“পরের বাড়িতে এ্যাহন আর কাজ করোন লাগবো না”

“পরের বাড়িতে কাজ কইরা এ্যাহন আর সোংসার চালাইতে হইবো না। মরার আগে কিছুডা হইলেও এ্যাহোন সুখ পাওয়া যাইবো” আবেগআপ্লুত হয়ে গতকাল বুধবার সকালে কথাগুলো বলছিলেন বরিশালের গৌরনদী উপজেলার পিঙ্গলাকাঠী গ্রামের মৃত মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন সরদারের অসহায় স্ত্রী সামচুন নাহার (৫৭)।

সূত্রমতে, ত্রিশ বছর পূর্বে সামচুন নাহারের স্বামী মুক্তিযোদ্ধা দিনমজুর জয়নাল আবেদীন সরদার মৃতবরন করেন। সে সময় সামচুন নাহার অন্তঃস্বত্তা ছিলেন। কিছুদিন পর তার একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহন করে। দিনমজুর স্বামীর মৃতুর পর সামচুন নাহার অসহায় হয়ে পরেন। একমাত্র কন্যা সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সামচুন নাহার অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন। সামচুন নাহার জানান, তার মৃত স্বামীর মুক্তিযোদ্ধার সম্মানি ভাতার জন্য তিনি দীর্ঘদিন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোন সুফল পাননি। অবশেষে সম্প্রতি তিনি বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুসের স্মরনাপন্ন হন। তিনি (সংসদ সদস্য) স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগীতায় সঠিক তদন্তের মাধ্যমে যাচাই বাছাই করে মৃত জয়নাল আবেদীন সরদারসহ বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বিভিন্ন কারনে বাদপরা গৌরনদীর ৬৮ জন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার তালিকা গঠন করে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ে প্রেরন করেন। সেমতে মন্ত্রনালয় থেকে ৬৮ জন প্রকৃত নতুন মুক্তিযোদ্ধার সম্মানি ভাতার বই প্রেরন করা হয়। গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাঈদ মাহবুব খান ও উপজেলা সমাজ কল্যান অফিসার তাসফিয়া তাসরিন গতকাল বুধবার সকালে ইউএনও’র কার্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে সম্মানি ভাতার বই বিতরন করেন।
এ সময় সম্মানি ভাতার বই হাতে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে উল্লেখিত কথাগুলো বলেন, উপজেলার পিঙ্গলাকাঠী গ্রামের মৃত মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন সরদারের অসহায় স্ত্রী সামচুন নাহার।