গৌরনদীর চাঞ্চল্যকর আছিয়া হত্যার মূলরহস্য ১৮ দিন পর উদ্ঘাটন

বোনের নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতেই ভাই ভাড়াটিয়া কিলার নিয়ে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে বোনের শাশুড়ি আছিয়া বেগমকে (৬৫)। হত্যা করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি হত্যাকারীরা। আছিয়ার ব্যবহারিক স্বর্ণালংকার লুটসহ লাশ গুমের জন্য ডোবার পানিতে চাঁপা দিয়ে রাখা হয়। বরিশালের গৌরনদীর চাঞ্চল্যকর আছিয়া হত্যাকান্ডের ১৮ দিনের মধ্যেই এসব মূলরহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
সরেজমিন ঘুরে ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গৌরনদী উপজেলার সীমান্তবর্তী উজিরপুর উপজেলার মোড়াকাঠী গ্রামের আব্দুর রব সরদারের মৃত্যুর পরে তার স্ত্রী আছিয়া বেগম (৬৫) দ্বিতীয় পুত্র আলাউদ্দিনের সাথে বসবাস করতেন। এরইমধ্যে আলাউদ্দিন বিয়ে করেন একই গ্রামের ভাষাই সরদারের কন্যা রুপালী বেগমকে। বিয়ের পর থেকে রুপালীর সাথে তার শাশুড়ি আছিয়ায় প্রায়ই ঝগড়া ঝাটি লেগে থাকতো। এরজের ধরে প্রায়ই রুপালী তার বাবার বাড়িতে গিয়ে তার বাবা ও ভাইয়ের কাছে শাশুড়ি আছিয়ার মানষিক অত্যাচারের কথা জানাতো। বোনের সুখের দিকে তাকিয়ে নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতে ভাই এনামুল হক সরদার (২৭) আছিয়া বেগমকে হত্যার পরিকল্পনা গ্রহন করে। এরই ধারাবাহিকতায় এনামুল একই গ্রামের মাইনুল সরদারকে ভাড়া করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী এনামুল তার বোন রুপালী ও বোন জামাতা আলাউদ্দিনকে গত ২৮ ফেব্র“য়ারি নিমন্ত্রন করে তাদের বাড়িতে নেয়। ওইদিন রাতেই একাকি ঘরে আছিয়াকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়। হত্যার পর লাশ গুমের জন্য গৌরনদীর দক্ষিণ বাটাজোর গ্রামের সমির বাড়ৈর পান বরজের ডোবার পানির মধ্যে চাপা দিয়ে রাখা হয়।
পরেরদিন (১ মার্চ) সকালে পান বরজের শ্রমিকরা ডোবার মধ্যে লাশ দেখে থানা পুলিশকে খবর দেয়। গৌরনদী থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করে। ওইদিনই নিহতর জেষ্ঠ পুত্র জামাল হোসেন সরদার বাদি হয়ে অজ্ঞাত পরিচয়ে ৭/৮ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই শাহজাহান জানান, হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে প্রাথমিক পর্যায়ে মাইনুল সরদার, টুকু দেওয়ান, কাইয়ুম হোসেন ও শাহাদাত রাঢ়ীকে গ্রেফতার করা হয়। এরইমধ্যে মাইনুলকে তিনদিনের রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার রহস্য বেড়িয়ে আসে। মাইনুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী এনামুল হক সরদারকে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বাটাজোর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি আরো জানান, হত্যার মূলরহস্য উদঘাটন করা হলেও তদন্তের স্বার্থে তা গোপন রাখা হয়েছে।