আগৈলঝাড়ায় রাস্তা নির্মানের কাজ ফেলে শ্রমিক লাপাত্তা

কর্মসূচীর আওতায় রাস্তা নির্মান, স্কুলের মাঠ ভরাটসহ অন্যান্য কাজে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী এলাকাবাসিরা এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পায়নি। প্রতিটি প্রকল্পেই শ্রমিক হিসেবে স্থানীয় সরকার দলীয় কতিপয় প্রভাবশালীদের নাম অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে। ফলে ইতোমধ্যেই অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত না করেই মোটা অংকের টাকা উত্তোলন করে তা ভাগবাটোয়ারা করে নেয়া হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থানের লক্ষে সরকার ২০১০-২০১১ অর্থ বছরে জন্য ৪০ দিনের কর্মসূচী প্রকল্প গ্রহন করেন। সে অনুযায়ী আগৈলঝাড়ার ৫টি ইউনিয়নের জনগুরুতপূর্ণ রাস্তা নির্মান ও স্কুলের মাঠ ভরাটের জন্য ১৫ টি প্রকল্প গ্রহন করা হয়। গত ১০ এপ্রিল থেকে শুরু করে আগামি ১ জুনের মধ্যে প্রতিটি প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।   

সরেজমিনে উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের জনগুরুতপূর্ণ ভালুকশী ১৪ ফুট ব্রীজ সংলগ্ন থেকে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক ঘরামীর বাড়ির এক কিলোমিটারের রাস্তা ঘুরে দেখা গেছে, ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে ওই প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়। প্রকল্প তদারকির কাজে সিপিসি (সভাপতি) করা হয় উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদকে। স্থানীয় বাসিন্দা নুরে আলম জানান, গত ১৬ এপ্রিল ওই রাস্তা নির্মানের কাজ শুরু করা হলেও গত ২১ এপ্রিলের মধ্যে তা বন্ধ হয়ে যায়। ভূক্তভোগী চুন্নু মিয়া বলেন, সরকার অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থানের লক্ষে ৪০ দিনের প্রকল্প গ্রহন করলেও এ প্রকল্পে সরকার দলীয় স্থানীয় প্রভাবশালী কতিপয় ধণার্ঢ্য ব্যক্তির নামও অর্ন্তুভূক্ত করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ৪০ দিনের মধ্যে মাটিকাটা শ্রমিকদের রাস্তা নির্মানের কথা থাকলেও ৬দিন মাটি কেটেই শ্রমিকেরা লাপাত্তা (হাওয়া) হয়ে গেছেন।

স্থানীয় ফুলমালা বেগম জানান, রাস্তার অভাবে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে নৌকা দিয়ে তাদের যাতায়াত করতে হয়। তাদের দুঃখ দুদর্শা লাঘবে আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা খান ৪০ দিনের প্রকল্পের মাধ্যমে জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি নির্মানের জন্য প্রকল্পের অনুমোদন করেন। বর্তমানে শ্রমিকেরা পুরো কাজ ফেলে রেখে লাপাত্তা হওয়ায় জনগুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটি নির্মানের ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পরেছে। ভুক্তভোগী এলাকাবাসিরা জরুরি ভিত্তিতে জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি নির্মানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। একইভাবে উপজেলার বাকাল, বাগধা, রত্মপুর ও গৈলা ইউনিয়েনে ৪০ দিনের প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ অনিশ্চিত হয়ে পরেছে। উল্লেখিত অভিযোগের ব্যাপারে সিপিসি (সভাপতি) ও উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের ব্যবহৃত (০১৭১২-২৮৮১৯৩) মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।   

এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতি, অনিয়ম ও নির্মান কাজ বন্ধ করে শ্রমিকেরা লাপাত্তা হওয়ার বিষয়ে আমার কাছে এখনো কেউ অভিযোগ করেননি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।