বিনোদন রিপোর্টঃ বুধবার ৮২ তে পা দিলেন কিংবদন্তী সঙ্গীত শিল্পী লতা মঙ্গেশকর। দীর্ঘ সাত দশক ধরে তাঁর কন্ঠের জাদু মন্ত্রমুগ্ধতা ছড়িয়ে রেখেছে সমগ্র সঙ্গীত জগতে। ৮২ বছরেও পা দিয়েও সুরের ছন্দে মুখর লতা মঙ্গেশকরের সৃজনশীল কন্ঠ।
মাত্র ১৩ বছর বয়সে ১৯৪৩ সালে লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গীত জীবনের জয়যাত্রা শুরু হয়। মারাঠি সিনেমা গজাভাউ-তে প্রথম গান করেন। ভারতের নাইটিঙ্গেল লতা মঙ্গেশকর এতদিনে ৩৬ টি ভাষায় প্রায় এক হাজারেরও বেশি সিনেমায় গান করেছেন। ধ্রুপদি থেকে রোমান্টিক, গজল, ভজন-গানের প্রতিটি ধারায় তাঁর স্বচ্ছন্দ বিচরন-সুরেলা আবেশ আচ্ছন্ন করে রেখেছে আপামর সঙ্গীত পিপাসুদের।
গানের জগতে অনেকদিন আগেই নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছেন লতা মঙ্গেশকর। তাঁর দীর্ঘ ধারাবাহিকতা, শিল্পের প্রতি নিষ্ঠার কারণে লতা মঙ্গেশকর শুধুমাত্র উঠতি শিল্পীদের কাছেই নয়, প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের কাছেও অনুপ্রেরণা। বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী সোনু নিগমের গলায় ঝরে পড়েছে এরকমই অকৃত্রিম শ্রদ্ধা। সোনু বলেছেন, আমাদের সৌভাগ্য যে আমরা লতাজীর সময়ে জন্মেছি। তিনি আমাদের কাছে সঙ্গীতের দেবী এবং তিনি শুধু আমাদের প্রজন্মের কাছেই নয়, আগামী প্রজন্মেরও অনুপ্রেরণা।
৮২ বছরেও অক্লান্ত এই সঙ্গীত সম্রাজ্ঞী। সঙ্গীত পিপাসু লতা মঙ্গেশকর চলতি বছরেও বলিউডের সিনেমার জন্য গান গেয়েছেন। সতরঙ্গী প্যারাশ্যুট ছবির জন্য তিনি গেয়েছেন তেরে হাসনে সে।
সঙ্গীত শিল্পী শ্রেয়া ঘোষাল বলেছেন, লতাজি আমার শিক্ষক, আমার অনুপ্রেরণা আর লতাজির জন্যই তো আমি গানকে এত ভালোবেসেছি। তাঁকে জগতের সমস্ত খুশি তাঁর জন্মদিনে উপহার দিতে ইচ্ছা হয় আমার।
শানের কথায়, লতাজি সম্পর্কে যতই বলা হোক ততই কম মনে হয়, তাঁর গলায় যে দৈব স্বত্বা রয়েছে তার জন্যই তাঁর কন্ঠ এত অপূর্ব ও অসাধারন। যেরকমই গান হোক না কেন তিনি যেন প্রাণ দান করেন। খুব সূক্ষ্মভাবে তিনি গানের মূল আবেগের বহিপ্রকাশ ঘটাতে পারেন, লতাজি অনেকের মধ্যে অনন্য।
অভিনেত্রী দিয়া মির্জা বলেছেন, আমি মনে করি লতাজি যে অভিনেত্রীর জন্য গান করেন সেটা ওই অভিনেত্রীর কাছে আশীর্বাদ স্বরুপ। কারণ আমরা সবাই জানি কি অসাধারণ প্রতিভা লতাজির রয়েছে। আমরা আশা করব যে, লতাজি আরও অনেকদিন সুস্থ থাকবেন এবং সবদিনই গান গাইবেন।
১৯৭৪ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত বিশ্বে সর্বাধিক গান রেকর্ড করার জন্য গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম ওঠে তাঁর। শুধু সঙ্গীত শিল্পীদের কাছেই নয় বলিউডের অভিনেতা-অভিনেত্রী ও সিনেমা নির্মাতাদের কাছেও ভারতরত্ন লতার কন্ঠের আবেদন আকাশচূম্বী। দশকের পর দশক তাঁর সুরেই যে প্রাণ পেয়েছে হিন্দি গান।
লতাজি ভারতে জন্মগ্রহন করেছেন বলে গর্বিত চলচ্চিত্র নির্মাতা যশ চোপড়া। দীর্ঘ ৬৯ বছর ধরে যেভাবে লতাজি অক্লান্তভাবে গান গেয়ে চলেছেন তা সারা বিশ্বেই নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। যশ বলেছেন, আমার প্রথম সিনেমা ধুল কা ফুল থেকে সাম্প্রতিক বীরজারা সিনেমা পর্যন্ত দীর্ঘ পাঁচ দশক লতাজির সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। তার দীর্ঘ্যায়ু কামনা করছি।