পদত্যাগ করে জনগণকে মুক্তি দিন- মির্জা ফখরুল

পদত্যাগ নয়, প্রধানমন্ত্রী আপনিও পুরো মন্ত্রিসভা নিয়ে পদত্যাগ করে জনগণকে মুক্তি দিন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শনিবার দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘বেহাল মহাসড়ক ও দুর্ঘটনায় প্রাণহানিতে সরকারের নির্লিপ্ততার  প্রতিবাদে’ ঢাকা মহানগর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে এ আহ্বান জানান।

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকার সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নীরব প্রমুখ।

ফখরুল বলেন, এখন মহাজোটের জ্যেষ্ঠ নেতা ও সংসদ সদস্যরা সরকারকে বলেছেন, আর বিএনপি-জামাত সরকারের দোষ দিয়ে ভাঙা রেকর্ড বাজাবেন না। সরকারের ব্যর্থতার কারণেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও রাস্তা-ঘাটের বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
আড়াই বছরের ব্যর্থতা ঢাকতে সরকার বিএনপি-জামাত জোট সরকারকে দায়ী করে পার পেতে চাইছে।

দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে ভারতের সঙ্গে কোনো চুক্তি করা হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলে আবারও সরকারকে হুঁশিয়ার করেন তিনি। গঙ্গা ও তিস্তা নদীর ন্যায্য পানির প্রবাহ নিশ্চিত এবং টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণ বন্ধ করার দাবি জানান তিনি। ভারতকে ট্রানজিট দিলে বাংলাদেশের কী লাভ হবে, তাও জানতে চান তিনি।

অন্যদিকে বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ ন্যাপের সাবেক সভাপতি শফিকুল গনি স্বপনের ২য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ন্যাপ আয়োজিত ‘স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব : দেশপ্রেমিক শক্তির বৃহত্তর ঐক্য’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে ফখরুল বলেন, দেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্যে প্রয়োজনে আবারও একটি সংগ্রাম একটি যুদ্ধ করবো।

বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন, জেএসডি সভাপতি আসম আবদুর রব, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, এনডিপির চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা, এনডিপি চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নীলু, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের নির্বাহী সভাপতি এ এইচ এম কামরুজ্জামান, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির মহাসচিব আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ। ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূইয়া প্রমুখ।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পরে আমরা সবচেয়ে কঠিন সময় অতিবাহিত করছি। সরকার দেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব বিপন্ন করে ফেলেছে। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে। শতকরা ৯৫ ভাগ মানুষের ধর্মীয় চেতনায় আঘাত দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার জনমতের কোনো তোয়াক্কাই করে না। তারা দেশকে অন্ধকার সুরঙ্গের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। গোটা জাতি একটা অনিশ্চয়তা ও সংঘাতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যা এদেশের মানুষ চায় না।

তিনি বলেন, এই সরকারের বিরুদ্ধে মহাজোটের শরীক এমনকি সরকার দলীয় সংসদ সদস্য তারানা হালিমও বলেছেন, বিএনপি জামাতের আর দোহাই দিয়েন না। মানুষের কাছ থেকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন তা বাস্তবায়ন করুন। সরকারি দলের সংসদ সদস্যের এই বক্তব্যের পর তাদের আর ক্ষমতায় থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই।

মির্জা ফখরুল বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমরা স্বাগত জানাই। একই সঙ্গে জনগণ জানতে চায় সেখানে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ কতটুকু রক্ষা হবে। জনগণ জানতে চায় তিস্তা নদীর পানি পাবে কিনা। টিপাইমুখ বাদ নির্মাণ বন্ধ হবে কিনা। সীমান্তে হত্যা বন্ধ হবে কিনা। ট্রানজিট নাকি করিডোর দেয়া হবে। আর নতজানু পররাষ্ট্রনীতি নয়।

আসম আবদুর রব বলেন, আল্লাহর নাম মুখে আনা যাবে, শয়তানের নাম মুখে আনা যাবে কিন্তু বিচার বিভাগের নাম মুখে আনা যাবে না। মগের মুল্লুক নামে একটা কথা আছে। কিন্তু এই মুল্লুক কোন মুল্লুক তা জানা নেই। এদেশের স্বাধীনতা ৭ কোটি মানুষের কৃতিত্ব। কোনো ব্যাক্তির কারণে দেশ স্বাধীন হয়নি।

জাতীয় সংকটে জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্য
গৌরনদী-আগৈলঝাড়া জাতীয়তাবাদী ঐক্য পরিষদ শনিবার বিকালে ধানমন্ডির স্টার হোটেলে ‘জাতীয় সংকটে জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্য’ শীর্ষক আলোচনা সভা, দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে। সংগঠনের সভাপত্বি মিজানুর রহমান খান মুকুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, প্রধান পৃষ্ঠপোষক মোঃ লোকমান হোসেন খান। অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন, উপদেষ্টা রেজাউল করিম আকন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোল্লা বশির আহমেদ পান্না, সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম কাজল, সহ-সভাপতি শরীফ জহির সাজ্জাদ হান্নান, মোল্লা আনোয়ার জাহিদ আলো, সরোয়ার হোসেন চৌকিদার, সাংগঠনিক সম্পাদক এড: রিন্টু প্রমুখ।

পিন্টু মুক্তি পরিষদ
আজ বিকেল ৪ টায় লালবাগ রোডস্থ মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টার মাঠে পিন্টু মুক্তি পরিষদের উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিশেষ অতিথি থাকবেন বিএনপির অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম এবং স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক জনাব রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। সভাপতিত্ব করবেন পিন্টু মুক্তি পরিষদের আহবায়ক সাঈদ হোসেন সোহেল।