আজ মঙ্গলবার বরিশাল আসছেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে অপরূপ সাজে সেজেছে নগরী। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে বরিশালকে। কীর্তনখোলার দুই তীরের বাসিন্দারা ভাসছেন আনন্দ-উচ্ছ্বাসের বন্যায়। প্রধানমন্ত্রী আজ বেলা ১১টায় হেলিকপ্টারযোগে এখানে পৌছবেন। এরপর দপদপিয়া সেতু (আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতু) উদ্বোধন করবেন। সেতু সংলগ্ন এলাকায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও নগরীর সিএন্ডবি সড়কে আব্দুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এরপর নবনির্মিত বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের ভবন উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর জনসভার আয়োজন করা হয়েছে সেতু সংলগ্ন এলাকায়। জনসভা সফল করতে প্রত্যেক উপজেলায় কর্মীসভা ছাড়াও ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। দিন-রাত নগরজুড়ে চলছে মাইকিং। সাবেক চীফ হুইপ আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, বিসিসি মেয়র শওকত হোসেন হিরণ, তালুকদার মোঃ ইউনুস-এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, জনতা ব্যাংকের পরিচালক এডভোকেট বলরাম পোদ্দার বাবলু ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ প্রধানমন্ত্রীর সফর সফল করতে গত কয়েকদিন যাবৎ এখানে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন।
সেতুর ইতিকথা
দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের এই সেতুর কাজ শুরু হয়েছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। নগর সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর উপর এক হাজার ৩৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ওয়াই টাইপের ঐ সেতু নির্মাণের জন্য তখন কুয়েত সরকারের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন হয়। তখন যোগাযোগ মন্ত্রণালয় একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। আওয়ামী লীগ আমলেই ২০ একর জমি অধিগ্রহণ করে ৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা মূল্য পরিশোধ করা হয়। প্রকল্পের অধীন ৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার এপ্রোচ সড়ক ও খয়রাবাদ নদীর উপর ২৭৪ মিটার একটি গার্ডার সেতু ও ৯টি কালভার্টসহ ব্যয় হয়েছে ২২৪ কোটি টাকা। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬১০ মিটার। এপ্রোচ সড়কের মধ্যে বরিশাল প্রান্তে ৩৬০ মিটার ও পটুয়াখালী প্রান্তে ৪২০ মিটার। পায়ে হেঁটে চলার জন্য উভয় প্রান্তে এক মিটার করে জায়গা রাখা হয়েছে।
যে কারণে দীর্ঘসূত্রতা
বিগত আওয়ামী লীগ আমলে জমি অধিগ্রহণ করে সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হলেও বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর যোগাযোগ মন্ত্রণালয় বিমাতাসুলভ আচারণ শুরু করে। ঠিকাদার নির্বাচনে দফায় দফায় মত পরিবর্তন করার পাশাপাশি কেএফআইডি’র সাথে চিঠি চালাচালি করতে থাকে। এক পর্যায়ে কাজের দীর্ঘসূত্রতা দেখে কেএফআইডি তাদের ফান্ড ফেরত নিতে চায়। ফলে বিএনপি ক্ষমতা ছাড়ার আগে ২০০৬ সালের অক্টোবর মাসে সেতুর ঠিকাদার নিয়োগ করে। তখন প্রজেক্ট বিল্ডার্স নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও বর্তমান সরকারের আমলে দফায় দফায় ঠিকাদারকে সময় বৃদ্ধি করায় নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে গত ৩১ ডিসেম্বর। শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০০৯ সালের ১০ অক্টোবর। দীর্ঘসূত্রিতার জন্য জোট সরকারকে দায়ী করে সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরন ও জনতা ব্যাংকের পরিচালক বলরাম পোদ্দার ইত্তেফাককে জানান, বিগত আওয়ামী লীগ আমলে দোয়ারিকা (বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু), শিকারপুর (মেজর এমএ জলিল সেতু), গাবখান সেতু ও বলেশ্বর সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। তখন লাউকাঠী নদীর উপর পটুয়াখালী সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছাড়ার পর বিগত জোট সরকার ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দক্ষিণাঞ্চলের বড় কোন সেতু নির্মাণ তো দূরের কথা, সড়ক-মহাসড়কেরও কোন উন্নয়ন হয়নি। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ ইত্তেফাককে জানান, আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল আওয়ামী লীগ আমলে। আবার তা উদ্বোধনও হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। বিগত আওয়ামী লীগ আমলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। তিনিই আবার আজ সেতুর উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন। আজ থেকে এই সেতুর উপর দিয়ে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা, মহিপুর, আলিপুর, বাউফল, দশমিনা, বাকেরগঞ্জ, আমতলী, তালতলী ও বরগুনা রুটের যানবাহন যাতায়াত করতে পারবে।
