বরিশালে মাসুম জুয়েলার্সে ডাকাতি রহস্য উদঘাটিত হয়নি এখনো

মামুনুর রশীদ নোমানী, বরিশালঃ নগরীর সাগরদি এলাকায় জুয়েলারিতে ডাকাতির ঘটনার মূলহোতা মাহতাবকে পুলিশের হাত থেকে ছাড়িয়ে দোকান মালিক মাছুম নতুন রহস্যের জন্ম দিলেন। মানুষের বন্ধক রাখা স্বর্ণ আত্মসাত করার জন্যই ডাকাতির নাটক সাজিয়েছে মাছুম। ডাকাতির অভিযোগে হাচান ফার্ম্মেসির মিলন, মামুন ও শান্তকে এএসআই মহিউদ্দীনকে ২০ হাজার টাকা উৎকোচ দিয়ে জুয়েলারির মালিক মাছুম নিজেই গ্রেফতার করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার দিনে দুপুরে সাগরদি এলাকায় বাজার সংলগ্ন মাছুম জুয়েলারিতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই সময় ডাকাতরা দোকানের ভিতরে প্রবেশ করে ৫৭ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। এ ঘটনায় জড়িত’র অভিযোগে ঘটনাস্থল থেকেই এক প্রভাবশালী নেতার শালা মাহতাবকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। কিন্তু ওই সময় আটককৃত মাহতাবকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের আগেই ছাড়িয়ে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন মাছুম। জুয়েলারি ডাকাতির ঘটনা ও মালামাল নিয়ে যাবার কথা তখন ভুলে গিয়ে পুলিশের খাঁচা থেকে বের করার পায়তারা চালাতে থাকেন। অতপর পুলিশের কাছ থেকে মাহতাবকে ছাড়িয়ে আনকে সফল হন তিনি। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে জুয়েলারি মালিক মাছুম নিজেই মাহতাবকে দিয়ে দোকানের স্বর্ণ সরিয়ে ডাকাতির নাটক সাজিয়েছেন। আর এ বিষয় আটকের সময় যদি মাহতাব পুলিশের কাছে বলে দেয়। সে জন্যই মাহতাবকে ছাড়াতে দৌড়-ঝাপ শুরু করেছিল মাছুম।

স্থানীয় একটি সূত্রে জানা যায়, মাছুম জুয়েলারিতে ডাকাতির ঘটনার প্রায় তিন মাস আগ থেকেই মাহতাবকে জুয়েলারির মালিক মাছুম তার দোকানের পিছনের একটি কক্ষে থাকতে দিয়েছিলেন। ওই কক্ষে বসেই মাহতাবের সাথে মাছুম বিভিন্ন মাদকসেবন করত। আর মাদক সেবনের বিষয়টি স্থানীয় আশেপাশের ব্যবসায়ীরা জানতে পাড়ায় মাহতাবকে দিয়ে ডাকাতির নাটক সাজিয়েছে মাছুম। তারপর থেকেই একে একে ব্যবসায়ীদের ডাকাতি মামলায় জড়ানোর মিশন শুরু হয়ে যায় তার। এরই প্রতিফলন দিতে হয়েছে ওই একই এলাকার দীর্ঘদিন ওষুধ বিক্রি করে আসা হাচান ফার্ম্মেসির মিলনকে। প্রতিশোধের জের ধরে গত সোমবার এএসআই মহিউদ্দিনকে ১০ হাজার টাকা উৎকোচ দিয়ে মিলন, শান্ত ও মামুনকে ডাকাতির সন্দেহে গ্রেফতার করিয়াছে মাছুম। অপরদিকে ডাকাতির ঘটনার প্রথম থেকেই সন্দেহের তীর চান্দুর মার্কেট এলাকার সত্তার মিয়ার তেলের পাশের রাস্তার অপর পাশে চায়ের দোকানদার আনিচের ছেলে সোহাগকে দায়ি করে আসছিল এলাকাবাসী। কিন্তু সোহাগকেও বাঁচাতেও সবসময়ই প্রধান ভূমিকা পালন করে আসছে মাছুম। ফলে এলাকাবাসী মনে করেন মাহতাব ও সোহাগকে দিয়েই ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়ে ডাকাতি হওয়া সকল স্বর্ণালংকার সরিয়ে নিয়েছে মালিক মাছুম নিজেই।

এদিকে অপর একটি সূত্রে জানা যায়, মানুষের বন্ধ রাখা মাছুম জুয়েলারিতে স্বর্ণালংকারগুলো আত্মসাত করার জন্য এমনি একটি ডাকাতির সাজানো নাটক তৈরি করেছে মাছুম। তাই ডাকাতির মূল হোতা ও এর রহস্যে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যক্তিবর্গরা।