খুন, খুনী ও খুনাখুনি…

প্রাইভেট সেক্টরের সাথে পাল্লা দিয়ে প্রতিযোগীতায় অনেকটাই এগিয়ে সরকারী খাত। মাথায় smooth as silk মার্কা কালা কাপড়, চোখে আলকাতরা মার্কা চশমা আর হাতে কালাশনিকভ রাইফেল, ওরা RAB। সরকারী ব্যর্থতার জরায়ুতে জন্ম নেয়া একদল মানুষ মারার কারিগর। ঈশ্বর যখন ঘুমিয়ে পরেন শুরু হয় কলি কালের জেমস বন্ডদের মিশন বাংলাদেশ অভিযান। ওদের হাতে থাকে আবুল হাবুল মারার ফ্রি লাইসেন্স। বাংলাদেশকে দুর্নীতি ও সন্ত্রাস মুক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে তারেক জিয়া আর খাম্বা মামুনদের মত 'সুনাগরিকদের' মগজ হতে জন্ম নিয়েছিল এ তত্ত্ব। ১৩টা চাঁদাবাজি মামলার সন্মানিত আসামী, মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ঠিকাদার, বিডিআর ম্যাসাকার মিশন হতে শান্তিকন্যা ডিগ্রী প্রাপ্তা শেখ হাসিনা শান্তির প্রতি ওয়াদা ঠিক রাখতে বুকে তুলে নিয়েছেন এই খুনে বাহিনী। বাংলাদেশের অলিগলিতে ওরা খুন করছে। লিমন অধ্যায় আর ভৈরবে ৫ সন্তানের জননীকে মাথায় গুলি অধ্যায় উপসংহার টানার আগেই জন্ম নিল নতুন এক অধ্যায়। গতকাল নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় খুন করা হল স্কুল ছাত্র স্বাধীন আহমদ শুভকে। পৃথিবীর অন্যতম নিকৃষ্ট দেশ পাকিস্তানে একই কায়দায় খুন করার অভিযোগে খুনিদের গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তুলে দেয়া হয়েছে আইনের হাতে। গোটা পাকিস্তান জুড়ে চলছে তোলপাড়। পাশাপাশি শ্রেষ্ঠ জাতির দাবিদার এই আমরা নীরবে নিভৃতে হজম করে যাচ্ছি সহস্রাব্দের পৈশাচিকতম এই বর্বরতা।

– amibangladeshi.org

কিশোরকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যায় পাকিস্তানে তোলপাড়

পাকিস্তানে বন্দরনগর করাচিতে সরফরাজ শাহ নামের এক নিরস্ত্র কিশোরকে গুলি করে হত্যাকারী ছয়জন রেঞ্জারস সদস্যকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে (এটিএ) বিচার করা হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউন গতকাল সোমবার এ খবর জানিয়েছে। এদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনী আজ মঙ্গলবার রেঞ্জারসের সিন্ধু অঞ্চলের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইজাজ চৌধুরীকে তাঁর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে।

গত বুধবার করাচির শহীদ বেনজির ভুট্টো পার্কে রেঞ্জারসের ছয় সদস্য সরফরাজ শাহকে (১৭) উরু ও পেটে গুলি করলে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। রেঞ্জারস সদস্যরা দাবি করেন, সরফরাজ শাহ একজন ভয়ংকর অপরাধী। করাচির ক্লিফটনে এক পুলিশ সদস্যের বাড়িতে সে ডাকাতির চেষ্টা করেছিল। পুলিশের একজন সদস্য সরফরাজকে রেঞ্জারসের গাজী ইউনিটের হাতে তুলে দেন। এ সময় সরফরাজ রেঞ্জারস সদস্যদের লক্ষ করে গুলি চালায়। রেঞ্জারসের সদস্যরা পাল্টা গুলি চালালে সে নিহত হয়।
 

