উজিরপুরে মাদ্রাসা ছাত্রী ধর্ষিত

বরিশাল প্রতিনিধি ॥ বরিশালের উজিরপুর উপজেলার মজম গ্রামের জাফর হাওলাদারের কন্যা বাহেরঘাট মাদ্রাসার জেডিসি পরীক্ষাথীকে একই এলাকার রাব্বি এবং দুই সহযোগী পাষন্ড মিলে উপর্যুপুরি ধর্ষন করে। গত শনিবার সন্ধার পরে এ ঘটনায় ধর্ষিতার ভাই নবীন হাওলাদার উজিরপুর থানায় মামলা করলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি। এদিকে ধর্ষিত মাদ্রাসা ছাত্রী বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধিন রয়েছে। ধর্ষকরা তাকে ধর্ষনের ছবি মোবাইল ফোনে ভিডিও করে তা লোকসমাজে প্রচার করার ভয় দেখিয়ে তাকে আবারো ধর্ষনের চেষ্টা করেছিল। ছাত্রীটি বখাটেদের কু-প্রস্তাব এবং তাকে জোরকরে ধর্ষন করার লজ্জা সইতে না পেরে বিষপানে আতœহত্যার চেষ্টাও করে। তার আকুতি ধর্ষনকারীদের গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি না দিলে সে আবার আতœহত্যার পথ বেছে নিবে।

জানাযায় গত ১৯ নভেন্বর শনিবার সন্ধার পরে উজিরপুরের মজম গ্রামের জাফর হাওলাদারের কন্যা বাহেরঘাট মাদ্রাসার জেডিসি পরীক্ষার্থীকে একই গ্রামের রাব্বি মূখ চেপে ধরে পাশের বাগানে নিয়ে ধর্ষন করে। এসময় রাব্বির দুই সহযোগী উজ্জল ও কুদ্দুস তাদের মোবাইলে ধর্ষনের ভিডিও চিত্র ধারণ করে এবং তারাও ধর্ষনের চেষ্টা চালায়। কিন্ত ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ছাত্রী তাদের হাত থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়। এরপরে ধর্ষকরা তার ভিডিও চিত্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকী দেয়। ধর্ষিত ছাত্রী তাকে ধর্ষন করা এবং নগ্ন ভিডিও ধারনের দৃশ্যর লজ্জা থেকে বাঁচতে ঘরে এসে বিষপানে আতœহত্যার চেষ্টা করে। গুরুত্বর অসুস্থ অবস্থায় তাকে প্রথমে উজিরপুর থানা স্বাস্থ্য কপে¬ক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে দ্রুত বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সে এখন বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছে। ঘটনার পরের দিন ধর্ষিতার ভাই নবীন হাওলাদার বাদী হয়ে উজিরপুর থানায় ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগে তিনজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করলে এসআই লুৎফর রহমান বর্তমানে মামলাটির তদন্ত করছে।

এদিকে মাদ্রাসা ছাত্রী জেডিসি পরীক্ষার্থীকে ধর্ষনের ভিডিও চিত্র পুলিশ এখনও উদ্ধার করতে পারেনি। পুলিশ ধর্ষক রাব্বি এবং তার দুই সহযোগী উজ্জল ও কুদ্দুসকেও গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি। স্থানীয়রা জানান ধর্ষক রাব্বি ২ বছর আগে এলাকার এক খ্রীষ্টান মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে গেল তার বিরুদ্ধে মামলা হলেও অদৃশ্য কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়নি।্ তার বিরুদ্ধে এলাকায় নানা অপকর্মের অভিযোগে থানায় একাধিক মামলা হলেও প্রশাসন রহস্যজনক কারণে তাকে গ্রেফতার করছেনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী আরো জানায়, ধর্ষক রাব্বির আপন চাচা সাইদুর রহমান এলাকার একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী তার ছত্রছায়ায় রাব্বি এসমস্ত অপকর্ম করে পারপেয়ে যায়। তার চাচার বিরুদ্ধে উজিরপুর থানাসহ আদালতে ১০-১৫ টি মামলা রয়েছে।

আপরদিকে ছাত্রী ধর্ষনের মামলার ব্যাপারে উজিরপুর থানার ওসি সুকুমার রায় জানান, আসামী ধরার জন্য পুলিশ সাদা পোষাকে অভিযান পরিচালনা করছে। আমাদের প্রাথমিক তদন্তে এটা ধর্ষন বলে প্রতিয়মান হয়েছে। আমরা খুব শীঘ্রই আসামীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো। এদিকে মামলার তদন্তকারী এসআই লুৎফর রহমানের তৎপরতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এদিকে নির্যাতনের শিকার চিকিৎসাধিন ওই ছাত্রী জানিয়েছে তাকে জোর করে মুখ চেপে ধরে রাব্বি ধর্ষন করার সময় ভিডিও করা চিত্রটি উদ্ধার করতে পারলেই ধর্ষকের আসল রুপ বেরিয়ে পড়বে। ওই ভিডিও চিত্র পুজি করে পাষন্ডরা তাকে পুনঃরায় ধর্ষনের হুমকী দেয়ায় সে বিষপান করে আতœহত্যা করতে চেয়েছিল। তার জেডিসির বাকী পরীক্ষা দুটি দেয়া হয়নি। সে অভিযোগ করে বলে আসামীরা ঘটনাটি ধামা চাপা দেয়ার জন্য এলাকায় অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং টাকার বিনিময় মিমাংশার প্রস্তাব দিচ্ছে। মামলার বাদী ছাত্রীর ভাই নবীন হাওলাদার জানান, আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা করার পরেও তারা দাপটের সাথে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং আমাদের নানা ভাবে হুমকী দিয়ে ভয় ভীতি প্রদর্শন করছে। তিনি থানা পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেন।