বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষের ফিল্মী স্টাইলে মাদ্রাসা দখল

আবদুস সবুর শনিবার ফিল্মী স্টাইলে সন্ত্রাসী নিয়ে মাদ্রাসা নিয়ন্ত্রনে নিয়েছে। বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষের সঙ্গে আসা সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের মহড়ায় এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষকরা এখন অসহায় হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সহ অন্যান্যা শিক্ষকরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন।

জানা গেছে, বাংলাদেশের ফাজিল (ডিগ্রী) ও কামিল (মাস্টার্স) মাদরাসাগুলো  ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়। ফয়রা ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবদুস সবুরকে সরকারি গম আত্মসাৎ মামলা, মাদ্রাসার অর্থ আত্মসাৎ, অধ্যক্ষ হিসাবে নিয়োগ নিয়ে জজকোর্টে মামলা, গভর্নিংবডির সিদ্ধান্তকে বারবার অগ্রাহ্য করা সহ বিভিন্ন সুনির্দিষ্ট বহু অভিযোগে ২০০৮ সালের ৮ অক্টোবর সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়। ইবির বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে চুড়ান্ত ব্যবস্থা নিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে এবং এতে গভর্নিং বডির ৪জন এবং বিশ্বদ্যিালয়ের ১ জন প্রতিনিধি থাকবেন। এই মাদ্রাসার গভনির্ং বডি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি চেয়ে ৩ বার চিঠি দেয়ার দেড় বছরের মাথায় তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মাদ্রাসায় পাঠানো হয়। প্রতিনিধি  পাঠানোর ক্ষেত্রে  বহিস্কৃত অধ্যক্ষ আগে থেকে প্রতিনিধিদলের ১ জন সদস্যের সাথে যোগাযোগ করেন। বিধি মোতাবেক ১ জন প্রতিনিধি পাঠানোর নিয়ম থাকা সত্বেও ৩ সদস্যের প্রতিনিধি মাদ্রাসা পরিদর্শনে যায়। তারা বহিস্কৃত অধ্যক্ষকে বহিস্কারের  কারন সংক্রান্ত গভনিং বডির কাছে  কিছু না জানতে চেয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের আয়োজন করা দুপুরের খাবার খেয়ে কুষ্টিয়া চলে যান। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধান মোতাবেক গভনির্ংবডির ৪জন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ১জন প্রতিনিধি মিলে বহিস্কারের বিষয়টি ন্যায় বিচারের স্বার্থে সুষ্ঠ তদন্ত করা প্রয়োজন ছিল। তা না করে বহিস্কৃত অধ্যক্ষের চাহিদা অনুযায়ী কুষ্টিয়া গিয়ে তদন্ত টিম দুই লাইনের একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে তারা সভাপতিকে পরিবর্তনের সুপারিশ করেন। সুপারিশের আলোকে সভাপতিকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এই অব্যাহাতি আদেশের বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টে রিট করলে চিঠির কার্যকরিতা স্থগিত করে আদালত বিশ্বাবদ্যালয়ের ভিসির উপর রুলনিশি জারি করেন।সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ  শিক্ষকদের হুমকি-দুমকি দিয়ে বলতে থাকেন এই তদন্ত রিপোর্ট করাতে তদন্ত দলের ১ জনকে তার মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হয়েছে। এখন তিনি  তার আপন বেয়াই ঝালকাঠী মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে সভাপতি বানিয়ে নিয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দেয়া রুল নিস্পত্তি না হবার আগেই  সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষের ইচ্ছা অনুযায়ি এই চিঠি করাতে সক্ষম হয়। অবশ্য যা ভিসির গোচরে আসায় পন্ড হয়ে যায়।

সেই বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ সবুর শনিবার বেলা ১১টার দিকে অর্ধশত ক্যাডার নিয়ে সন্ত্রাসী স্টাইলে মাদ্রাসায় প্রবেশ করে। তালাবদ্ধ দুটি কক্ষ ভাংচুর করা হয়। তিনি দাম্ভিকতারসুরে বলেন যারা আমার বিরুদ্ধেচারন করেছে এবার তাদের দেখিয়ে দেয়া হবে। ওই সময়ে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুর রাজ্জাক মাদ্রাসায় ছিলেন না। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন নিয়মবহিভুতভাবে সন্ত্রাসী স্টাইলে আবদুস সবুর সন্ত্রাসী নিয়ে মাদ্রাসায় এসেছে। মাদ্রাসার কয়েকটি তালাবদ্ধ কক্ষ ভাংচুর করে তারা উল্লাস করেছে। তিনি বলেন বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়ার আগে বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ মাদ্রাসায় এসে আসন গেড়ে বসতে পারে না। ঘটনাটি নিন্দনীয়।