অন্ধকারে মাছ ধরে ঘরে ফেরে বনমালী গাঙ্গুলির হল সুপার!

বিশেষ প্রতিনিধিঃ মাছ খায় বিড়ালে, দোষ হয় ছেলে মেয়ের। এই কথার ন্যায় বিএম কলেজ ছাত্রী নিবাস বনমালী গাঙ্গুলির হল সুপার নজরুল ইসলাম ভর্তি বানিজ্য করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ টাকা। বিষয়টি ক্ষমতাসীন দল সমর্থীত ছাত্র সংসদ নেতারা অবগত হলেও  তারাও রাজনৈতিক স্বার্থগত কারনে উচ্চবাচ্চ করতে পারছেনা। অথচ ভর্তি বানিজ্য নিয়ে বদনাম ছাত্র সংসদের ঘারে চাপছে,মিডিয়ার লেখালেখিও হচ্ছে। দূর্বলতার এই সুযোগে হল সুপার কৌশলে মিডিয়ার কাছে  ছাত্র নেতাদের বিপক্ষে মন্তব্য রাখায় ভর্তি বানিজ্যে নিয়ে সময় সাপেক্ষে উক্ষাপিত অভিযোগ প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে গত এক ভর্তি বানিজ্যে নিয়ে অভিযোগ প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে গত এক মাসে সবার অলক্ষে অর্থের বিনিময়ে অন্তত ১শ শিক্ষার্থিকে হলে সিট নিশ্চিত করেছে হল সুপার। এর দরুন বনমালী ছাত্রী নিবাসে ধারন ক্ষমতার অতিরিক্ত শিক্ষার্থীকে সেখানে গাদাগাদি করে থাকতে হবে।

সূত্রগুলো জানায়, মাষ্টার্সের শেষ বর্ষের ছাত্রীরা বিদায় নেয় ডিসেম্বরে। অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্রীরা হল ছারে জুলাইতে। যার দরুন বছরে জুলাই ও ডিসেম্বর মাসে ২দফা ছাত্রী নিবাসে ছিট বন্টন করা হয়ে থাকে। পূর্বের নিয়মে বছরে একবার সিট বন্টন করা হত। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ বি এম কলেজ শাখার নেতৃবৃন্দ বছর জুড়ে পছন্দের ছাত্রীদের হলে ঠাই দিতে সুপারিশ রাখায় সকল নিয়ম কানুন ভেস্তে গেছে। অভিযোগ রয়েছে, সেই সুযোগটি লুফে নিয়েছে হল সুপার নজরুল ইসলাম। তিনিও এখন ইচ্ছামত ছিট বন্টন করায় প্রত্যশিত শিক্ষার্থীরা ছাত্রনেতা-নেত্রীদের ধারে কাছে ঘিরছেনা। জানাগেছে সদ্য সমাপ্ত অনার্স শেষ বর্ষের পরিক্ষার চলমান থাকা অবস্থায় বনমালীতে ন’তন করে ভর্তি বানিজ্যের সূচনা করেন স্বয়ং হল সুপার। চুপিসারে তিনি অন্তত ৮০ জন শিক্ষার্থীকে হলে সিট নিশ্চিত করতে মাথা পিছু ৩৩শ টাকা করে নিয়েছেন। যেখানে নিয়ম রয়েছে ১টি সিটের জন্য ১৮শ টাকা জমা নেয়া। ভর্তি বানিজ্যের এই পর্বের বিষয়টি ছাত্র সংসদ নেতাদের কাছে ছিল অজানা। হলে অবস্থানরত ৩ নেত্রীর কাছে বিষয়টি প্রথমে ধরা পরে। প্রতিরাতে হল সুপার বনমালীতে তার নিজ কক্ষে অবস্থান করে ভর্তির ফাইল নারা চারা করায় বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়। কারন নিয়মনুসারে সন্ধা থেকে ৯টা পর্যন্ত বনমালীতে হল সুপারের অবস্থান করার কথা। এ দিকে অনার্স শেষ বর্ষের পরীক্ষার পরপরি ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে ভর্তির সুপারিশ আসায় হল সুপারের সাথে ছাত্রনেতাদের শিতল লড়ই শুরু হয়।

