অবশেষে বরিশাল-ভোলা রুটের ফেরী সার্ভিস চালু

বরিশাল-ভোলা রুটের লাহারহাট-ভেদুরিয়া পয়েন্টের ফেরী সার্ভিস জোড়াতালি দিয়ে চালু করা হয়েছে। ফেরী ঘাটের দু’প্রান্তে আটকা পড়া যানবাহন আগামী দু-তিন দিনেও পারাপার করা সম্ভব হবে না বলে ধারনা করছেন সংশ্লিস্টরা। এ কারনে হুমকির মুখে রয়েছে কোটি কোটি টাকার পণ্য।

এদিকে ফেরী সরবরাহকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কয়েক দফা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও কবে নাগাদ এই ফেরী সার্ভিস পুরোপুরি সচল হবে তার কোন নিশ্চয়তা দিতে পারেনি। অপরদিকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে এক বছরের ওয়ারেন্টি চুক্তি থাকলেও তারা এখন নানাভাবে টালবাহানা করছে বলে অভিযোগ করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রামের ওয়েস্টার্ন মেরিন লিমিটেডের কাছ থেকে ১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকায় ফেরী দুটি কেনা হয়। গত বছর সেপ্টেম্বরে আরিচা ঘাটে ফেরী দুটি সার্ভিস দেয়। আট মাস পর বরিশাল-ভোলা রুটের লাহারহাট-ভেদুরিয়া রুটে ফেরী দুটি নিয়ে আসা হয়। কিন্তু নিয়ে আসার পর থেকেই নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়।

গত ৪ মাসে দুটি ফেরীর মধ্যে অপরাজিতা নামের ফেরীটি ৪ বার এবং দোলনচাপা ফেরীটি ৩ বার বিকল হয়েছে। সর্বশেষ গত ১৮ জুন বিকল হয় অপরাজিতা এবং ২ আগষ্ট প্রোপেলার শ্যাবড নষ্ট হয়ে বিকল হয়ে যায় দোলনচাপা ফেরীটি। বিকল হওয়ার পর থেকেই একাধিকবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন লিমিটেডের সাথে যোগাযোগ করা হলে মেরামতের তেমন কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

টানা ৬ দিন ফেরী চলাচল বন্ধ থাকার পর শনিবার অপরাজিতার শ্যাবড দোলনচাপায় লাগিয়ে সেটি কোন রকমে চালু করা হয়। অপরদিকে টাগ বোট দিয়ে ঠেলে অপরাজিতা ফেরীটি চালানো হচ্ছে।

টানা ৬ দিন ফেরী চলাচল বন্ধ থাকায় লাহারহাট-ভেদুরিয়ার দুই প্রান্তে শত শত পণ্যবাহী পরিবহন আটকা পড়েছে। বিশেষ করে তেল ও চিনিবাহী যানগুলো দিনের পর দিন আটকা পড়ায় একদিকে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে এর মালিকরা, অপরদিকে ঐ সব পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকায়। এছাড়া ঐ সব যানবাহনের ড্রাইভার হেলপাররা দিনের পর দিন ফেরীঘাটে চড়ম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। পাশাপাশি পণ্যের পাহাড়া দিতেও পড়তে হচ্ছে বিপাকে। শনিবার থেকে টাগ বোট দিয়ে ঠেলে ফেরী সার্ভিস চালু করা হলেও এরট্রিপের সংখ্যা কম থাকায় খুব বেশি পরিবহন পারাপার হতে পারেনি।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিসি’র সহকারী উপ-মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) গোপাল চন্দ্র মজুমদার জানান, স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন ৭/৮ রাউন্ড ট্রিপ দেয়া সম্ভব হতো। কিন্তু বর্তমানে মাত্র ২/৩টি ট্রিপের বেশী দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ কারনে উভয় পাড়ে অসংখ্য যানবাহন আটকা পড়ে আছে।

বরিশাল বিআইডব্লি¬উটিসির নির্বাহী প্রকৌশলী কমল মিত্র জানান, ফেরী সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন লিমিটেডের লোকজন গতকাল রবিবারও ফেরী দুটি পরিদর্শন করেছে। তারা জানিয়েছে, মেরামতের জন্য যন্ত্রাংশ প্রয়োজন সেগুলো সুইডেনের ভলবো পেন্টা কোম্পানীর। এ জন্য সময়ের প্রয়োজন।

তিনি জানান, টাকা দিয়ে ফেরী কিনলেও এখন বিকল হওয়ার পর তাদের কাছে বারবার হাত জোড় করতে হচ্ছে। এই বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ থাকলেও তাতে জন দূর্ভোগ কমছে না। কবে নাগাদ ফেরী দুটি পুরোপুরি চালু হবে তার কোন নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না তিনি।