বরিশালে বোরোর ক্ষেতে গুটি ইউরিয়ার ব্যবহার বৃদ্ধি

চলতি মৌসুমে ২৩ হাজার ৬’শ ১৮ হেক্টর জমিতে ব্যবহার করা হচ্ছে এ সার। যা গত মৌসুমের চেয়ে ৯ হাজার ২’শ ৬৮ হেক্টর বেশি। সূত্র মতে, ২০০৭-০৮ সালে গুটি ইউরিয়ার ব্যবহার শুরু হয়। কিন্তু ব্রিকোয়েট মেশিনের অভাব প্রচারের অপর্যপ্ততা, সুফল সম্পর্কে কৃষকদের সচেতনে ব্যর্থতার কারনে বরিশালের বোরো চাষীদের মাঝে প্রভাব ফেলতে পারেনি। পত্র-পত্রিকা সহ বিশেষজ্ঞ সচেতন মহল সক্রিয় হয়ে উঠলে বোরো চাষীরা ২০০৮-০৯ সালে ৪ হাজার ৫’শ হেক্টর জমিতে গুটি ইউরিয়া ব্যবহার করে। ব্যবহৃত সারের পরিমান ছিল ৭২২ মেঃটন। সুফল পাওয়ার পর বোরো চাষীদের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে গুটি ইউরিয়ার গুনাগুন। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় বিক্রোয়েট মেশিন নিয়ে। ১০ উপজেলায় ২০টি মেশিন বসানো হলেও খুচরা যন্ত্রাংশের অভাবে অধিকাংশই বন্ধ হয়ে যায়। কৃষকরা আগ্রহীশীল হয়ে উঠলেও টনক নড়েনি কৃষি কর্মকর্তাদের। অদম্য কৃষকরা ২০০৯-১০ সালে বহুকষ্টে বিভিন্ন জেলা থেকে ২ হাজার ২’শ ৯৬ মেঃটন গুটি ইউরিয়া সংগ্রহ করে ১৪ হাজার ৩’শ ৫০ হেক্টর জমিতে ব্যবহার করে। চলতি মৌসুমে নতুন ব্রিকোয়েট মেশিন বসানো সহ অবেজো মেশিন চালু করার পর জেলায় মোট মেশিন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১টি। যা প্রয়োজনের তুলনায় মাত্র অর্ধেক। খুচরা যন্ত্রাংশের অভাব আর মেশিন মালিকদের সেচ্ছাচারিতায় ইতি মধ্যে ১০টি মেশিন অকেজো পড়ে রয়েছে। তবুও বোরো চাষীরা হতাশ না হয়ে ২৩ হাজার ৬’শ ১৮ হেক্টর জমিতে গুটি ইউরিয়া ব্যবহার করছে। যা গত মৌসুমের চেয়ে ৯ হাজার ২’শ ৬৮ হেক্টর বেশি। ব্যবহৃত গুটি ইউরিয়ার পরিমান ৩ হাজার ৩’শ ২ মেঃটন। এ ব্যাপারে বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুধল মৌ গ্রামের বোরো চাষি হাবিবুর রহমান জানান, ব্রিকোয়েট সংখ্যা কম হওয়ায় মালিকগন তাদের ইচ্ছে মত গুটি ইউরিয়া তৈরী করছে। অনেক সময় গুড়ো ইউরিয়া নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। পাশাপাশি মাত্রাতিরিক্ত মূল্য দিয়েও কিনতে হয় গুটি ইউরিয়া। প্রতি ইউনিয়নে ২টি করে মোট ১৭০টি ব্রিকোয়েট মেশিন বসালে বোরো চাষীরা এ সমস্যা থেকে হয়তো কিছুটা রক্ষা পেত।

এ ব্যাপারে উদ্ভিদ সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ লুৎফর রহমান জানান, গুটি ইউরিয়া ব্যবহারে ২০ থেকে ২৫ ভাগ ফলন বৃদ্ধি, অপচয় রোধ, কম ব্যবহার সম্পর্কে কৃষকরা জেনে উৎসাহী হওয়ায় ব্যবহৃত জমির পরিমান বাড়ছে। প্রয়োজনীয় গুটি ইউরিয়া সরবরাহ এবং সহজ লভ্য হলে এমন এক সময় আসবে যখন বোরো চাষীরা শুধু গুটি ইউরিয়াই ব্যবহার করবে। এ ব্যাপারে বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দেবংশু কুমার সাহা জানান, গুটি ইউরিয়ার সুফল ও ব্যবহার সম্পর্কে বোরো চাষীদের সচেত ও উদ্বুদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম চালানো হয়েছে। যা বর্তমান রয়েছে। আর মাঠ পর্যায়ে সক্রিয়-কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে সকল কৃষি কর্মকর্তারা। ফলে বোরোর ক্ষেতে গুটি ইউরিয়ার ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।