মাতোয়ারা ঢাকার রাজপথ

শুক্রবার মিরপুরের শে-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নেমে ২০৫ রানেই বাংলাদেশের ইনিংস গুটিয়ে যাওয়ার পর আশা-নিরাশার দোলায় দুলতে শুরু করেছিল পুরো দেশ। শেষ পর্যন্ত ২৭ রানে জয়ের মধ্যে দিয়ে গত বিশ্বকাপে হারের প্রতিশোধ নিয়েছে টাইগাররা।

আয়ারল্যান্ডের শেষ উইকেটটির পতনের সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় নেমে আসে ক্রিকেটপ্রেমী নগরবাসী। ছোট ছোট মিছিল নিয়ে অলি গলি রাজপথে শুরু হয় তাদের জয়োল্লাস। ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ শ্লোগানে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে রাতের ঢাকা।

খেলা শেষে বেরিয়ে আসা আনন্দিত দর্শকদের স্রোতে মিরপুরের শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের সামনের রাস্তাটি যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়। বাঁশি বাজিয়ে, শ্লোগান দিয়ে বাংলাদেশ দলকে অভিনন্দন জানাতে থাকে ক্রিকেটপ্রেমীরা। এ সময় তাদের তাদের কপালে বাঁধা ছিল দেশের পতাকা। হাতেও উড়ছিল লাল-সবুজ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র মাহমুদুল হাসান বলেন, “খেলা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যেন গর্জে উঠলো পুরো ক্যাম্পাস। থালা-বাটি-চামচ নিয়ে স্রোতের মতো ছাত্ররা বেরিয়ে এসেছে। ক্যাম্পাস জুড়ে এখন শুধুই আনন্দ।”

যাত্রাবাড়ীর রাস্তায় বিজয় মিছিল থেকে বেরিয়ে এসে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী নাজিমউদ্দিন (৩০) বললেন, “বাসায় বসেই খেলা দেখেছি। কিন্তু জয়ের পর আর ঘরে থাকতে পারলাম না। সবার সঙ্গে রাস্তায় নেমে মিছিল না করলে এই আনন্দ শেয়ার করা যায় না।”

মহাখালী এলাকায় মিছিল করতে থাকা কলেজ ছাত্র ইমরোজ হাসান বললেন, “২০০৭ সালের বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ডের কাছে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিলাম আজ।”

একটি আন্তজার্তিক সংস্থার কর্মকর্তা, মিরপুরের বাসিন্দা জোবায়দুর রহমান বলেন, “খেলার এক পর্যায়ে মনে হয়েছিল, ম্যাচটা হয়তো হাতছাড়া হয়ে যাবে। কিন্তু টানটান উত্তেজনার পর ঠিকই বিজয় ছিনিয়ে এনেছে সোনার ছেলেরা। তাদের শুভেচ্ছা জানাতেই আমরা মিছিল করছি।”

মহাখালীর বাসিন্দা মতিউর রহমান বলেন, “আমরা স্বাগতিক দেশ। প্রতিটা খেলার পরই আমরা এমন আনন্দ উদযাপন করতে চাই। এখানে ছোট দল- বড় দল বলে কোনো কথা নেই। আমরা জয় চাই, জয়।”

মিরপুরের চায়ের দোকানী বাবু দুপুরে পর থেকে খেলা দেখলেন এক রকম ব্যবসাপাতি বন্ধ রেখেই। তিনি বললেন, “ম্যাচটা যেন হারতে হারতে জিতে গেলাম। এ জন্য আনন্দ আরো বেশি।”

মোহাম্মদপুরের শিক্ষার্থী মিরাজ মওলা চৌধুরী বলেন, “এই জয়ের মাধ্যমে বিশ্বকাপের টিকে থাকার আনন্দটা নতুন করে পেলাম।”

গুলশানের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শরীফুল ইসলাম বলেন, “এই জয়ে যতো আনন্দ পেয়েছি, বাংলাদেশের সবগুলো ম্যাচেই এমন আনন্দ পেতে চাই।”

 

BDNews24.com