়ে দেন পরবর্তিতে তোমাদের ডেকে কর্মসূচী ঠিক করা হবে। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারনার সময় শেষ হয়ে আসলেও প্রার্থীর কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।  এ ঘটনার তিনি এলাকা ছেড়ে ঢাকায় চলে আসেন বলে জানান। ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সরোয়ার হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন , এমন প্রার্থীকে  দল মেয়র পদে মনোনয়ন দিয়েছে যিনি ভোটারদের কাছে ভোট চাওয়া তো দুরের কথা কোন কর্মীদের কাছেও প্রার্থী হওয়ার কথা জানাননি। তিনি আরো বলেন, দল তিনটি ভাগে বিভক্ত থাকলে ঐক্যবদ্বভাবে মেয়র পদে প্রার্থী দেয়ায় নেতাকর্মীরা ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে কাজ শুরু করেছিল কিন্তু প্রার্থীর রহস্য জনক নিরবতায় সকলেই হতাশ্ । বিএনপি সমর্থক ও ভোটার মোঃ জালাল আহমেদ (৫০)মোঃ নজরুল ইসলাম(৪৮) মোঃ শাহজাহান বেপারী (৩৭) বলেন , আমরা বিএনপির সমর্থক ও সাধারন ভোটার  নির্বাচনের প্রচারনার প্রায় মেষ প্রান্তে কিন্তু বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে কেউইর দেখা মেলেনি। প্রবীণ রাজনৈতিক ব্যক্তি বর্গের মতে গৌরনদী বিএনপির ভোটার অধ্যুষিত এলাকা। হিসেব অনুযায়ী এখানকার শতকরা ৮০ভাগ ভোটার বিএপির জামাতের । তা সত্বেও প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারনায় অংশ না নেয়া ও দলীয় নেতা কর্মী সমর্থকদের তৎপরতা না থাকায় সাধারন ভোটাররা মেয়র প্রার্থীর উপর ক্ষুব্দ। নেতা কর্মীদের অভিযোগ সম্পর্কে মেয়র প্রার্থী মোঃ নুর আলম হাওলাদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে প্রচারনায় নামলে ভয়াবহ পরিনতি ভোগ করতে হবে। এমনকি জীবন নাসের হুমকি দেয়া হয়।  পক্ষান্তরে বিএনপি দূর্গ হিসেবে পরিচিত গৌরনদী পৌর নির্বাচনে মহাজোট প্রার্থী দিন রাত ঘুরে  বেড়াচ্ছেন গ্রাম থেকে গ্রাম । ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে তাদের সমর্থন আদায় করতে মরিয়া মহাজোট প্রার্থী মোঃ হারিসুর রহমান। একাধিক আওয়ামীলীগ নেতা জানান, গৌরনদী বিএনপি অধ্যুষিত হলেও মেয়র পদে যোগ্য ব্যাক্তি হিসেবে বিএনপি সমর্থকরা প্রকাশ্যে মহাজোট প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারনায় অংশ নিচ্ছে। এবং তারা  যোগ্য প্রার্থী হিসেবে মহাজোট প্রার্থীকে ভোট প্রদান করবে বলে আশাবাদী। ৪ দলীয় জোট প্রার্থীর অভিযোগ অস্বীকার করে মহাজোট প্রার্থী হারিসুর রহমান বলেন, সিমাহীন দূর্নীতির কারনে সে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে । তার পক্ষে দলের কোন নেতা কর্মী মাঠে নেই। পৌরবাসী দল মত ভুলে আমাকে সমর্থন দিয়েছে। বিএনপির প্রার্থর পক্ষে প্রচার প্রচারনা না থাকা সম্পর্কে গৌরনদী উপজেলা বিএনপির সভাপতি  ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবাহান ও সাধারন সম্পাদক মোঃ আবুল হোসেন মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন , খুব শীঘ্রই আমরা দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে প্রচারনা শুরু করবো।