সহসাই আসছে না যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নতুন কমিটি

আন্দোলন সৃষ্টিকারী যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জেলা কমিটির সম-মর্যাদার হলেও কার্যক্রমের দিক থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির পরেই এর অবস্থান।

 

কমিটির সৃষ্টিলগ্ন থেকেই বাংলাদেশ সরকারের অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির এই কমিটি সর্বদাই সোচ্চার থাকে। বেগম খালেদা জিয়াকে ষড়যন্ত্রমুলক মামালায় মঈন-ফকর সরকার জেলে পাঠালে দেশের মাটিতে বিএনপির আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পরে। দুর্দিনের ঐ সময়ে আব্দুল লতিফ সম্রাটের নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি অগ্রণী ভূমিকা রাখায় বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশীরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে সক্ষম হন।

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির যে সকল নেতাকর্মী ১/১১ পরবর্তী সময়ে আন্দোলন বিক্ষোভে সরাসরি জড়িত ছিলেন তারা আজও বিএনপি কর্মকাণ্ডে সক্রিয় রয়েছেন। দলীয় কোন্দলে কিছু নেতা বাইরে থাকলেও নিজ নিজ অবস্থান থেকে তারা জিয়া পরিবার বাঁচাতে আন্দোলন চালিয়ে গেছেন। জিল্লুর রহমান জিল্লু নেতৃত্বাধীন আই-বিএনপি, আক্তার হোসেন বাদল নেতৃত্বাধীন তারেক মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ, যুক্তরাষ্ট্র যুবদল, যুক্তরাষ্ট্র জাসাস ইত্যাদি ইত্যাদি।

১/১১ পরবর্তীতে বাংলাদেশের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতি আস্থা রেখে ২০০৭ সনের মার্চের প্রথম সপ্তাহে পৃথিবীব্যাপী বিএনপির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বেগম খালেদা জিয়া আব্দুল লতিফ সম্রাট কে কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে নিয়োগ দেন। সেই থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সভাপতি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বা বহির্বিশ্ব বিএনপির দায়িত্ব পালন করে আসছেন আব্দুল লতিফ সম্রাট। এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিউইয়র্ক সিটিতে লোভনীয় দুটি চাকরী থেকে পরপর ছাটাই হন তিনি। তারপরেও হাল ছেড়ে দেননি। জিয়া পরিবার রক্ষায় বিএনপির জন্য সর্বস্ব ত্যাগে প্রস্তুত ছিলেন বা এখনও আছেন।

সম্প্রতি বেগম খালেদা জিয়ার যুক্তরাষ্ট্র সফর কালে হঠাৎ করেই আব্দুল লতিফ সম্রাটের নেতৃত্বকে বাদ দিয়ে একটি গন-বিচ্ছিন্ন সংবর্ধনা কমিটি করে দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি শমশের মবিন চৌধুরী। স্থানীয় ত্যাগী কোন নেতা এই কমিটি মেনে না নিলে বেগম জিয়া তথা হাই কমান্ডের হস্তক্ষেপে কোন সভাপতি ছাড়াই অনুষ্ঠিত হয় সেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। বিপুল লোকের সমাগম ঘটেছিল সেদিন।

এর পরেই শুরু হয় নতুন মেরু করন। গত ২২ জুলাই বহির্বিশ্ব বিএনপি কতৃক আয়োজিত পৃথিবীব্যাপী দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচীর প্রাক্কালে গুজব ওঠে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি কমিটি ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে কিন্তু আজ পর্যন্ত এর কোন প্রমান পাওয়া যায়নি। লিখিত কোন আদেশ নেতৃবৃন্দের কাছে পৌছাইনি। এমনকি জাতীয় কোন মিডিয়া এই ব্যাপারে সংবাদ পরিবেশন করতে পারেনি। কেন্দ্রে যোগাযোগ করা হলে কোন নেতা সঠিকভাবে বলতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি কমিটি নিয়ে কি হচ্ছে? তবে যতটুকু জানা গেছে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা চীপ হুইপ জয়নুল আবেদিন ফারুক ও বিএনপি আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম দেশে ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র কমিটি নিয়ে কেন্দ্র কোন সিদ্ধান্ত নিবেন না। আর তাই কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বর্তমান কমিটিকে একমাত্র বৈধ কমিটি বলে দাবী করছেন সম্রাট সমর্থকরা।

এদিকে অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গেছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কার্যক্রমকে চাঙ্গা করার লক্ষ্যে নিষ্ক্রিয় কর্মীদের বাদ দিয়ে নতুনভাবে কমিটি ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছেন আব্দুল লতিফ সম্রাট। অন্যদিকে বিরোধী জোট যার পর নাই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন নতুন কমিটি নিয়া আসার। কিন্তু বর্তমান সভাপতি আব্দুল লতিফ সম্রাট ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন দলীয় প্রধানের সাক্ষর করা নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তিনি তাঁর কার্যক্রম বৈধ এই কমিটির মাধ্যমেই চালিয়ে যাবেন মৌখিক কোণ আদেশ তিনি মানবেন না। তবে নির্বাচন কমিশনের বিধি অনুযায়ী আরপিও সমস্যার কারনে দলীয় প্রধান হয়তবা কখনোই লিখিত আদেশ পাঠাতে পারবেন না যুক্তরাষ্ট্রে তাই স্বভাবতই থেকে যাবে সম্রাটের বৈধ কমিটি। আর তাই সহসাই মিটছেনা যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি কমিটি নিয়ে সৃষ্ট ধূম্রজাল।