অপরূপ সাজে বরিশাল
অপরূপ সাজে সাজানো হয়েছে বরিশাল নগরীকে। দপদপিয়া সেতুসহ কর্ণকাঠী এলাকা প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংবলিত বিলবোর্ড ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে। সেতু সংলগ্ন রূপাতলী চত্বরকে সাজানো হয়েছে রং-বেরংয়ের ফেস্টুন ও পস্ন্যাকার্ড দিয়ে। নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। সড়কের দু’পাশে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন বাণী ও শেস্নাগান লিখে নতুন সাজে সাজানো হয়েছে। বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করার জন্য যে পথে প্রধানমন্ত্রী যাবেন সেই সড়ক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে নতুন রূপ দেয়া হয়েছে। নথুলস্নাবাদ থেকে রূপাতলী পর্যন্ত এখন অসংখ্য তোরণ শোভা পাচ্ছে। কোথাও কোন ধুলো-বালি নেই। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এক নগরীতে রূপ নিয়েছে বরিশাল।
ছয় বছর পর বরিশালে শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনার আজকের সফর দীর্ঘ ছয় বছরের প্রতীক্ষার ফসল। ২০০৫ সালে সর্বশেষ শেখ হাসিনা বরিশাল সফরে আসেন। তখন তিনি ছিলেন বিরোধী দলীয় নেত্রী। ঐ সময়ে তার গাড়িবহরে গৌরনদীতে হামলা চালানো হয়েছিল। বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশে চারদলীয় জোট ক্যাডাররা বাধা দেয়। প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা-নেত্রীদের বিভাগীয় শহর থেকে শুরু করে জেলা-উপজেলায় সভা-সমাবেশ করার রেওয়াজ থাকলেও সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধরাবাঁধা সময়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বরিশাল সফরে আসতে পারেননি। তারপরও দক্ষিণাঞ্চলের ২১ আসনের মধ্যে ১৯টি আসনে বিজয়ী হন মহাজোটের প্রার্থীরা। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দু’বছর পর এই প্রথম শেখ হাসিনা বরিশাল সফরে আসছেন। প্রধানমন্ত্রীর আজকের আগমনের মূল উদ্দেশ্য আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর উদ্বোধন করা। কীর্তনখোলা নদীর উপর ঐ সেতু নির্মাণের পর দু’প্রান্তের মানুষ একাকার হয়ে যাবে। সেই স্বপ্নে প্রহর গুনছে উভয় তীরের বাসিন্দারা। সেতুর সাজগোজ নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের ব্যস্ততা তাদের কাছে বিয়ে বাড়ির আয়োজনের মতোই। সাজসজ্জার পর আজ প্রধানমন্ত্রী ফিতা কাটার পর উন্মুক্ত হয়ে যাবে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত দক্ষিণবঙ্গের কোটি মানুষের স্বপ্নের সেতুর দ্বার। সেই শুভ মহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় কীর্তনখোলা নদীর দুইতীরের বাসিন্দারা। দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঝেও দেখা দিয়েছে প্রাণচাঞ্চল্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর
কোটি মানুষের স্বপ্নের সেতুর উদ্বোধনের পাশাপাশি কীর্তনখোলা নদীর পূর্বতীরে সেতু সংলগ্ন কর্নকাঠী এলাকায় আজ প্রধানমন্ত্রী বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর প্রকল্পের অধীনে থাকা খয়রাবাদ সেতুর কাছাকাছি এলাকায় কর্নকাঠীতে ৫০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। এরমধ্যে ৩৬ একর জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়ে গেছে। জমি অধিগ্রহণ বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ৭ কোটি টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক জানান, জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত রিট খারিজ হয়ে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরই অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরু হবে। সারাদেশের মধ্যে বরিশালে শিক্ষার হার বেশি হলেও এখানে কোন বিশ্ববিদ্যালয় নেই। দীর্ঘ ৩৩ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের নির্মাণে ব্যয় হবে ৬০ কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৫ কোটি টাকা। একই দিন প্রধানমন্ত্রী বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের নবনির্মিত যে ভবন উদ্বোধন করবেন তাতে ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি টাকা। ৬ একর জমির উপর নগরীর প্রবেশদ্বার নথুলস্নাবাদে নির্মাণ করা হয়েছে শিক্ষাবোর্ড ভবন। বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে রিট খারিজের দুইদিন পর প্রধানমন্ত্রীর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে আসার খবরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে গোটা দক্ষিণাঞ্চলে। কীর্তনখোলার দুই তীরে লাখো মানুষের অপেক্ষা এখন শুধুই প্রধানমন্ত্রীকে ঘিরে। তিনি কখন আসবেন, সেতুর উদ্বোধন করবেন, কখন দুই তীরের মানুষ এক হয়ে যাবে সেই স্বপ্ন এখন সকলের দুই চোখে।
