বিনা অনুমতিতে একটি গোলঘর নির্মাণ ও ভাঙ্গার ঘটনায় একটি মহল সেনা বাহিনীকে জড়িয়ে মিথ্যা অপবাদ রটিয়েছে। এর নেপথ্য কারণ অনুসন্ধানে গতকাল (সোমবার) আলীকদম জোন কমান্ডার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল বাবু পাড়া এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় স্থানীয় পাড়া কার্বারী, জেএসএস সভাপতি, ভিলেজার হেডম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থল বাবু পাড়া গেলে স্থানীয় থোয়াইম্রা মার্মা জানান, মাতামুহুরী রেঞ্জের আওতাধীন বাবু পাড়া ফরেষ্ট বিট এলাকায় রাস্তার মোড়ে স্থানীয় মংচিনু মার্মার নেতৃত্বে একটি গোল ঘর তৈরী করা হয়েছিল। এ গোল ঘরটি মাতামুহুরী রেঞ্জের বিট অফিসার মোঃ ইসমাইল সম্প্রতি ভেঙ্গে দেন। পরে একটি মহল ওই গোলঘরটি স্থানীয় একটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের অফিস ঘর ছিল মর্মে গুজব সৃষ্টি করে। সেনা বাহিনীর দ্বারা ওই গোল ঘরটি ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে মর্মে কাল্পনিক অভিযোগ তুলে ধুম্রজাল সৃষ্টি করা হয়।
এ বিষয়ে মাতামুহুরী রেঞ্জের বিট কর্মকর্তা মোঃ ইসমাইল জানান, বন বিভাগের জমিতে কোন ধরণের স্থাপনা তৈরী করতে হলে পূর্বানুমতির প্রয়োজন হয়। কিন্তু স্থানীয় মংচিনু মার্মা বিনা অনুমতিতেই অবৈধভাবে সামাজিক বৈঠক ঘরের নামে চলাচল রাস্তা দখল করে একটি গোল ঘর তৈরী করেছিল। এটি সম্প্রতি ভেঙ্গে দেয়ায় ওই মহলটি সেনা বাহিনী ও বন বিভাগের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ রটিয়ে চলেছে।
গতকাল সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান জোন কমা-ার লেঃ কর্ণেল শাহীদ মোস্তফা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান ও লামা বন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ হারুন-উর-রশিদ খান। এ সময় পাড়া কার্বারী, ভিলেজার হেডম্যান ও অর্ধশতাধিক গ্রামবাসীর সাথে তাঁরা কথা বলেন। আলীকদম উপজেলা জেএসএস সভাপতি কাইনথপ মুরুং, পাড়া কার্বারী উথোয়াই মার্মা, উক্যজাই মার্মা, থোয়াইম্রাউ মার্মা ও গোল ঘর নির্মাণকারী মংচিনু মার্মাসহ অর্ধশতাধিক গ্রামবাসী সরকারী কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন। তারা সকলেই কথিত গোল ঘর ভাঙ্গার ঘটনায় সেনা বাহিনী জড়িত নয় মর্মে স্বীকারোক্তি প্রদান করেন।
উপজেলা জেএসএস সভাপতি কাইনথপ মুরুং বলেন, সেনা বাহিনী এখানকার উপজাতী জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে সর্বদা পাশে অবস্থান করেন। কিন্তু সেনা বাহিনী কর্তৃক উপজাতীয় পাড়ার গোল ঘর ভাঙ্গার মিথ্যা অভিযোগ কে বা কারা রটিয়েছে তা তিনি জানেন না মর্মে উপস্থিত সরকারী কর্মকর্তা ও গ্রামবাসীদের জানান। তিনি মিথ্যা অপবাদকারীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবী করেন।
এ সময় জোন কমান্ডার গ্রামাবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সেনা বাহিনীর কাছে কে উপজাতি, কে বাঙ্গালী তা মূখ্য বিষয় নয়। এতদাঞ্চলের নিরাপত্তা বিধান ও এলাকাবাসীর সুষম উন্নয়নে সেনা বাহিনী নিবেদিতপ্রাণ। উপস্থিত উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, এলাকার শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নস্যাৎ করতে এবং নিরাপত্তা বাহিনী ও প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতেই একটি মহল পরিকল্পিত এ অপবাদ রটিয়েছে। তিনি এ বিষয়ে কাউকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।