আবদুল সালাম সমরু নামের এক ক্যামেরাম্যান রেঞ্জারসের হাতে সরফরাজের নিহত হওয়ার দৃশ্য ধারণ করেন। ভিডিওটি স্থানীয় একটি টেলিভিশনে প্রচার এবং পরে ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়লে পাকিস্তানজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনায় রেঞ্জারসের ছয় সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট সাতজনকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। গত শুক্রবার পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট সরফরাজ শাহকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যার বিষয়ে সুয়োমুটো আদেশ দেন। আদালত রেঞ্জারসের সিন্ধু অঞ্চলের মহাপরিচালক, পুলিশের মহাপরিদর্শক, প্রাদেশিক মুখ্যসচিব, প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। সুপ্রিম কোর্ট রেঞ্জারসের সিন্ধু অঞ্চলের মহাপরিচালক মেজর ইজাজ চৌধুরী ও পুলিশ মহাপরিদর্শক ফায়াজ লাঘারিকে তিন দিনের মধ্যে অপসারণের নির্দেশ দেন।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি কিশোর সরফরাজ শাহকে মারতে মারতে রেঞ্জারসের সদস্যদের হাতে তুলে দেন। এর পরই রেঞ্জারসের ছয় সদস্য তাঁকে ঘিরে ধরেন। তাঁদের মধ্যে একজন সরফরাজকে গুলি করতে উদ্যত হন। তখন সরফরাজ তাদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাইলেও তাঁকে খুব কাছ থেকে উরু ও পেটে গুলি করা হয়। গুলিবিদ্ধ সরফরাজ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে রেঞ্জারস সদস্যদের কাছে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য আকুতি জানায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

সরফরাজের বড় ভাই সাংবাদিক সালিক বাদী হয়ে রেঞ্জারসের সংশ্লিষ্ট সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তিনি দাবি করেছেন, তাঁর ছোট ভাই সরফরাজ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। সময় কাটাতে ওই দিন সে পার্কে গিয়েছিল। তার বিরুদ্ধে কোথাও কোনো মামলা নেই। অথচ তাকে ভয়ংকর সন্ত্রাসী আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

বিভিন্ন টেলিভিশনে ভিডিওটি প্রচারিত হওয়ার পর প্রথমে রেঞ্জারসের অভিযুক্ত দুই সদস্যকে পুলিশে কাছে হস্তান্তর করা হয়। গত শনিবার রাতে অভিযুক্ত অন্য চার সদস্যকেও পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে কর্তৃপক্ষ। সরফরাজ শাহকে পুলিশের যে সদস্য রেঞ্জারসের কাছে তুলে দিয়েছেন, তাঁকেও আটক করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা এসএসপি নিয়াজ খোশো জানিয়েছেন, এ রেঞ্জারসের ছয় সদস্য এবং আটক অন্য ব্যক্তিকে সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে বিচার করা হবে।

অভিযুক্ত ছয় সদস্যকে গতকাল সোমবার সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে উপস্থিত করা হয়। পুলিশ প্রাথমিক অভিযোগপত্রে অভিযুক্ত সদস্যদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনেছে। ঘটনার পর পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিক বলেছেন, ‘এমন ঘটনায় আইনের চরম লঙ্ঘন হয়েছে। ছেলেটি যদি ডাকাতও হয়, তাকে এভাবে মারার কোনো অধিকার কারও নেই।’ মেজর জেনারেল ইজাজ চৌধুরী গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ঘটনাটিকে দুঃখজনক অভিহিত করেছিলেন। তিনি নিহত সরফরাজের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, ভিডিওতে ধারণ করা দৃশ্যই প্রমাণ করে, সরফরাজকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে। পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান জোহরা ইউসুফ অভিযোগ করেন, নিরাপত্তা বাহিনী দেশটিতে নিয়মিতভাবেই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে ক্যামেরাম্যান আবদুল সালাম সমরু অভিযোগ করেছেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

