কাগজে কলমে বরিশালে আউশের আবাদ শতভাগ

আসুক না কেন বরিশাল কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে না। বরং অর্জনের পাল্লা বরাবরই ভারী থাকে। বাস্তবে না হলেও কাগজে কলমে এ অর্জন শতভাগ ছাড়িয়ে যায়। চলতি ২০১১-১২ সালের আউশের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ৩৫ হাজার ২২৫ হেক্টর হলেও অর্জন হয়েছে ৩৭ হাজার ৫৮৭ হেক্টর। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ হাজার ৩৬২ হেক্টর বেশি। কৃষি কর্মকর্তারা এ অর্জনকে বিশাল  সফলতা মনে করলেও কৃষকরা এ অর্জনকে “অফিসিয়াল অর্জন” বলে মনে করেন। যার সাথে বাস্তবতার তেমন মিল নেই। গত ১৪ জুন সৃষ্ট নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার জোয়ারের পানিতে আউশের অনেক বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। যখন পানি নামতে শুরু করে তখন একদিকে বীজতলা তৈরীর সময় শেষ অপরদিকে কৃষক পর্যায়ে দেখা দেয় বীজ ধান সংকট।

বাকেরগঞ্জের আতাকাঠির আউশ চাষী নূর ইসলাম মুন্সি জানান, বীজতলা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি অঙ্কুরোদগমকৃত বেশ কিছু বীজ ধান ক্ষেতে ফেলতেই পারেনি। কারন পানি প্রায় ৮/১০ দিন স্থায়ী হওয়ায় ধানগুলো নষ্ট হয়ে যায়। ফলে গত বছরের চেয়ে এক চতুর্থাংশ জমিতে আউশের আবাদ করতে পেরেছে। এদিকে বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০১১-১২ সালে বরিশালের ১০ উপজেলায় মোট ৩৭ হাজার ৫৮৭ হেক্টর জমিতে আউশের আবাদ হয়েছে। হাইব্রিড রয়েছে ১০ হেক্টর জমিতে, উফশী ১৪ হাজার ৮১৭ হেক্টরে এবং স্থানীয় জাতের আবাদ হয়েছে ২২ হাজার ৭৬০ হেক্টরে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় আবাদ হয়েছে ৫২০০ হেক্টর, বাবুগঞ্জে ৭০০ হেক্টর, উজিরপুরে ৫৫০ হেক্টর, বাকেরগঞ্জে ১৬১৫০ হেক্টর। অনুরুপভাবে গৌরনদীতে আবাদ হয়েছে ৫১২, আগৈলঝাড়ায় ২৭২৫, মুলাদীতে ২০৬০, হিজলায় ৩১৫০, মেহেন্দিগঞ্জে ৬১০০ এবং বানারীপাড়ায় আবাদকৃত জমির পরিমান ৪৪০ হেক্টর। বিপরীতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৩ হাজার ৮৭৪ মেঃ টন চাল। এ ব্যাপারে বরিশাল কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দেবাংশু কুমার সাহা জানান, বিগত দিনের পানিতে আউশের তেমন ক্ষতি হয়নি। তাছাড়া মাঠ পর্যায়ে ২৫৫ জন উপ- সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সার্বক্ষনিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিসারের পাঠানো তথ্য অনুসারে আবাদের ছক সাজানো হয়েছে। কাজেই অর্জনের হিসেবে কোন ভুল নেই।