প্রেমের খেসারত!

লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার বিকেলে মাদারীপুরের শিবচরের ভদ্রাসন ইউনিয়নের উমেদআলী মোল্লকান্দি গ্রামে। জানা গেছে, শিবচরের উমেদআলী মোল্লকান্দি গ্রামের দিনমজুর আব্দুল করিম খানের মেয়ে মলিনার সঙ্গে একই ইউনিয়নের রঞ্জন মুন্সীর ছেলে সুমন মুন্সীর (৩০) সঙ্গে ১৮ জানুয়ারি শিবচর পৌর কাজি অফিসে রেজিস্ট্রি মূলে বিয়ে হয়। পরে সুমনের বাবা-মা মলিনাকে পুত্রবধূ হিসেবে মেনে না নেয়ায় মলিনা চলে আসে তার পিতার সংসারে। মলিনা ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনাটি এলাকাবাসীর মধ্যে জানাজানি হলে শুরু হয় নানা কথা।

সামাজিকভাবে বিয়ে না হওয়ায় এবং অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কারণে স্থানীয় মাতব্বর ইউনুছ মোল্লা, মোশারফ মোল্লা, দিলু মোল্লা, ইসমাইল মোল্লাসহ আরো ২০-২৫ জনে সোমবার করিম খানের বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায়। এ সময় দুইটি বসতঘর, একটি রান্নাঘরে ব্যাপকভাবে ভাঙচুর করে। এসময় করিম খান বাধা দিতে এলে তাকেসহ তার স্ত্রী সামচুবান, মেয়ে মলিনা ও তার স্বামী সুমন মুন্সীকে মারধর করা হয়। নির্যাতিত করিম খান  বলেন, আমি গরিব মানুষ। মাতবরগো টাকা দিয়া খুশি করতে পারলে পরিবারের ওপর নির্যাতন হতো না। আমার ঘরবাড়ি ভাঙচুর করায় প্রায় ২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মলিনা জানায়, ভালোবাসা পাপ নয়। আমি প্রেম করে ধর্মীয় মতে বিয়ে করেছি। এরপরেও অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হতে হলো পুরো পরিবারের। মলিনার স্বামী সুমন বলেন, মলিনা আমার স্ত্রী। ধর্মীয় মতে আমাদের বিয়ে হওয়ার কথা বারবার মাতব্বরদের জানানো হয়েছে। তারপরও তারা অতর্কিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেছে।

ভদ্রাসন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ. রউফ শিকদার জানান, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। নির্যাতিত পরিবারকে থানায় পাঠানো হয়েছে। হামলাকারী ইউনুছ মোল্লা বলেন, মলিনা একটি নষ্ট মেয়ে। তাকে নিয়ে এলাকায় সালিশি বৈঠক হয়েছে। সমাজে একটি খারাপ পরিবার থাকবে, আর এসব সবাই মেনে নিবে তা হয় না। শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, অভিযোগটি আমি হাতে পেয়েছি। ঘটনার তদন্তের জন্য এস.আইকে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সত্যতা বেরিয়ে আসলে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।