অরক্ষিত রাতের সদর হাসপাতাল

শাহীন হাসান, বরিশাল ॥ বরিশাল নগরীতে রাতের সদর হাসপাতাল দেড় বছর যাবত অরক্ষিত ও অনিরাপদ অবস্থায়। নার্স ও রোগী থাকে আতংকে। প্রতিষ্ঠানটিতে কোন নৈশ প্রহরী নেই। এ জন্য রাতের হাসপাতাল ক্যাম্পাস পরিণত হয় মাদকাসক্ত এবং ভাসমান পতিতাদের নিরাপদ আশ্রয়ে। নির্দিষ্ট সময় পর ডাক্তার এবং নার্সরা ভবনের মেইন দরজা বন্ধ করে দেয়। সরেজমিনে আরো জানা যায়, ভবনের মূল দরজাগুলোও নরবড়ে হওয়াতে দরজা বন্ধ করার পরেও অরক্ষিত থাকতে হয় তাদেরকে। রাতে নার্সরা নিরাপত্তাহীনতার জন্য ভবনের ওয়ার্ডগুলো থেকে এক জায়গায় এসে থাকে। নার্সদের মতে রাতে যেহেতু হাসপাতালের মূল গেট খোলা থাকে, কোন গার্ড নেই এবং ভবনগুলোর দরজাও নড়বড়ে তাই যেকোন মুহূর্তে হামলা বা অনাকাক্সিক্ষতভাবে কেউ ঢুকে পড়তে পারে। কারণ এখানে বিভিন্ন ধরনের হামলা মামলার রোগীও থাকে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটিতে বিভিন্ন ধরনের সম্পদও থাকে অরক্ষিত। কোন প্রকার চুরি বা খোয়া গেলে কাউকে দায়ী করার সুযোগ থাকে না। বিদ্যুতের দ্বৈত লাইন না থাকায় লোডশেডিংয়ের সময় আরো ভূতুরে ও ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয় নাইট গার্ড না থাকায়। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায, প্রায়ই সদর হাসপাতালে ছোট-খাটো চুরি লেগে থাকে। ঠিকাদাররা কাজ শেষ করার আগেই বাল্ব, পানির কল, পাইপ, স্টীলের রেলিং, সীমানা দেয়ালের ইট চুরি হয়ে যায়। নিয়মিত একটি চোরাই সিন্ডিকেটের রাতের বেলায় বেশ আনাগোনা থাকে প্রতিষ্ঠানটিতে। কোয়ার্টারের একাধিক বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, আমরা পানির কলে তালা দিয়েও রাখতে পারি না। এছাড়া অন্যান্য চুরিতো লেগেই আছে। মেহেন্দিগঞ্জের রোগী মনোয়ারা (৩৫) বলেন, সন্ধ্যার পরে বাইরে গেলে বিভিন্ন লোকজনের সন্দেহজনক ঘোরাফেরা দেখা যায়। এছাড়া মাঠে বসে নেশাও করে থাকে। সদর হাসপাতালের বিভিন্ন ভবনের আশেপাশে গাছের গোড়ায় এবং ফাঁকফোকরে ফেন্সির বোতল সহ অন্যান্য নেশাপানের তরতাজা আলামত দেখা যায়। এর প্রধান কারণ হলো রাতে প্রতিষ্ঠানটিতে কোন গার্ড না থাকা। সদর হাসপাতালের আরএমও বলেন, এখানে গার্ডদের কোন পোস্ট নেই। এটি শেবাচিমের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান। অনেক অনুরোধের পরে কেবল দু’জন গার্ড দিয়েছে বিকেলে এবং রাতে। তাও আবার কবে নিয়ে যায় বলা যায় না। পরিচালক ডা. আব্দুর রশিদ বলেন, শেবাচিমে এমনিতে গার্ড সংকট রয়েছে, এখন উদ্ভূত সমস্যা দূর করতে দু’জন গার্ড দেয়া হয়েছে এবং স্থায়ীভাবে ওখানে যাতে গার্ড দেয়া হয় শীঘ্রই তার ব্যবস্থা করা হবে।