জেলা পরিষদের সম্পত্তি নিয়ে তোলপাড়

দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। প্রভাবশালী একটি পক্ষ সরকারী সম্পত্তির ওপরের দোকান ঘর তাদের দাবি করে ২০ হাজার টাকা চাঁদার দাবিতে এক বিয়ের নিকাহ রেজিষ্টার (কাজীর) দোকান বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার (১২ মে) জেলা পরিষদ থেকে সরকারী সার্ভেয়ার সরেজমিনে সম্পত্তি মাপার জন্য স্থানীয় থানা পুলিশের সহযোগীতা চেয়ে লিখিত আবেদন করা সত্বেও পুলিশ কোন প্রকার সহযোগীতা করেনি বলেও অভিযোগ উল্লেখ রয়েছে।

শুক্রবার দুপুরে বরিশালের গৌরনদী প্রেসক্লাবে হাজির হয়ে বিয়ের নিকাহ রেজিষ্টার (কাজী) মোঃ আব্দুর রহমান অভিযোগ করেন, গৌরনদী উপজেলার সীমান্তবর্তী বাবুগঞ্জের আগরপুর বাজারের ৩ নং এস.এ খতিয়ানের ১৪৫ নং দাগের দেড় শতক সম্পত্তির ওপরের দোকান ঘর ক্রয়সূত্রে মালিক হয়ে দীর্ঘদিন থেকে তিনি ও তার শ্যালক ইউসুফ বেপারী ক্ষুদ্র ব্যবসা করে জিবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। অতিসম্প্রতি আব্দুর রহমান জানতে পারেন তার ক্রয়কৃত সম্পত্তিটি জেলা পরিষদের। সরকারী সম্পত্তির কথা শুনে তিনি (রহমান) গত ৩০ জানুয়ারি জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে উক্ত সম্পত্তি এক বছরের জন্য ইজারা (লীজ) চেয়ে আবেদন করেন। এ খবর জানতে পেরে অতিসম্প্রতি স্থানীয় প্রভাবশালী ইউনুস প্যাদা ও মানিক প্যাদা গংরা ওই সম্পত্তি তাদের দাবি করে আব্দুর রহমানের কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় গত ৯ মে প্রতিপক্ষ প্রভাবশালীরা দোকানে থাকা আব্দুর রহমানের শ্যালক ইউসুফ বেপারীকে মারধর করে দোকান ঘর থেকে বের করে দিয়ে তালাবদ্ধ করে দেন। সেই থেকে অদ্যবর্ধি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানটি তালাবদ্ধ রয়েছে।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, জেলা পরিষদের সম্পত্তি ইজারা নেয়ার আবেদনের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার (১২ মে) সকালে জেলা পরিষদের পক্ষে সার্ভেয়ার মোঃ রিয়াজুল ইসলাম সরেজমিনে সরকারী সম্পত্তি মাপার জন্য আসেন। এসময় তিনি বাবুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল খায়েরের সহযোগীতা চেয়ে একটি লিখিত আবেদন করেন। সরকারী সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য আবেদন করেও থানা পুলিশের সহযোগীতা না পেয়ে সার্ভেয়ার রিয়াজুল ইসলাম চলে যেতে বাধ্য হন। সরকারী সম্পত্তি উদ্ধারসহ প্রভাবশালী কর্তৃক ওই সম্পত্তির ওপর দীর্ঘদিন থেকে ব্যবসা পরিচালনাকারী বিয়ের কাজী আব্দুর রহমান ও তার শ্যালক ইউসুফ বেপারীর ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান তালাবদ্ধ করে রাখার ঘটনায় ওই এলাকায় এখন চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে আব্দুর রহমান প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার ও তালাবদ্ধ করার অভিযোগ স্বীকার করে অভিযুক্ত ইউনুস প্যাদা বলেন, পৈত্রিক সূত্রে আমি উল্লেখিত সম্পত্তির মালিক। এ সম্পত্তি জেলা পরিষদের নয়। বাবুগঞ্জ থানার ওসি আবুল খায়ের জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার রিয়াজুল ইসলামের আবেদন প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, বর্তমানে আগরপুর এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই মুহুর্তে সম্পত্তি মাপতে গেলে ওই এলাকায় আইন শৃংখলা অবনতি ঘটতে পারে। সে জন্য পরবর্তীতে ওই সম্পত্তি মাপার জন্য আমি বলেছি।

জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার রিয়াজুল ইসলাম বলেন, উল্লেখিত সম্পত্তির মালিক হচ্ছে জেলা পরিষদ। স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালীরা দীর্ঘদিন থেকে ওই সম্পত্তিসহ পাশ্ববর্তী জেলা পরিষদের প্রায় ৫০ শতক সম্পত্তি জবর দখল করে রেখেছে।