ঝরে পড়ছে পানপাতা ॥ চাষীরা দিশেহারা

গৌরনদী, আগৈলঝাড়া ও উজিরপুর উপজেলায় কোটি টাকার পান ঝরে পড়ায় হাজার-হাজার পানচাষীরা এখন দিশেহারা হয়ে পরেছেন। অধিকাংশ বরজে দু’একদিনের মধ্যে পানশূন্য লতা দাঁড়িয়ে থাকার আশংকা দেখা দিয়েছে। এভাবে পান লতা ঝরে পড়লে কয়েক দিনের মধ্যেই এসব উপজেলায় পানশূন্যতা দেখা দেবে। এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগ থেকে গ্রামাঞ্চলের পানচাষীদের কোনো খোঁজখবর না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গ্রামের পানচাষীরা। এসব উপজেলার বিভিন্ন গ্রামঘুরে জানা গেছে, গত ৪/৫ দিন ধরে অজ্ঞাত রোগে পান বরজের লতা থেকে পান ঝরে মাটিতে পড়া শুরু করলে চাষীরা স্ব-স্ব উপজেলার কৃষি বিভাগকে বিষয়টি অবহিত করেন। কিন্তু কৃষি বিভাগ থেকে তাদের এখনো কোনো খোঁজখবর নেয়া হয়নি।

গৌরনদী উপজেলার বাউরগাতি, চাঁদশী, পিঙ্গলাকাঠী, বাটাজোর, মাহিলাড়া, আগৈলঝাড়া উপজেলার টেমার, নাঘার, দিঘীবালি, হাওলা, বাকাল, রাজিহার, ফুলশ্রী, উজিরপুর উপজেলার শোলক, কালিরবাজার, কমলাপুর, গুঠিয়া, দক্ষিণ শিকারপুর এলাকার বরজগুলোতে প্রতিদিন অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে লতা থেকে পান ঝরে পড়ছে। এসব উপজেলার ঝরে পরা পানের মূল্য প্রায় কোটি টাকার অধিক বলে পান চাষীরা দাবি করেছেন। গতকাল শুক্রবার বাউরগাতি ও চাঁদশী গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, ওইসব গ্রামের অসংখ্য পান বরজের বিপুল পরিমান পান মাটিতে পড়ে রয়েছে। বাউরগাতি গ্রামের সবুজ খান জানান, দীর্ঘদিন থেকে তাদের এলাকার শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ পান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। হঠাৎ করে পান লতা থেকে মাটিতে পড়ে পড়ায় কৃষকেরা চরম বিপাকে পড়েছেন। চাঁদশী গ্রামের পানচাষী সুকন্ঠ সোম জানান, তিনি একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ২৫০ খানা পানের বরজ করেছেন। হঠাৎ করে বরজে মড়ক দেখা দিলে তিনি এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

টেমার গ্রামের প্রবীর বাড়ৈ, শোলক গ্রামের সেলিম সিকদার, পরেশ দাস, শ্যামল দাস, টুলু বৈদ্য জানান, তাদের বরজের পান মাটিতে ঝরে পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বাজারেও পানের তেমন চাহিদা না থাকায় চাষীরা চরম বিপাকে পরেছেন।

এ ব্যাপারে গৌরনদী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা রতন কুমার মন্ডলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারনে ও পানের বেশি ফলন হওয়ায় পান ঝরে মাটিতে পড়ছে।