সেন্টু ভাইয়ের খুনীদের অনতিবিলম্বে ফাঁসি চাই

দাবিতে শনিবার সকালে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সীমান্তবর্তী মুলাদীর রামাপোল শহীদ সেন্টু স্মৃতি সংঘের উদ্যোগে সকাল দশটায় অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মোঃ রাজিব হোসেন ভূঁইয়া রাজু। ওই সভায় একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহসম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য মোস্তাক আহম্মেদ সেন্টুর খুনীদের ফাঁসির দাবি করা হয়।

সভাপতির বক্তব্যে রাজিব হোসেন ভূঁইয়া রাজু বলেন, “সেন্টু ভাই ছিলেন আমাদের গৌরব ও অহংকার। তিনি ছিলেন এতদাঞ্চলের মাটি ও মানুষের নেতা। দলমত নির্বিশেষে এলাকার সর্বস্তরের জনগনের হৃদয়ে ছিলো তারস্থান। তিনি ছিলেন মিষ্টিভাষি ও সদালপি। খুব অল্পসময়ই তিনি মানুষকে ভালবেসে আপন করে নিতেন। তার অনুপস্থিতি আজ মুলাদীকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। আজ তিনি আমাদের মাঝে নেই, রয়ে গেছে তার সকল স্মৃতি। আমরা শহীদ সেন্টু ভাইয়ের খুনীদের অনতিবিলম্বে ফাঁসি চাই”। শহীদ মোস্তাক আহম্মেদ সেন্টুর স্মৃতিচারন করতে গিয়ে বক্তারা অনেকেই কেঁদে ফেলেন।

সূত্রমতে, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ও মুলাদী উপজেলার রামপোল গ্রামের মরহুম আফসার উদ্দিন হাওলাদার ও মনোয়ারা বেগমের পুত্র মোস্তাক আহম্মেদ সেন্টু। তার স্ত্রী আইরিন সুলতানা বেবী মার্কেন্টাইল ব্যাংকের কর্মকর্তা। একমাত্র কন্যা আফসানা আহম্মেদ হৃদি উইলস্ লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের পঞ্চম শ্রেনীতে অধ্যায়নরত।

পারিবারিক ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ছাত্র জীবন থেকেই মোস্তাক আহম্মেদ সেন্টু আওয়ামীলীগের রাজনিতীর সাথে জড়িত ছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে কখনোই তিনি নিজের কথা ভাবেননি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশপ্রেম, মাটি ও মানুষের সাথে গভীর মমতার ছাঁপছিলো তার মাঝে। তাই তিনি সব সময় চিন্তা করতেন দেশের উন্নয়নকে নিয়ে।

গৌরনদী উপজেলার গেরাকুল গ্রামের নির্যাতিত আওয়ামীলীগ কর্মী গোলাম হেলাল মিয়াসহ একাধিক আওয়ামীলীগ কর্মীদের দেয়া তথ্যে জানা গেছে, ২০০১ সনের নির্বাচনে বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনের বিএনপি প্রার্থী জয়লাভ করেন। তৎকালীন সময় এখানকার বিএনপি দলীয় ক্যাডাররা নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার অপরাধে আওয়ামীলীগ সমর্থক নেতা-কর্মীদের ওপর এমনকি তাদের বাড়ি-ঘরে অর্তকিত ভাবে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট করে। বিএনপি ক্যাডারদের নির্মম নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে এতদাঞ্চলের হাজার-হাজার আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মী ও সমর্থক বাড়ি ঘরে ছেড়ে পালিয়ে যায়। সে সময় আওয়ামীলীগ সমর্থকদের পালানোর একমাত্র নিরাপদ রুট ছিলো গৌরনদী উপজেলার সীমান্তবর্তী রামারপোল দিয়ে লঞ্চযোগে রাজধানী ঢাকায় যাওয়ার। ওইসময় মোস্তাক আহম্মেদ সেন্টু প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রামারপোল এলাকায় তার লোকজন নিয়ে বসে থেকে বরিশাল-১ আসন থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামীলীগ সমর্থকদের নগদ অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছিলেন।

২০০৪ সনের ২১ আগস্ট আওয়ামীলীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলায় মোস্তাক আহম্মেদ সেন্টু মাত্র ৩৬ বছর বয়সে শহীদ হন।