ভিডিওটি দেখার জন্য প্লে ক্লিক করুন (বিনীত অনুরোধ যাদের হার্টে সমস্যা আছে বা দুর্বল চিত্তের তাদের জন্য এ ভিডিওটি নয়)

 


র‌্যাবকে আরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ সংসদীয় কমিটির

(প্রথম আলো থেকে নেয়া) নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় র‌্যাবের মাদকবিরোধী অভিযানকালে গুলিতে স্কুলছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। একই সঙ্গে কমিটি আবাসিক এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহারে র‌্যাবকে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় র‌্যাবের কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করেছেন সংসদ সদস্যরা।
ওই ঘটনায় গতকাল বুধবার ফতুল্লা মডেল থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। র‌্যাবের পক্ষ থেকে দুটি এবং নিহত স্বাধীন আহম্মেদ শুভর মা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।
স্কুলছাত্র শুভ হত্যার বিচারের দাবিতে গতকাল দুপুরে মানববন্ধন করে পাগলা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার রাত পৌনে নয়টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পাগলা এলাকায় র‌্যাব-১০-এর একটি দল মাদকবিরোধী অভিযান চালায়। অভিযানকালে গুলিতে স্কুলছাত্র স্বাধীন আহম্মেদ শুভ নিহত হয়। গুলিবিদ্ধ হয় নিহত শুভর ছোট ভাই সোহাগ (৯) ও সহপাঠী বাদল হোসেন রাকিব (১৪)।
সংসদীয় কমিটির উদ্বেগ: গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন সভাপতি আবদুস সালাম। সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, প্রতিমন্ত্রী শামসুল ইসলাম টুকু, মুজিবুল হক, হাবিবর রহমান ও সানজিদা খানম যোগ দেন। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া হত্যা মামলা, দ্বিতল বাসে আগুন লাগানোর মামলা ও ১০ ট্রাক অস্ত্র আটক মামলার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
সভায় র‌্যাবের সার্বিক কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় র‌্যাবের কার্যক্রম নিয়ে একটি মাল্টিমিডিয়ার প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করা হয়। এতে র‌্যাবের সাফল্য, সমস্যা ও সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়।
সভা শেষে কমিটির সভাপতি আবদুস সালাম সাংবাদিকদের বলেন, ফতুল্লা যুদ্ধক্ষেত্র বা সীমান্ত নয়; আবাসিক এলাকা। তাই গুলি করার সময় আরও সতর্ক থাকতে হবে, তাতে যদি একজন অপরাধী পালিয়েও যায়। কারণ, সাধারণ মানুষের জীবন রক্ষাই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, কমিটি এ ধরনের ঘটনায় র‌্যাবকে আরও সতর্ক হতে বলেছে।
কমিটির সভাপতি সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনো কোনো ক্ষেত্রে র‌্যাবের কার্যকলাপে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। তাতে র‌্যাবের মান ক্ষুণ্ন হচ্ছে। সরকারও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।’ তবে র‌্যাবের সার্বিক কর্মকাণ্ডে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘অনেক সময় ছোট ছোট ঘটনা ঘটে যায়, যার অনেকগুলোই ইচ্ছাকৃত নয়। এর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি আছে, অতিরঞ্জনও আছে।’ তিনি বলেন, র‌্যাব একটি বর্ধিষ্ণু বাহিনী। এর পরিধি যত বাড়বে, সমস্যাও বাড়বে। তাই এসব সমস্যার ব্যাপারে এখন থেকেই সতর্ক হতে হবে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব।
সভাপতি আরও বলেন, সভায় র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন বাহিনীর যেসব সদস্য র‌্যাবে আসেন, তাঁদের অনেকে শারীরিকভাবে সক্ষম নন। অনেকে অসুস্থও থাকেন। কমিটি বলেছে, র‌্যাবের মতো স্পেশাল ফোর্সে প্রত্যেক সদস্যের শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা অপরিহার্য।