নিরাপত্তার চাঁদরে পুরো নগরী
উদ্বোধন উপলক্ষে সরকারিভাবে সেতু এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিভিন্ন জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এনে মোতায়েন করা হয়েছে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। সেতু সংলগ্ন এলাকায় র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা তৎপরতা শুরু করেছেন। রবিবার বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার এখানকার হেলিপ্যাডে এসে মহড়া দিয়ে ফিরে গেছে। নিরাপত্তার স্বার্থে আজ প্রধানমন্ত্রীর বিদায়ের আগে পর্যন্ত বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলবাসীর প্রত্যাশা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরিশাল সফরকে কেন্দ্র করে স্বপ্ন পূরণের প্রত্যাশায় বুক বেঁধে আছে দক্ষিণাঞ্চলের অবহেলিত কোটি মানুষ। এ অঞ্চলের দারিদ্র্যপীড়িত মানুষ প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে তাদের ভাগ্য বদলের ঘোষণা শুনতে চায়। এখানে লাখ লাখ দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের বসবাস। ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে এরা দিনভর শ্রম করেও তিনবেলা খাবার জোটাতে পারে না। দ্রব্যমূল্যের ঊধর্্বগতি এবং বেকারত্ব এ অঞ্চলের হতদরিদ্র মানুষকে কুরে কুরে খাচ্ছে। প্রায় দু’যুগ আগে ভোলার শাহবাজপুরে আবিষ্কৃত গ্যাস ব্যবহারের জন্য বিগত কোন আমলেই পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। প্রধানমন্ত্রী ঐ গ্যাস বরিশাল ও গোপালগঞ্জসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে সরবরাহের ঘোষণা দেবে বলে প্রত্যাশা করছেন এ অঞ্চলের মানুষ। ভোলার গ্যাস উত্তোলন করে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে শিল্পনগরী গড়ে তোলার ঘোষণা শুনতে চায় দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। বিগত আওয়ামী লীগ আমলে এ অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগের উন্নয়ন হলেও গত ১১ বছরে বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক বেহাল দশায় রূপ নিয়েছে। কুয়াকাটায় আধুনিক পর্যটন নগরী গড়ে তোলার জন্য সড়ক সেতু নির্মাণের দাবি এ অঞ্চলের কোটি মানুষের। কুয়াকাটায় যাতায়াতের পথে লেবুখালী, কলাপাড়া, হাজীপুর ও মহিপুর নদীর উপর এখনো কোন সেতু নির্মাণ হয়নি। দক্ষিণের মানুষ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার উন্নয়নের স্বার্থে ঐ ৪টি সেতু দ্রুত বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি শোনার অপেক্ষায়। একই সাথে বিশ্বাসের হাট নদীর উপর সেতু বাস্তবায়নের ঘোষণার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষ। এই ৫ সেতুসহ নেহালগঞ্জ সেতু নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন থাকলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় কাজ শুরু করা যায়নি। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে এখানকার দানবীর শিল্পপতি অমৃত লাল দে বলেন, রাজধানীর ঢাকার যানজট কমাতে মাওয়ায় পদ্মা সেতুর দ্রুত বাস্তবায়নের পাশাপাশি বিভাগীয় শহরগুলোতে রেললাইন স্থাপন জরুরি। চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সাঈদুর রহমান রিন্টু বলেন, গ্যাস লাইনের সাহায্যে বরিশালে শিল্প কল-কারখানা গড়ে তুলতে এখানকার ব্যবসায়ীরা আগ্রহী। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে উদ্যোগী হলে শিক্ষার নগরী বরিশাল শিল্পনগরীতে রূপ নিতে বেশি সময় লাগবে না। জাহাজ শিল্পের সম্ভাবনার কথা উলেস্নখ করে ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, এ অঞ্চলে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে পারেন একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
যোগাযোগ বৈষম্যে পিছিয়ে থাকা এ অঞ্চলের সাথে রাজধানী ঢাকার সহজ যোগাযোগ স্থাপন করতে ও যাত্রী দুর্ভোগ কমাতে লঞ্চের রোটেশন প্রথা বাতিল ও অচল বিমান বন্দরকে সচল করতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে ঘোষণা শুনতে চান দক্ষিণের অবহেলিত কোটি মানুষ। লবণাক্ততার নতুন অভিশাপে কৃষক বাঁচাতে করণীয় উদ্যোগ না নিলে বাংলার শস্যভাণ্ডার তার ঐতিহ্য হারাতে পারে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগী হবেন বলে এখানকার মানুষের প্রত্যাশা।