ইহা অসত্য… ইহা অসত্য…

– স্লামালিকুম স্যার। আমার নাম নোমান, অলিউওল্লাহ নোমান। নামে না চিনলেও কাজের পরিচয় দিলে হয়ত চিনতে পারবেন। আমি সাংবাদিক। স্থানীয় একটা দৈনিকের সাংবাদিক।
– ওয়ালাইকুমস্লাম। সাংবাদিক, হুম! তা কি করতে পারি আপনার জন্যে?
– তেমন কিছু না স্যার। বিশেষ সূত্রে একটা ডিস্টার্বিং খবর পেলাম, ভাবলাম আপনাকে ফোন করে এর সত্যতা যাচাই করে নেই।
– আই'এম রিটায়ার্ড এন্ড নট ইন্টারেস্টেড টু টক এনিথিং এবাউট মাই জব।
– জ্বি না স্যার, খবরটা আপনার প্রিভিয়াস যব সংক্রান্ত নয় বরং ঐ সময়ের একটা লেনদেন নিয়ে।
– লেনদেন, হুম, ইন্টারেস্টিং। যা বলার ঝটপট বলে ফেলুন, নষ্ট করার মতে যথেষ্ট সময়ে নেই হাতে।
– তথাস্তু। স্যার আমাদের কাছে তথ্য আছে উচ্চ আদালতের বিচারক থাকাবস্থায় আপনি প্রধানমন্ত্রীর ত্রান তহবিল হতে ১০ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। জনগনের সুবিধার্থে ব্যাপারটা একটু খোলাসা করবেন কি?
– এ ব্যাপারে আমি কিছুই বলব না। আপনারা প্রধানমন্ত্রীর অফিসকেই জিজ্ঞেস করুন। আমি রিটায়ার করেছি। ফর গড সেকস, লিভ মি এলোন।
– আমাদের এখানে একটা রিপোর্ট এসেছে ২০০৯ সালে আপনার কাছে ১০ লাখ ৩৭ হাজার টাকার একটি চেক প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে এসেছিল।
– আপনি প্রধানমন্ত্রীর ওখানেই জিজ্ঞাসা করেন, আমাকে কেন খামোখা অ্যাম্বারাস করছেন।
– অভিযোগ তো মিথ্যাও হতে পারে স্যার, আপনার কাছ থেকে জিজ্ঞাসা করে নিতে চাচ্ছি।
– ওনাদের ওখানেই জিজ্ঞাসা করেন, ডোন্ট অ্যাম্বারাস মি।
– আমরা তো ওনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবো স্যার, যেহেতু আপনার নাম এসেছে, এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য জানতে চাচ্ছিলাম।
– ওনাদের ওখানেই বরং জিজ্ঞাসা করেন, আমি রিটায়ার করে গেছি, প্লিজ ফর গড সেক, লিভ মি এলোন।
– ঠিক আছে স্যার, এরকম কোনো টাকা ২০০৯ সালের জুলাই মাসে আপনি নিয়েছিলেন কিনা?
– আমি ছাড়ি ভাই।

খটাস…..।

টেলিফোন সংলাপটা স্থানীয় একটা দৈনিক হতে নেয়া। আসুন সবাই মিলে আলাপের বিষয়বস্তু অবিশ্বাস করি, কারণ খবরের স্পন্সর দৈনিক আমারদেশ। তারেক জিয়া, খাম্বা মামুন আর মাহমুদুর রহমানের যৌথ প্রযোজনায় প্রকাশিত এ পত্রিকার সবকিছু বিশ্বাস করতে হবে এমন কোন বাধ্য বাধকতা নেই। ক্ষমতা হারিয়ে এই গং এখন অনেক কিছুই বলছে। তবে ট্যাবলয়েডের রসালো খবরের প্রতি সবার একটা অন্যরকম আকর্ষণ থাকে। অনেকটা রসালো পরকীয়ার মত, চাইলেও এড়ানো যায়না। আসুন তথ্যের বাকি অংশটার সাথে পরিচিত হই। মিথ্যা হিসাবে নিলেও অসুবিধা নাই।

দৈনিক আমারদেশ পত্রিকার অনুসন্ধান বলছে, সোনালী ব্যাংক সুপ্রিমকোর্ট শাখায় বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ২০০৯ সালের ২৭ জুলাই অ্যাকাউন্ট পে চেকের ১০ লাখ ৩৭ হাজার ২৫০ টাকা ট্রান্সফারের মাধ্যমে জমা হয়েছে। সেদিনই আবার নগদ উত্তোলন করা হয়েছে ৯ লাখ টাকা। এর পরের দিন অর্থাৎ ২৮ জুলাই নগদ ২০ হাজার টাকা নগদ উঠানো হয়েছে। এবং একই দিন অপর একটি অ্যাকাউন্ট পে চেকের মাধ্যমে ৩৮ হাজার ৬০০ টাকা তার হিসাব থেকে বিয়োগ হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২১ জুন শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে রায় দেন বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক। রায়ে বলা হয়—জিয়া নয়, শেখ মুজিবুর রহমানই স্বাধীনতার ঘোষক। এই রায়ের কয়েক দিন পর একজন তরুণ সংসদ সদস্য ও সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী (সম্ভবত ব্যারিষ্টার তাপস) চেকটি বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের কাছে তার দফতরে পৌঁছে দেন বলে জানা গেছে। চেকটি পাওয়ার পর তিনি নিজের অ্যাকাউন্টে জমা দেয়ার জন্য দিলে সুপ্রিমকোর্টের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের চেকের মাধ্যমে টাকা ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে জমা দিলে ভবিষ্যতে প্রশ্ন উঠতে পারে।

দৈনিক আমারদেশ পত্রিকার অনুসন্ধানী তথ্যাবলী বিশ্বাস না করার জন্যেই পাঠকদের অনুরোধ করব। বিচাপতি খায়রুল ছিলেন বিশ্বমানের বিচারক, আমি মনে না করলেও অন্তত আমাদের এটর্নি জেনারেল কিন্তু তাই মনে করেন। মহামান্য বিচারকদের ইন্টিগ্রেটির প্রতি সন্মান জানিয়ে আসুন বেনিফিট অব ডাউট দেই বিচারপতি খায়রুলকে। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর ত্রান তহবিল হতে মহামান্য বিচারকদের কি সামান্য ১০ লাখ টাকা সাহায্য নেয়ার অধিকার নেই? ধিক দৈনিক আমারদেশকে!

একটা খচখচানি চাইলে কেন জানি দূর করতে পারছিনা। না, এ নিয়ে ভাবতে ভাল লাগছেনা। শুনছি সামনে তারেক জিয়া আর ককো জিয়ার মানি লন্ড্রিং'এর উপর উচ্চ আদালতে একটা শুনানি আছে। আসুন নজরটা ওদিকে ফেরাই।

ওয়াচডগ – আমি বাংলাদেশী

www.Amibangladeshi.Org