আইনশৃঙ্খলা সভায় সমালোচনা: জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সংসদ সদস্যরা বলেন, শুধু গোপন তথ্যদাতার (সোর্স) তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ রকম অভিযান চালিয়ে নিরীহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক এম সামছুর রহমান। বক্তব্য দেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের (সদর ও বন্দর) সাংসদ নাসিম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের (আড়াইহাজার) সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু, পুলিশ সুপার শেখ নাজমুল আলম প্রমুখ।
মামলা: র‌্যাব-১০-এর সার্জেন্ট শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে র‌্যাব সদস্যদের ওপর হামলা ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় ফতুল্লা থানায় দুটি মামলা করেন। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে র‌্যাব-১০-এর একটি দল ফতুল্লার পাগলা বউবাজার এলাকায় সাদা পোশাকে মাদকবিরোধী অভিযান চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা র‌্যাব সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। তারা সার্জেন্ট শফিকুল ইসলাম ও ল্যান্স করপোরাল জাকির হোসেনকে ছুরিকাঘাত করে অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় জাকির হোসেন একটি ফাঁকা গুলি ছোড়েন। সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। সন্ত্রাসীদের গুলিতে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়। অন্য দুই স্কুলছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়। র‌্যাবের অন্য সদস্যরা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। র‌্যাব ঘটনাস্থল থেকে একটি ছোরা ও একটি কিরিচ উদ্ধার করেছে। আটক করা হয় লোকমান ও হূদয় নামের দুজনকে।
নিহত স্বাধীন আহম্মেদ শুভর মা রহিমা বেগম বাদী হয়ে স্থানীয় সন্ত্রাসী মনির হোসেন, সোহেল, আরিফ ও গুলুর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। এজাহারে বলা হয়, মনিরের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে শুভকে হত্যা করেছে। সন্ত্রাসীরা এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী।
মামলার ব্যাপারে ফতুল্লা মডেল থানায় কর্তব্যরত কর্মকর্তা, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সাংবাদিকদের কোনো তথ্য জানাননি।
গ্রেপ্তার হওয়া লোকমান ও হূদয় ফতুল্লা মডেল থানায় সাংবাদিকদের বলেন, তাঁদের র‌্যাব রাস্তা থেকে আটক করেছে। লোকমান দাবি করেন, তিনি ভ্যানচালক। হূদয়ের দাবি, তিনি পাগলার মুসলিম মার্কেটের ব্যবস্থাপক।
স্বজনদের আহাজারি: গতকাল বউবাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নিহত শুভর বাড়িতে শত শত মানুষ ভিড় করেছে। শুভর স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে নিহত শুভর ছোট ভাই সোহাগ ও সহপাঠী বাদলকে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। সন্ধ্যার পর শুভর লাশ বাসায় নিয়ে আসা হয়।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের (ফতুল্লা) আওয়ামী লীগদলীয় সাংসদ সারাহ বেগম কবরী গতকাল দুপুরে পাগলায় নিহত ও আহত ছাত্রদের বাড়িতে যান। তিনি শুভর লাশ দাফন ও আহত ছাত্রদের চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা তাদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেন।
দাফন সম্পন্ন: ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গ থেকে গতকাল রাতে শুভর লাশ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। রাত নয়টায় এশার নামাজ শেষে পাগলার শাহিবাজার জামে মসজিদ ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে শাহিবাজার কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন: স্কুলছাত্র শুভকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে ও এর বিচারের দাবিতে পাগলা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী গতকাল দুপুরে পাগলা এলাকায় মানববন্ধন করে। এ সময় বক্তব্য দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ব্রজেন্দ্রনাথ সরকার, স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. জসিমউদ্দিন, হারুন অর রশিদ প্রমুখ। বক্তারা বলেন, শুভ পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীতে বৃত্তি পেয়েছিল। তার হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে।