বিশ্বকাপ উন্মাদনায় ভাসছে গৌরনদী-আগৈলঝাড়া

দিন-রাত জুড়ে এসব উপজেলার চায়ের দোকান থেকে শুরু করে মাঠে-ময়দানে, হাট-বাজার ও পাড়া-মহল্লায় ক্রিকেট ভক্তরা শুধু নিজ দেশের বন্দনা করে চলেছেন। তেমনি আনন্দ মিছিল, উচ্ছাস, মটরসাইকেল কিংবা ট্রাক মিছিল, বিশাল পতাকা প্রদর্শন ও নিজ দেশের দলের জার্সি গায়ে দিতে কোনটিতেই ভুল করেননি এখানকার ক্রিকেট ভক্তরা। এ দু’উপজেলার প্রত্যেকটি পয়েন্টে দেশের টাইগারদের পারফরমেন্সের আলোচনা আর বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ নিয়ে আলোচনার যেন শেষ নেই। এসব এলাকার ক্রিকেট ভক্তদের একটাই প্রতিক্রিয়া সাকিব বাহিনীর ভালো পারফরমেন্সের। এ দু’উপজেলার বিভিন্ন বাসষ্ট্যান্ডে সু-বিশাল পাতাকা প্রদর্শন, পিকআপ ও মটরসাইকেল দিয়ে বাংলাদেশ দলের শুভ কামনায় মিছিলের ঝড়। তরুন, যুবক থেকে শুরু করে স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীদের প্রায় সকলেই নিজ দলের জার্সি গায়ে দিয়ে ঘুরে বেড়ানো, গালে ও কপালে জাতীয় পতাকার আলপনা প্রদর্শন ও সর্বত্র জাতীয় পতাকা প্রদর্শনে মহান ভাষার মাসে যেন নতুন করে সেজেছে দেশ।

দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ ব্যবসায়ীক বন্দর গৌরনদী উপজেলার টরকী বন্দরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ ফরহাদ মুন্সী ও আল-আমিন হাওলাদারের নেতৃত্বে গত তিনদিন ধরে বাংলাদেশ দলের শুভ কামনায় বের করা হচ্ছে মটরসাইকেল র‌্যালী। প্রায় অর্ধশাধিক মটরসাইকেলে দেড়’শতাধিক তরুন ও যুবকেরা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সি গায়ে দিয়ে ও সবুজে রক্তে লাল বিজয় পতাকা মাথায় বেঁধে দু’উপজেলার ক্রিকেট ভক্তদের উৎসাহ যোগাতে র‌্যালী করে চলেছেন। গৌরনদী বাসষ্ট্যান্ডস্থ নিউ সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী ইমতিয়াজ আহম্মেদ কোরাইশী সোহাগ, রোমিও মানিক, সবুজ শরীফ, সোহাগ ভূঁইয়া, দিপক সিকদার, সঞ্জয় কুমার পাল, জাকির হোসেন, জুয়েল, মাসুম ও মামুন আহম্মেদের উদ্যোগে প্রতিদিন মার্কেটে আগত ক্রিকেট প্রেমিদের বিনামূল্যে গালে ও কপালে বাংলাদেশের পাতাকা খচিত আলপনা একে দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও তারা উপজেলার বিভিন্ন গুরুতপূর্ণ স্থানে বাংলাদেশের অসংখ্য সু-বিশাল পতাকা প্রদর্শন করেছেন। ইতোমধ্যে ক্রিকেট ভক্তদের মাঝে বিলি করেছেন নিজ দলের পাঁচ শতাধিক জার্সি ও সহস্রাধীক ছোট-বড় পতাকা। বাংলাদেশ দলের শুভ কামনায় এসব ক্রিকেট ভক্তদের ব্যতিক্রমধর্মী এ উৎসাহ আয়োজনে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।     

দেশের ভালোবাসা আর সমৃদ্ধি কামনায় এ ব্যতিক্রম ধর্মীর আয়োজক ইমতিয়াজ আহম্মেদ কোরাইশী সোহাগ বলেন, বাংলাদেশ দলের শুভ কামনা ও শুভেচ্ছা ধ্বনিতে এ আয়োজন করা হয়েছে। এসব আয়োজন বাস্তবায়নে কারো কোন ক্লান্তি নেই। তিনি আরো বলেন, বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে টাইগাররা যে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছে তা সত্যি প্রশংসনীয়। তার পরেও বাংলাদেশ দলের মধ্যকার ভুলবোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে মাঠের পুরো দর্শকদের প্রেরণা আর শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আগামি ম্যাচগুলোতে টাইগাররা ঘুরে দাঁড়াবেন বলেও তিনি আশা করছেন। গৌরনদীর সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জহুরুল ইসলাম জহির বলেন, দেশের মাটিতে খেলার জন্য টাইগারদের ভালো একটা সার্পোট রয়েছে। আমার প্রত্যাশা দেশের মাটিতে টাইগাররা গর্জে উঠবেই। আর জয় আমাদের হবেই। গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ক্রিকেট ভক্ত মোঃ নুরুল ইসলাম-পিপিএম বলেন, গ্যালারির দর্শকদের বিরাট একটা সার্পোট কাজ করবে মাঠে। ওই সার্পোটকে কাজে লাগিয়েই সাকিব বাহিনীকে এগিয়ে যেতে হবে। মাথা গরম না করে সাকিব বাহিনী বলে ব্যাটে লড়াই করলে আগামি ম্যাচগুলোতে টাইগারদের বিজয় নিশ্চিত হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ক্রিকেট ভক্ত ও গৌরনদী পৌরসভার মেয়র মোঃ হারিছুর রহমান হারিছ বলেন, মহান ভাষা আন্দোলনের মাসে নিজ দেশের সম্মান রক্ষার্থে আগামি ম্যাচগুলোতে টাইগাররা ভালো খেলবেন এমনটিই আশা করছেন পুরো দেশের ক্রিকেট ভক্তরা। তিনি বাংলাদেশ দলের সফলতা কামনা করেন।