গৌরনদীর সফল চাষী ইসমাইল মিয়া

গ্রামের সফল চাষী আলহাজ্ব মোঃ ইসমাইল মিয়া। চলতি বোরো মৌসুমে সর্বপ্রথম গুটি ইউরিয়া ব্যবহারের মাধ্যমে সুগন্ধি ব্রি-৫০ বাংলামতি ধানের চাষ করে তিনি বাম্পার ফলন পেয়েছেন। স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারন BIO GAS - BASHMOTI Riceঅধিদপ্তর শস্য কর্তনের পর প্রতি শতকে ১ মনেরও বেশি ফলন ঘোষণা করেছেন। শুধু ধান চাষেই সীমাবদ্ধ নেই এ সফল চাষী। তিনি নিজবাড়ির সম্মুখে ১ একরের বিশাল মাছের ঘের, পানবরজ, গবাদি পশু (গরু) ফার্ম, হাঁসের ফার্ম, বাউকুল ও আপেল কুলের বাগান, বিভিন্ন ফলজ বৃক্ষের চাষ ও বায়োগাসপ্লান্ট তৈরি করে এলাকায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।


অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ইসমাইল মিয়ার মতে বাংলামতি ধান চাষে অল্প খরচে অধিক ফলন পাওয়া যায়। ফলে এসব এলাকার চাষীদের এ সুগন্ধী ধান চাষ করা উচিত। অত্র অঞ্চলে এ বছরই কেবল বাংলামতি ধান চাষ করে বাম্পার ফলন ফলিয়ে রিতিমতো ইসমাইল মিয়া ওই এলাকায় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। খুলনা থেকে প্রতিকেজি ১৩০ টাকা দরে বাংলামতি ধানের বীজ সংগ্রহ করে তিনি (ইসমাইল) বাড়ির সম্মুখের মাছের ঘেরের মধ্যের ৪০ শতক জমিতে এ ধান চাষ করেছিলেন। ঘেরের বাকি ৬০ শতক জমিতে তিনি বি-আর ২৯ ধানের চাষ করেন। তাতেও বাম্পার ফলন ফলেছে। পরিবারের সকলের সহযোগীতা ও তার বড়পুত্র স্পেন প্রবাসী (সিভিল ইঞ্জিনিয়ার) কাওসার রহমানের উৎসাহে তিনি এসব প্রকল্প গ্রহন করেছেন বলে উল্লেখ করেন।

সরেজমিন ঘুরে ও সফল চাষী ইসমাইল মিয়ার সাথে আলাপকালে জানা গেছে, তার ৫ একরের বাড়ির সম্মুখে ১ একরে মাছের ঘের রয়েছে। বসত ঘর ব্যতিত অন্যান্য স্থানে বাউকুল, আপেল কুল, বিভিন্ন জাতের ফলজ গাছ রোপন, দু’শখানা পান Bashomoti Riceবরজ, গরুর ফার্ম ও হাঁসের ফার্ম করেছেন। তার নিজের গরুর ফার্মের বর্জ দিয়ে তৈরি করেছেন বায়োগ্যাসপ্লান্ট। দীর্ঘদিন থেকে পরিবারের রান্নাবান্নার কাজ করছেন বায়োগ্যাস দিয়েই। স্ত্রী আলহাজ্ব বেগম শাহানআরা, ৪ পুত্র ও ৩ কন্যা সন্তানকে নিয়েই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ইসমাইল মিয়া সুখের সংসার। কন্যা তাসলিমা, আকলিমা ও মনিকে বিয়ে দিয়েছেন। বড়পুত্র সিভিল ইঞ্জিনিয়ার কাওসার রহমান স্পেন প্রবাসী, মেঝপুত্র সাইদুর রহমান-দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী, সেজ পুত্র ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার মাসুদ মিয়া-ইটালী প্রবাসী, ছোটপুত্র মশিউর রহমান বর্তমানে বাবার সকল প্রকল্প দেখাশুনা করছেন। সফল চাষী ইসমাইল মিয়া জানান, তার বড়পুত্র স্পেন প্রবাসী কাওসার রহমানের উৎসাহে তিনি গত তিনবছর ধরে পর্যায়ক্রমে এসব প্রকল্প শুরু করেছেন। প্রতিটি প্রকল্পেই তিনি লাভবান হয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন।

গৌরনদী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সিরাজুল ইসলাম সিরাজ জানান, অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক আলহাজ্ব মোঃ ইসমাইল মিয়া গৌরনদীর মডেল। তার ধুরিয়াইল গ্রামের কৃষি প্রকল্প দেখার জন্য প্রতিনিয়নত বিভিন্ন এলাকার উৎসুক মানুষ রিতিমতো তার বাড়িতে ভীড় করছেন। তাকে অনুকরন করে ওই এলাকার অনেকেই এখন চাষাবাস শুরু করেছেন। তিনি আরো জানান, ইসমাইল মিয়া গৌরনদীর একজন সফল চাষী।