জেলা প্রশাসক অফিসের ৩য় শ্রেণীর কর্মচারী মাহফুজ আজ কোটিপতি

রহমান এখন কোটিপতি। ৪ দলীয় জোট সরকারের আমলে আলাদিনের প্রদিপ পাওয়া হঠাৎ প্রভাবশালী ব্যক্তিতে পরিনত হয় সে। ২টি পত্রিকারসহ নামে বেনামে বিশাল সহায় সম্পত্তির মালিক বনে যায় এ সময়। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পরও তার দৌরত্ব কমেনি। জেলা প্রশাসক অফিসে তার দপ্তরে তিনি মাসে ১দিনও বসেছেন কিনা তার উত্তর তার সহকর্মীদের কাছেও নেই। এতটাই প্রভাবশালী যে, সরকারী ৩য় শ্রেণী কর্মচারী কল্যান তহবিলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ১১ বছর ক্ষমতায় আছেন। কোন কর্মচারী তার বিরুদ্ধে টু শব্দটিও করতে পারেন না। কল্যান তাহবিলের টাকা নিয়ে রয়েছে তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ।

জেলা প্রশানক কার্যালয়ের একাধিক কর্মচারী জানান, তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী  মোঃ মাহফুজ খান সুজন সাবেক জোট সরকার আমলে সংসদ সদস্য মজিবর রহমান সরোয়ারকে ব্যবহার করে একটি পত্রিকা বের করে। অত্যন্ত চতুর মাহফুজ প্রকাশক হিসাবে মেয়রের নাম ব্যবহার করেন। সেখানে লেখা হয় এম খান। কিন্তু পিতার নামের স্থলে সরোয়ারের বাবার নাম বাদ দিয়ে তার বাবার নাম ব্যবহার করেন। যা সরোয়ার প্রথমে ঘুর্নাক্ষরেও টের পাননি। সম্পাদক হিসাবে রয়েছে মাহফুজের স্ত্রীর নাম। এই পত্রিকা ব্যবহার করে মাহাফুজ ক্ষমতাবান ব্যক্তি বনে যান। চারদলীয় জোট ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি ১দিনও অফিস করেছেন কিনা সন্দেহ। মাসে ১বার অফিসে গিয়ে স্কাক্ষর করতেন। বিভিন্ন অফিসে ক্ষমতা দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা উপর্জন করেন। এ পত্রিকায় সাসদ  শুধু সরোয়ারকেই ব্যবহার করেন নি এক চিকিৎসকের কাছ থেকে ৫ লাখ এবং বরিশালের এক শিল্পপতির কাছ থেকে আনুমানিক ২০ লাখ টাকা নেয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে তার চালাকী টের পেয়ে এরা সরে পড়েন।জোট সরকারের পতনের পর ভোল পাল্টাতে শুরু করেন মাহফুজ। ব্যাপারটি টের পেয়ে সংসদ সদস্য সরোয়র নড়ে চড়ে বসেন। কাগজপত্র তলব করে দেখেন তার নামই নেই। তিনি মাহফুজের উপর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

জানা গেছে সরোয়ারের সাথে টেক্কা দিতে পারবে না বুঝতে পেরে প্রকাশকের নাম ঠিক করে দেন। পরে তিনি গোপনে আর একটি পত্রিকার ডিক্লেরেশনের ব্যবস্থা করেন। ভোরের অঙ্গিকার নামের এ পত্রিকায় সম্পাদক হিসাবে তার সিমেন্ট ব্যবাসায়ী ভাইয়ের নাম ব্যবহার করলেও বিধি বহির্ভূতভাবে প্রকাশকের নাম উহ্য রাখেন। আস্তে আস্তে বরিশাল বার্তা থেকে তিনি তার নতুন পত্রিকাকে গুরুত্ব দিতে থাকেন।জানা গেছে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই তাকে বদলীর উদ্যোগ নেয়া হলেও অগ্যাত কারনে তা থেমে যায়। তাকে বর্তমানে শিক্ষা শাখায় অফিস সহকারী হিসাবে বদলী করা হয়। কিন্তু তিনি অফিস করেন না। গতকাল অফিসে গিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই তার চেয়ার খালি দেখা গেছে। অফিসের একাধিক সূত্র জানায় মাহাফুজ ২০০০ সালে জেলা কালেক্টরেট সহকারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হন। দীর্ঘ ১১ বছর যাবৎ তিনি এই পদেই বহাল আছেন। এ সমিতির অর্থ নিয়েও নানা গুঞ্জন রয়েছে। বিপদে পড়ে অনেক কর্মচারী টাকা চেয়েও খালী হাতে ফিরেছে বলে জানা গেছে।

অগাত সম্পতির মালিক মাত্র ১০ বছরেই মাহফুজ অগাদ সম্পত্তির মালিক বনে যান। জেলা পরিষদ থেকে তার ২ বছরের ছেলের নামে জমি বরাদ্ধ নেন। বাধ রোডে জেলা পরিষদের এ জমির উপর ২ তলা ঘর নির্মান করে ভাড়া দেন। আলেকান্দা সড়কের আরশেদ আলী গলিতে সাংবাদিক মাহফুজ সুজনের জমি কোনটি দেখতে চাইলে যে কেউ দেখিয়ে দেবে। তিনি এ জমিটি বিক্রি করতে চাইছেন। এক প্রতিবেশি জানান ৩০ লাখ টাকা দাম উঠেছে ৬ শতাংশের এ জমিটির। এ জমিতে ১টি টিউবওয়েল সম্প্রতি বসান হয়েছে। গুঞ্জন রয়েছে এটি জেলা পরিষদ থেকে নেয়া। ফকির বাড়ি রোডে যে ভাড়া বাড়িতে তিনি থাকেন তার ভাড়াও ৫ হাজার টাকার উপরে। এ ছাড়াও তার ব্যাংক ব্যালেন্সও যথেষ্ট সমৃদ্ধ বলে জানা গেছে।