মাল্টিপারপার্সের নামে প্রতারনার মাধ্যমে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও

লাভের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারনার মাধ্যমে শেয়ার রাখার লোভ দেখিয়ে গ্রামের নারী-পুরুষদের কাছ থেকে কোটি টাকারও অধিক টাকা হাতিয়ে নিয়ে এক প্রতারক বাড়ি-ঘর ছেড়ে আত্মগোপন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অসহায় ভূক্তভোগীরা তাদের টাকা ফেরত পেতে এখন হন্য হয়ে ওই প্রতারককে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। এ ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে বরিশালের গৌরনদী প্রেসক্লাবে হাজির হয়ে প্রতারিতরা জানান, হোমল্যান্ড লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানী লিমিটেডের বরিশালের আগৈলঝাড়া ও উজিরপুর উপজেলার ইনচার্জ, পূর্ব আটিপাড়া রেজিষ্টারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক, ধামুরা বন্দরের বিপ্লব হোমিও হলের স্বত্তাধীকারী দত্তেশ্বর গ্রামের মৃত কুঞ্জ বিহারী সমদ্দারের পুত্র বরুন চন্দ্র সমদ্দার (৩৫)।

দত্তেশ্বর গ্রামের মৃত হর কুমার মন্ডলের পুত্র ব্যবসায়ী বিমল মন্ডল বলেন, বছর খানেক পূর্বে মাল্টিপারপার্স ব্যবসার মাধ্যমে অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে শেয়ার রাখার কথা বলে বরুন আমার কাছ থেকে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছে। এরইমধ্যে বরুন ওই টাকার লভাংশ আমাকে সঠিক ভাবে দিয়ে আসছিলো। একইভাবে ওই গ্রামের মৃত আসেদ আলীর পুত্র ব্যবসায়ী আনোয়ার বেপারীর কাছ থেকে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, মৃত কাজেম আলীর পুত্র মুনসুর বেপারীর কাছ থেকে ৪০ হাজার, করিম সমদ্দারের কাছ থেকে ১ লক্ষ, সোহরাব বেপারীর কাছ থেকে ১ লক্ষ, আনোয়ার খানের কাছ থেকে ৩ লক্ষ ৩৫ হাজার, গিয়াস বেপারীর কাছ থেকে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার, আলাউদ্দিন বেপারীর কাছ থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার, ধামুড়া গ্রামের আবু বক্কর মোল্লার কাছ থেকে ৮০ হাজার, মিলন সিকদারের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৮০ হাজার, শাহজাহান বেপারীর কাছ থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার, প্রবাসীর স্ত্রী বিউটি বেগমের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৪০ হাজার, বাবরখানা গ্রামের নিজাম উদ্দিনের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকাসহ প্রায় শতাধিক ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়।

প্রতারিত আনোয়ার খান জানান, গত ১৫ জুলাই ভোরে প্রতারক বরুন সমদ্দার আত্মগোপন করে। এ খবর জানতে পেরে তারা গত ছয়দিন ধরে বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুজি করেও বরুনের কোন সন্ধান পায়নি। এ ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

আত্মগোপনে থাকা বরুন সমদ্দারের স্ত্রী সাথী সমদ্দারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মাল্টিপারপার্সের ব্যবসার সত্যতা স্বীকার করে কান্নাজড়িত কন্ঠে এ প্রতিনিধির কাছে বলেন, গত ১৫ জুলাই সকালে হোমল্যান্ডের গৌরনদী অফিসে মিটিংয়ের কথা বলে উনি বাড়ি থেকে বাইর হইছে। হেইয়ার পর সকাল ১০ থেইক্কা ওনার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি আরো বলেন, মোর পোলা বাঁধনরে (৫) এতিম কইরা কারা জানি ওনারে (বরুন সমদ্দারকে) অপহরন কইরা নেছে। নাইলে এতোদিনেও উনি ক্যান মোরে এট্টা ফোনও করলো না। ও ভগবান মোর আর বাঁধনের কপালে কি আছে তুমি কইয়া যাও বলেই কান্নায় ভেঙ্গে পরেন সাথী সমদ্দার।