ওরা প্রতিষ্ঠিত নৃত্য শিল্পী হতে চায়

ওরা প্রতিষ্ঠিত নৃত্য শিল্পী হতে চায়দলীয় নৃত্যে প্রথমস্থান অধিকার করা বরিশাল বিভাগের একমাত্র দল আগৈলঝাড়া সদর মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিপু, অতিথি, নিপা ও প্রজ্ঞা প্রতিষ্ঠিত নৃত্য শিল্পী হতে চায়। শিশু শিল্পী ওই চারজনের সুনাম শুধু নৃত্যেই থেমে থাকেনি। রিতিমতো ওরা ক্লাশের মেধাবী শিক্ষার্থীও বটে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেঃ কর্পোরাল উপজেলার মোল্লাপাড়া গ্রামের এস.এম মোস্তাফিজুর রহমানের পঞ্চম শ্রেনীতে পড়–য়া কন্যা আসমাউল হুসনা নিপু (১১)। নিপুর মা খাদিজা বেগম  একজন গৃহিনী। নিপু জানায়, মায়ের আপ্রান চেষ্ঠায় সে নাচের তালিম নিচ্ছে। একই উপজেলার প্রত্যন্ত বিলাঞ্চল ঐচারমাঠ গ্রামের রমনি বিশ্বাসের পঞ্চম শ্রেনীতে পড়–য়া কন্যা অতিথি বিশ্বাস (১০)। তার মা মাধবীর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল হিসেবে অতিথি বিশ্বাস নাচ শিখছে। ফুলশ্রী গ্রামের কাঠমিস্ত্রী অজিত হালদারের পঞ্চম শ্রেনীতে পড়–য়া কন্যা নিপা হালদার (১১)। নিপার মা বাসন্তী হালদারের উৎসাহে নিপা নাচের ক্লাশ করছে। সাতলা গ্রামের পশু চিকিৎসক সুকলাল বিশ্বাসের তৃতীয় শ্রেনীতে পড়–য়া কন্যা প্রজ্ঞা বিশ্বাস (৮)। প্রজ্ঞার মা কনিকা তার মেয়েকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেন।

নিপু, অতিথি, নিপা ও প্রজ্ঞা একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং একই শিক্ষকের কাছে ওরা নাচের তালিম নিয়ে প্রথমবারেই মৌসুমী দলীয় নৃত্য প্রতিযোগীতায় জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহন করে দেশের আটটি দলকে পরাজিত করে প্রথমস্থান অধিকার করেছে। ওরা সবাই প্রতিষ্ঠিত নৃত্য শিল্পী হতে চায়। আর এজন্য সমাজের মহানুভব ব্যক্তি ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহযোগীতা ওদের একান্তই প্রয়োজন। 

ওদের সকলের নৃত্য শিক্ষক আগৈলঝাড়ার এস.এস.বি সংগীত একাডেমীর অতিথি শিক্ষক ইভান শাহরিয়ার সোহাগ জানান, মৌসুমী দলীয় নৃত্য প্রতিযোগীতায় সম্প্রতি নিপু ও তার দল প্রথমবারের মতো উপজেলা, জেলায়, বিভাগীয় ও ফাইনালে বরিশাল বিভাগের একমাত্র দল হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহন করে দেশের বিখ্যাত ৮টি দলকে পরাজিত করে প্রথমস্থান অধিকার করে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমী মিলনায়তনে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এডভোকেট সাহারা খাতুন নিপু ও তার দলের অন্যান্য শিল্পীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

 

ওরা প্রতিষ্ঠিত নৃত্য শিল্পী হতে চায়

নৃত্যের অপর শিক্ষক ও এস.এস.বি সংগীত একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা বিউটি বাড়ৈ আক্ষেপ করে বলেন, অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে একই বিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষার্থী দলীয় নৃত্যে জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহন করে প্রথমস্থান অধিকার করে। শুরু থেকে অধ্যবর্ধি এসব শিশু শিল্পীদের স্কুলের পক্ষ থেকেতো দূরের কথা স্থানীয় প্রশাসনসহ জেলা ও বিভাগীয় পর্যায় থেকেও ওদের কোনধরনেরই সহযোগী করা হয়নি। এমনকি বরিশাল বিভাগের একমাত্র দল হিসেবে প্রথমস্থান অধিকার করার পরেও ওদের কোন প্রকার সংবর্ধনা পর্যন্ত দেয়া হয়নি। এতে করে শিশুদের আগ্রহ অনেকাংশে হ্রাসপায় বলে তিনি উল্লেখ করেন।

নিপুর মা খাদিজা বেগম বলেন, আমার খুবই ইচ্ছে নিপু একদিন নাচে গানে প্রচুর সুনাম অর্জন করবে কিন্তু ওর চাহিদা মতো অর্থের যোগান দেয়া পরিবারের পক্ষে খুবই দুঃসহ। জানিনা নিপুর মতো অন্যান্যদের নিয়ে তাদের বাবা-মায়ের যে আশা তা কতদূর এগুবে। তিনি নিপুসহ ওইসব শিশু শিল্পীদের প্রতিষ্ঠিত নৃত্য শিল্পী হওয়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে সমাজের মহানুভব ব্যক্তি ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পৃষ্ঠপোষকতা চেয়েছেন।