শিশুর সাথে কখনই এই কাজটি করবেন না…

ক্ষতি করি আমাদের প্রিয় সন্তানদের, ভাগ্নে-ভাগ্নীদের, ভাতিজা-ভাতিজীদের…

[Flash 9 is required to listen to audio.]

আমরা অনেকেই শিশুকে ক্ষেপাই এই ধরনের কথা বলে:
আমরা: সুনাতা তুমি পঁচা
সুনাতা: না আমি ভালো
আমরা: না তুমি খুবি পঁচা
সুনাতা (কাঁদো কাঁদো স্বরে): না আমি ভালো তো
আমরা: তাহলে তোমার আব্বু পঁচা।
সুনাতা (চোখে পানি এসে গেছে): আমার আব্বুও ভালো।
আমরা: তবে তোমার আম্মু পঁচা।
সুনাতা (কান্না শুরু হয়েই গেছে): আম্মুও অনেক ভালো।
আমরা: তুমি পঁচা, পঁচা পঁচা…

এইভাবে চলতে থাকে ঐ শিশুটির প্রতি আমাদের অত্যাচার। আমরা কথাগুলি হাসতে হাসতেই বলি আর তাই ঐ শিশুটির বড়রা এটাকে কিছুই মনে করেন না। (আমরা বড়রা হয়তো তখনি রাগি যদি বড় কেউ আমার শিশুকে অযথা মারে। কিন্তু শুধু কিছু আচরনের দ্বারাও যে একটি শিশুর ক্ষতি হয় সেটা আমরা বড়রা বুঝিনা বলে আমরাও পঁচা পঁচা কথার সাথে হাসি) কিন্তু আপনারা কি জানেন একটি শিশুকে কখনই ক্ষেপানো উচিত নয়? একটা শিশুকে কখনই খারাপ গুনে ডাকা ঠিক নয় এবং তার কাছের জনদেরকেও কখনই খারাপ বলতে হয়না।

একটি শিশু জন্মের পর থেকে তার মা-বাবা (ও আরো আত্নীয়কে) কে খুব কাছে থেকে দেখে। সে বুঝে যায় যে, এনারা আমার নিরাপত্তা দেন, এনারা আমার ক্ষুধায় খাবার দেন, অন্ধকারেও এনাদের কথা শুনতে পাই, আমি কাঁদলে এনারা ছুটে আসেন, আমার অসুস্থতায় এনারা পাশে থাকেন আর তাই এই খুব ভালো লাগা মানুষদেরকে যখন আমরা পঁচা বলি, একটি শিশু হিসাব মেলাতে পারেনা একদম। তারকাছে কথাগুলি হজম করতে খুব কষ্ট হয়। আর তাই অতি নিমেষেই ঝর ঝর করে কেঁদে ফেলে।

দোহাই আপনাদের যারা যারা এই লেখা পড়লেন, আর কখনই কোন শিশুকে এইভাবে ক্ষেপাবেন না। এভাবে ক্ষেপিয়ে মুলত আপনি নিজেই ঐ শিশুটির অপ্রিয় পাত্র হবেন। আপনার আপনজনদেরকে এই ব্যাপারটি জানান। শুধু একটি বার ভেবে দেখেন যে, এই প্রাপ্ত বয়স্ক বয়সে যদি আজ আমাকে কেউ আমার পিতা-মাতার চারিত্রিক কোন মারাত্নক দোষের ঘটনা তুলে ধরে তবে আমার কেমন লাগবে! ঠিক তেমনি লাগে একটি শিশুর কাছে যদি সে তার মা-বাবাকে পঁচা বলে কেউ। কেবল মাত্র ‘পঁচা’ শব্দটাই তার কাছে যথেষ্ট ঘৃন্য একটি শব্দ।

লেখক: শিবলী মেহদী

Web: Learningfrommylife.wordpress.com