হল সংম্লিষ্ট শিক্ষক জানান, বাকসুর ছাত্র সংসদের ভিপি ও জিএসের পক্ষে শতাধিক সিটের জন্য সুপারিশ আসলে হল সুপার বেকে বসেন। এ অবস্থায় হলে অবস্থানরত কর্ম পরিষদের ৩নেত্রীকে ম্যনেজের চেষ্টা করেন। এক পর্যায় ৩ নেত্রীকে ৫টি করে সিট এবং বিএম কলেজ ছাত্রলীগের ৩য্গ্নু আহবায়ক সহ ভিপি ও জিএসকে অর্ধশত সিট দেয়ার প্রস্তাব করেন। সিট বন্টন নিয়ে এরূপ টানপোড়নে সিট বানিজ্যের বিষয়টি ফাস হয়ে যায়। মিডিয়ার অনুসন্ধানে সিট বানিজ্যের অভিযোগ নিশ্চেত হলে হল সুপার নিজের দায়ভার এড়াতে কৌশলে ছাত্র সংসদ নেতাদের সিট নিয়ে দৌড়ঝাপেততর বিষয়টি তুলে ধরে তার উপর চাপ প্রয়োগের কথা জানান। অপর একটি সূত্র জানায়, ১টি দৈনিক পত্রিকায় ছাত্র নেতাদের বিপক্ষে হল সুপার মন্তব্য রাখায় বেকায়দায় পড়েন। ছাত্রনেতারা কিছুটা ক্ষুব্দ হয়ে উঠলে মিডিয়ার কাছে তার মন্তব্য করার কথা অস্বিকার করে সাংবাদিকদের মনগড়া উক্তি বলে দাবী করে পরিস্থিতি শামাল দেয়ার চেষ্টা করছে। বিএম কলেজ মৃত্তিকা বিভাগের নজরূল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে বহুমুখি অনিয়মের অভিযোগ থাকলেও মূলত ছাত্র নেতাদের দূর্বলতার কারনে তা নিয়ে কেউ বিদ্্েরহ না করায় এখন একচেটিয়া প্রাধান্য বিস্তার করে নিজের স্বর্গ রাজ্য করে গড়ে তুলেছেন। বিশেষকরে হলে অবস্থানরত ছাত্র সংসদের ৩নেত্রীর মধ্যে বিভাজন থাকায় তার অনিয়ম জানা সত্ত্বেও কেউ মুখ খুলতে চায়না হলে কর্তৃত্ব বিস্তারে সুপারের সহায়তা কামনায় । কথা রয়েছে হল  সুপার নিজেই নেত্রীদের মধ্যে দ্বন্ধ জিয়ে রেখে একটি পক্ষকে সহায়তা দেন। এমনকি হলে রাইছ কুকার ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তার স্বজন প্রীতির কারনে একটি পক্ষ পাচ্ছে সুবিধা। অন্যপক্ষকে শাস্তির আওতায় আনছে। গত মাসে ২নং ভবনের ১টি রুম থেকে ৪ ছাত্রীকে রাইছ কুকার সহ হাতে-নাতে ধরে পরে ক্ষমা করে দেন। এ ক্ষেত্রে তার দাবী ছাত্রনেতাদের সুপারিশের কারনে তিনি পদক্ষেপ নিতে পারেননি। তবে হলের সাধারন শিক্ষার্থীরা হল সুপারের কর্মকান্ডে নাখস বলে জানাগেছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ হল সুপার যখন তখন কোনরূপ সর্তক বর্তা না দিয়েই শিক্ষার্থীদের রুমে প্রবেশ করেন। তার আচরন শিক্ষক সুলভ নয়।

সম্প্রতি ডাইনিং এর খাবারের মূল্য নিয়ে জটিলতা নিরসনে বিদ্রোহী ছাত্রীদের সমন্বয়ে এক বৈঠকে হল সুপারের বিরুদ্ধে কথা বলায় জনৈক এক শিক্ষার্থীকে পায়ের জুতা খুলে মারতে উদ্দ্যক্ত হন। এ সময় হলের ৩ নেত্রী ছিলেন নিশ্চুপ! যে কারনে শিক্ষাথীরাও এখন নিরূপায়। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভিরে হলে এখন গাদিগাদি করে থাকতে হচ্ছে ছাত্রীদের। শিক্ষার্থীরা জানায়, হলের ৩টি ভবনে ১১শ শিক্ষার্থীর ধারন ক্ষমতা থাকলেও সেখানে এখন অর্ধগুন ছাত্রীর ভীড়। একদিকে ছাত্র নেতারা অন্যদিকে হল সুপার দুজনের সুপারিশে বনমালীতে আশ্রয় পাচ্ছে নতন মুখ। এখন অনার্স পরীক্ষা শেষে নতুন করে সিট বরাদ্দের আহবানে ৩ শতাধিক আবেদন জমা পরায় ছাত্র নেতাদের সুপারিশ রক্ষায় হল সুপার বেকে বসেছে। কারণ সিট নেই। কবে পূরন হল তারও জবাব নেই!