বিশেষ মহলকে টেন্ডার পাইয়ে দিতে তোড়জোড়

বিভাগের মাতামুহুরী রেঞ্জের বাঁশ মহাল নিলাম নিতে এবারও মহল বিশেষের দৌড়ঝাপ শুরু হয়েছে। নিলাম প্রক্রিয়ার অবান্তর শর্ত জুড়ে দিয়ে সরকারের অর্ধ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চকরিয়ার একটি চিহ্নিত সমিতির ব্যবসায়ীদের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আঁতাত করে নিলাম প্রক্রিয়ায় নানা কঠিন শর্ত জুড়ে দিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।
জানা গেছে, সম্প্রতি লামা বন বিভাগের মাতামুহুরী রেঞ্জের বাঁশ মহাল বিক্রয়ের দরপত্র আহবান করা হয়েছে। কিন্তু দরপত্রে এমন সব শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে যাতে করে চকরিয়া একটি সমিতির কতিপয় ব্যবসায়ী ছাড়া অন্য কেউ এতে অংশ নিতে না পারে। ফলে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীগণ নাম মাত্র মূল্য দিয়ে নিলামে বাঁশ মহাল ক্রয় করতে সক্ষম হবে। ৭টি বাঁশ মহালের ১২ হাজার ৫৭ হেক্টর এরিয়ার বাঁশ বিক্রয়ের দরপত্র আহবান করা হলেও পুরো বছরে কমপক্ষে ২৫ হাজার হেক্টর এরিয়া থেকে বাঁশ পাচার করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, গত ১ আগস্ট চলতি অর্থ বছরের মাতামুহুরী রেঞ্জের ৭ টি বাঁশ মহাল নিলামে বিক্রয়ের দরপত্র আহবান করা হয়। ২৩ আগস্ট দরপত্র বিক্রয়ের শেষ দিন। ৭টি মহালে মুলি, মিতিঙ্গা, ডলু, ছোটাইয়া, টেংরা মুলি, বাজালি এবং বারিয়ালা জাতের প্রায় ২৪ লক্ষ বাঁশ বিক্রয়যোগ্য বলে দরপত্রে উল্লেখ করা হয়।
ব্যবসায়ীগণ অভিযোগকরে জানিয়েছেন, ২৪ লক্ষ বাঁশের দরপত্র আহবান করা হলেও মুলত ৫০ লক্ষাধিক বাঁশ বিক্রয়যোগ্য রয়েছে। চলতি বছর চকরিয়ার বাঁশ সিন্ডিকেট ব্যবসয়ীরা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে পাচার করবেন। দরপত্রে বাঁশের যথাযথ পরিসংখ্যান উল্লেখ করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সরজমিন পরিদর্শন না করে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সাথে আঁতাত করেই বাঁশের এ হিসাব তৈরি করেছেন। তারা আরো জানান, দরপত্রে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক বাঁশ ব্যবসায়ীদের বাঁশ ব্যবসার অভিজ্ঞতার স্থলে মহাল ক্রয়ের পূর্ব অভিজ্ঞতাকে বাধ্যতামুলক করা হয়েছে। এতে করে সাধারণ বাঁশ ব্যবসায়ীগণ দরপত্র ক্রয় করতে পারবে না। নামমাত্র মূল্য দিয়ে নির্ধারিত দু’তিনজন ব্যবসায়ী বাাঁশ মহাল ক্রয়ের সুযোগ বনবিভাগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। বাঁশ মহালে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীগণ ২০ লক্ষাধিক বাঁশ বনবিভাগের সাথে আঁতাত করে কর্তন পূর্বক পাচারের অপেক্ষায় রেখেছে।
আলীকদম বাঁশ বেত ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিঃ এর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ জানান, সিডিউল ক্রয়ের পূর্বেই অপ্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে বাধ্য করা হচ্ছে। একই অভিযোগ করেছেন আলীকদমের ঠিকাদার ও বাঁশ ব্যবসায়ী আব্দুস শুক্কর, সাহাব উদ্দিন ও আবু বকর।
স্থানীয় ঠিকাদার ও ব্যবসায়ীরা জানান, দরপত্র দাখিল করাকালিন সময়ে চাহিত কাগজপত্র দরপত্রের সাথে দাখিল করা স্বাভাবিক নিয়ম। সাধারণ ব্যবসায়ীগণ যাতে দরপত্রে অংশ গ্রহণ করতে না পারে এ জন্যই সিডিউল ক্রয়ের সময়ে কাগজপত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে মাতামুহুরী রেঞ্জ কর্মকর্তা কুশ কুমার বৈদ্য সাংবাদিকদের জানান, ধারনা করেই বাঁশের পরিসংখ্যান নির্ধারণ করা হয়েছে। বিখ্যাত কোন পাগলেও বাঁশের সঠিক পরিসংখ্যান নির্ণয় করতে পারবে না। তাছাড়া ব্যবসায়ীররা কিছু বাঁশ কর্তন করে রাখতে পারে বলে তিনি স্বীকার করেন।