কালকিনিতে আন্তঃ উপজেলা মাদক মাফিয়া চক্র সক্রিয়!

Mafiaবিশেষ কোনো অভিযান পরিচালিত না হওয়ায় মাদক মাফিয়ারা নিরাপদ রুট হিসেবে কালকিনি উপজেলা ব্যবহার করছে। মাদকদ্রব্যের বড় বড় চালান এক উপজেলা থেকে আরেক উপজেলায় আনা-নেয়া করা হচ্ছে। ২০টি স্পটে অবাধে বিক্রি হচ্ছে মদ, গাঁজা, ফেন্সিডিল, ইয়াবা ও ড্যান্ডিসহ অন্যান্য মাদক দ্রব্য। মাসিক আইনশৃঙ্গলা কমিটির সভাও একাধিকবার মাদকদ্রব্যর ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা  হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বরিশালের গৌরনদী ও মুলাদী, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া, শরীয়তপুরের ডামুড্যা ও মাদারীপুর জেলা সদর উপজেলার সাথে কালকিনি উপজেলায় মাদক মাফিয়ারা আন্তঃ সম্প্রর্ক শক্তিশালী তৈরি করে বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। কালকিনির ভূরঘাটা, ভাউতলি, গোপালপুর, পাথরিয়ারপাড়, ভাঙ্গা ব্রীজ, সিডিখাঁন, আন্ডারচর, সমিতির হাট, কাঁচিকাটা লঞ্চঘাট, সূর্যমনি, ফাসিয়াতলা, মোল্লারহাট, পাতাবালি ও রাজদীসহ ২৫থেকে ৩০টি স্পট খুচরা বিক্রয় কেন্দ্র হিসেবে বেছে নিয়ে মাফিয়ারা মাদক ব্যবসা জমজমাট করে তুলেছে। দীর্ঘদিন ধরে মাদকদ্রব্যের অবাধ ব্যবহার প্রতিরোধে কোনো সাড়াসি অভিযান পরিচালিত না হওয়ায় বাজার সম্প্রসারিত হচ্ছে। এসব বিক্রয় কেন্দ্রে হাত বাড়ালেই মাদক পাওয়া যাওয়ায়। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ মাদক দ্রব্যে আসক্ত হয়ে পড়ছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মাদক সম্রাটদের গ্রেফতারের কয়েক দিন পরই জেল থেকে বেড়িয়ে আসে। এলাকায় আবার তারা মাদকদ্রব্যের অবাধ ব্যবহার শুরু করে দেয়। মাদক সম্রাটদের হাত অনেক বড়। মাদকসহ হাতে নাতে যাদের আটক করা হয় তারা জেল থেকে মুক্তি না পেলেই মাদকদ্রব্য কেনা-বেঁচা বন্ধ করা সম্ভব হবে।
জানা যায়, কিছু দিন পূর্বে উপজেলা কোর্ট চত্বর এলাকায় আলিম(৩৫) ও আবূ বকর হাওলাদার(৩৭)কে দেড় কেজি গাঁজাসহ জনতা পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেয়। সম্প্রতি ফেন্সি সম্রাজ্ঞী আয়শার বাড়ি থেকে ডিবি পুলিশের দু’ সদস্য বের হলে সঙ্গে থাকা ব্যাগে ফেন্সিডিল থাকার সন্দেহে প্রায় আড়াই ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রেখে থানা পুলিশকে খবর দেয় এলাকাবাসী। ডিবি পুলিশের ব্যাগে ফেন্সিডিল না পাওয়া গেলেও এ ঘটনার দু’ঘন্টা পরেই উক্ত স্থানে ১৪ বোতল ফেন্সিডিলসহ পাশ্ববর্তী গৌরনদী উপজেলার ফেন্সি সম্রাট সেন্টু মৃধা(৩৪), জাফর প্যাদা(৩২) ও আজিজ দেওয়ানকে (৩০) মাদারীপুর ডিবি পুলিশ আটক করে। আটককৃতরা মস্তফাপুর থেকে কালকিনি দিয়ে দিয়ে গৌরনদী যাচ্ছিল। এদিকে কালকিনির ফেন্সি সম্রাট মিল্টন কাজী ওরফে মনু কাজী (৩৫) ৯ বোতল ফেন্সিডিলসহ মাদারীপুর জেলা সদর উপজেলা থেকে কালকিনিতে আসার সময় পাথুরিয়ারপাড় এলাকায় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। এভাবেই মাদক সংশ্লিষ্টরা পাশ্ববর্তী উপজেলার সাথে কালকিনি উপজেলায় আন্তঃ বাণিজ্য জমজমাট করে তুলেছে।

যোগাযোগ করা হলে কালকিনি থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাদক সম্রাটদের হাত অনেক বড়। মাদকসহ হাতে-নাতে আটক করা হলেও শুপারিশের কোনো অন্ত থাকে না। চুনোপুটি নয় আমরা এখন মাদক মাফিয়াদের খুঁজছি’। তিনি আরো বলেন, ‘পুলিশের একার পক্ষে মাদক প্রতিরোধ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এলাকাবাসীকে অনুরোধ করবো, কোনো প্রকার দ্বিধাদন্ধ না করে আমাকে ফোনে বা সরাসরি জানান। যতদ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নিব’।