গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ায় অবাধে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ নোট এবং গাইড বই

বিক্রেতারা। আবার কোথাও গোপনে নোট বই বিক্রি করা হচ্ছে। প্রশাসন অভিযান চালালে বই বিক্রি বন্ধ কর দেবে বলেও হুমকি দিয়েছে পুস্তক ব্যবসায়ীরা। গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ায় প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণীর নোট ও গাইড বই।
ছাত্র ছাত্রী এমনকি শিক্ষকরাও এসব কিনছেন। দেশের সর্বোচ্চ আদালত নোট ও গাইড বই বিপণন, প্রদর্শন, প্রস্ততকরণ, মুদ্রণ ও প্রকাশনা নিষিদ্ধ করলেও গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ায় সর্বত্র প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সামনেই চড়াদামে বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে। মান্ধাতা আমলের আইন বাস্তবায়নের নামে বই ব্যবসায়ীরা পুলিশি হয়রানির শিকার হলে সব ধরনের পুস্তক বিপণন বন্ধ রাখা হবে বলে ইতিমধ্যে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ার পুস্তক ব্যবসায়ীরা গোপনে বৈঠকও করেছে। এদিকে এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে, বোর্ড প্রকাশিত সপ্তম শ্রেণীর পাঠ্য তালিকায় সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতির সহায়ক অনুপম বই কিনুন সিল মেরে ছাত্রছাত্রীর হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে, ।

এদিকে পুস্তক ব্যবসায়ীরা বলছেন, আদালত ১৯৮০ সালের পুরনো আইনে নোট ও গাইড বই নিষিদ্ধ করলেও এখন যেসব নোট ও গাইড বই বিক্রি হচ্ছে সেগুলো সেই মান্ধাতার আমলের আইনের আওতায় পড়ে না। তাছাড়া বছরের শেষে যখন সব প্রকাশনী সংস্থার বই আমরা মজুদ করেছি তখনই সরকার এ নিষেধাঞ্জা আরোপ করছে। কাজেই আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির কারণেই এ নিষেধাঞ্জা পুরোপুরি মেনে চলা সম্ভব নয়। ৮ম শ্রেণীর ছাত্রের এক অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যে কোন বইয়ের দোকানে মূল বই কিনতে গেলে গাইড বই জোর করে গছিয়ে দেয়া হচ্ছে। কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা নোট বা গাইড বই কেনার ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের নিরুৎসাহিত করি, তবুও অনেকেই এগুলো কিনে থাকে। তবে এব্যাপারে অভিভাবকরা তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া ঠিকমত হয় না। এ কারণেই নোট গাইডের দৌরাÍ্য বেড়েছে। গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ায় প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত নোট ও গাইড বই নিষিদ্ধ হলেও বসে নেই গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ার বই ব্যবসায়ীরা। গোপনে বিক্রি হচ্ছে এসব বই। মুখ চিনে বই বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। আর দাম নিচ্ছেন গলাকাটা। ছেলেমেয়েদের চাহিদা মেটাতে দ্বিগুণ দামে বই সংগ্রহ করতে বাধ্য হচ্ছেন অভিভাবকরা। জানা গেছে, সরকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থাকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এর অংশ হিসেবে মাধ্যমিক স্তরে যুক্ত করা হয়েছে সৃজনশীল পদ্বতি। একই সঙ্গে সরকার প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত সব ধরনের নোট ও গাইড বই প্রকাশনা ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গৌরনদী আগৈলঝাড়ার এক শ্রেণীর লাইব্রেরী মালিকরা ইতিমধ্যে নোট ও গাইড বই মজুদ করেছেন। ওসব ব্যবসায়ীরা গাইড বই তাদের মূল লাইব্রেরিতে না রেখে বিভিন্ন স্থানে তাদের গোডাউনে বই মজুদ করে রেখে সুকৌশলে বিক্রি করছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক লাইব্রেরির মালিক জানান, সবাই নোট বই বিক্রি করছেন। আগে বাধা না থাকায় প্রকাশ্য বিক্রি হত, এখন হচ্ছে গোপনে। মুখ চিনে দাম ঠিক হলে তারা বই এনে ক্রেতাকে দিচ্ছেন। তবে গতবারের চেয়ে এবার বেশিদামে গাইড বই বিক্রি হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে বিক্রেতারা জানান, প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো এবার দাম বেশি ধরেছে। তাই তাদেরও বেশিদামে বেচাকেনা হচ্ছে। এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে গাইড ও নোট বই উদ্ধারে প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করলেও গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ায় কোন অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। গৌরনদী উপজেলা কর্মকর্তা সাঈদ মাহবুব খাঁন জানান, এ বিষয়ে আমার জানা নাই তবে নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে নোট ও গাইড বই বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যস্থা গ্রহন করা হবে।