বরিশালের ১৭ টির মধ্যে ১৩ টি কলেজের ফলাফল বিপর্যয়

মধ্যে ১৩টির অবস্থা এবার শোচনীয়। বাকি ৩টি কলেজ ভাল না করলে এর প্রভাব পড়ত পুরো বোর্ডের ফলাফলের উপর বলে মনে করছেন শিক্ষাবীদরা। ১৩ কলেজে এবার জিপিএ ৫ পেয়েছে সব মিলিয়ে মাত্র ২০টি। অপর দিকে সেরা ৩টি কলেজে জিপিএ ৫ এর সংখ্যা ৪৪৪টি। এ বিশাল ব্যবধান নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে লেখা পড়ার মান নিয়ে। যদিও ভাল শিক্ষার্থীরা ঐ তিনটি কলেজেই ভর্তি হয় বলে দাবি করছেন খারাপ ফলাফল করা কলেজের শিক্ষকরা। আর এ জন্য বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের উদাসিনতাকেই দায়ি করছেন তারা। অপর দিকে ভাল করার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে পাঠদানের দাবি করেছেন ভাল কলেজের শিক্ষকরা।

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বরিশাল সদর উপজেলায় ১৭টি কলেজ থেকে ৪ হাজার ১শত ৫৩জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে পাস করে ৩২৪৪জন। পাসের হার ৮০ দশমিক ৫২। এর মধ্যে সেরা তিনটি কলেজ অমৃত লাল দে মহা বিদ্যালয়, সরকারী মহিলা কলেজ এবং সরকারী সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ থেকে এবার পরীক্ষায় অংশ নেয় ২৩৭২জন, পাস করে ২১৩৩ পাসের হার ৮৯.৯২। অর্থাৎ সেরা কলেজ তিনটি বাদ দিলে বাকি ১৩টি কলেজ থেকে এবার পরীক্ষায় অংধ গ্রহনকারীর সংখ্যা ১৭৮১জন। পাস করেছে ১১১১জন। পাসের হার ৬২.৩৮।

শুধু পাসের হারেই ৩টি কলেজর সাথে ব্যবধান নয়, জিপিএ ৫ এর পরিসংখ্যানেও রয়েছে বিস্তর ব্যবধান। অমৃত লাল দে মহা বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছে ২২৩টি, সরকারী মহিলা বিদ্যালয় থেকে ১১৩টি এবয় সরকারী সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ থেকে ১০৮টি। সব মিলিয়ে এবা ৩টি কলেজ থেকে জিপিএ ৫ এর সংখ্যা ৪৪৪টি। অপর দিকে বাকি ১৪টি কলেজ থেকে জিপিএ ৫ এর সংখ্যা মাত্র ২০টি।

পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বিবেচনা করলেও উদ্বিগ্ন হতে হয়। তিনটি কলেজ এবার থেকে পরীক্ষা দিয়েছে ২৩৭২জন। অপর দিকে বাকি ১৩ কলেজ থেকে পরীক্ষার্থীর সংখ্য মাত্র ১৭৮১জন।

বরিশাল সদর উপজেলায় ১৭ টি কলেজের মধ্যে ৩টির সাথে বাকি ১৪টির এ বিস্তর ব্যবধান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ১৩টি কলেজে লোখা পড়ার মান নিয়ে রয়েছে নানা অভিযোগ। আর এ ১৩টির মধ্যে রয়েছে একটি সরকারী কলেজও। বরিশাল সরকারী কলেজে জিপিএ ৫ পেয়েছে মাত্র ৫টি।


এইচ এস সির সদ্য ঘোষিত এ ফলাফলে এধরনের ব্যবধানকে বিপর্যয় বলে মনে করছেন শিক্ষক নেতারা। তবে এ জন্য ভর্তি পদ্ধতিকেও দায়ি করছেন অনেকে। বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির বিভাগীয় সম্পাদক অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুলের মতে এসএসসিতে পাস করা সেরা শিক্ষার্থীরা দলে দলে ভর্তি হয়। উচ্ছিস্ট কম মেধাবী এবং জিপিএ ১ থেকে ৩ এর মধ্যের শিক্ষার্থীরা ছোট কলেজগুলোতে বাধ্য হয়ে ভর্তি হয়। তিনি বলেন শিক্ষা বোর্ডে নিয়ম রয়েছে, ভর্তির কোটা রয়েছে। কিন্তু বড় তিনটি কলেজ এ কোটা মানছে না। আর এ কারনেই এ বিপর্যয়।


তবে এ বক্তব্য খন্ডন করে সেরা কলেজ হিসাবে পরিচিত পাওয়া অমৃত লাল দে কলেজের অধ্যক্ষ তপংকর চক্রবর্তী বলেন, ভাল ফল করার জন্য আমরা বেশি ক্লাশ, টিউটোরিয়াল এবং মডেল টেষ্ট নেই। নিজেদেরও কিছু পদ্ধতি রয়েছে। ভাল পাস করার জন্য এর বিকল্প নেই। কলেজে সন্তান ভর্তি হবার পর অভিভাবকরা একটু গা ছাড়া ভাব দেখান। আমরা অভিভাবকদের নিয়ে সভা করি। আর একটি ব্যাপার এসএসসিতে টিক চিহ্ন দিয়ে ৫০ মার্ক পাওয়া যায়। এ কারনে অনেক পরীক্ষার্থী খুব একটি মেধাবী না হলেও পাস করে যায়। কিন্তু কলেজে কোন টিক চিহ্ন নেই। সব লিখিত। এ ব্যাপারগুলো অনুধাবন করেই আমরা পাঠদান করি।

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক আকবর আলী খান জানান, বেশ কয়েকটি কলেজে ভাল মেধাবী শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয় এটি ঠিক। আমরা বহু চেষ্টা করেও তা বন্ধ করতে পারিনি। তবে অন্য কলেজেও পাস কারমত শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়। তারা ফেল করবে কেন এই প্রশ্ন রাখেন। তিনি অবশ্য স্বিকার করেন বোর্ড থেকে নিয়মিত পরিদর্শন হয় না বলেই অনেক কলেজে লেখা পড়ার মান নিম্নগামী।