বরিশালে অপহরন মামলা বিবাদীর বিরুদ্ধে ৩ কোটি টাকার ক্ষতিপূরনের মামলা

উম্মে রুমান, বরিশাল ॥ বরিশালে অপহরণ মামলায় আদালত থেকে খালাস পেয়ে কথিত অপহৃত আরিফুর রহমান সোহাগের বাবার বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরন দাবি করে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন নগরীর ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর একেএম মুরতজা আবেদীন। আজ রবিবার বরিশাল প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে দায়ের করা মামলায় সোহাগের বাবা সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা শাহ মো. এনামুল হককে একমাত্র বিবাদী করা হয়েছে। আদালতের বিচারক আলমগীর কবীর মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদীকে সমন জারীর নির্দেশ দেন।

মামলার আর্জিতে বলা হয়, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ২০০৩ সালের প্রথম নির্বাচনে শাহ মো. এনামুল হকের ছেলে সোহাগ প্রতিদ্বন্দ্বি কাউন্সিলর প্রার্থীদের পক্ষ নিয়ে তার (বাদী) বিরোধীতা করেন। তখন মুরতজা জেলা জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। ভোটে মুরতজা আবেদীন নির্বাচিত হন। পরে স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সহযোগিতায় সোহাগ তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য উঠে পড়ে লাগে। এর নেপথ্যে ছিল যুবদল কর্মী রাহাদ হত্যা মামলা। সোহাগ ছিল রাহাদ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী।

২০০১ সালে রাহাদ খুন হওয়ার পর থেকেই মামলার সকল আসামী যুব ও ছাত্রলীগ নেতারা আত্মগোপন করে। কিন্তু বিএনপির ছত্রছায়ায় সোহাগ ছিল প্রকাশ্যে। তাই রাজনৈতিকভাবে শায়েস্তা করতেই সোহাগকে আত্মগোপনে পাঠিয়ে মরতুজার বিরুদ্ধে ২০০৩ সালের ২ জুন কোতোয়ালী থানায় মিথ্যা অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়। ঐ রাতেই থানা পুলিশ তাকে কাউনিয়ার নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করে।

প্রায় তিন মাস কারাভোগের পর উচ্চ আদালতের আদেশে জামিনে মুক্ত হন তিনি। পরে মামলাটি প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারের জন্য পাঠানো হয়। অভিযোগপত্রভূক্ত ১৩ সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনই সাক্ষ্য প্রদান করেন। আসামী ও বাদী পক্ষের দীর্ঘ শুনানী শেষে ২০১০ সালের ২৯ অক্টোবর কথিত ঐ অপহরন মামলার রায় ঘোষনা করা হয়। রায়ে অপহরণের বিষয়টি প্রমানিত না হওয়ায় সকল আসামীকে বেকসুর খালাশের আদেশ দেন বিচারক।

আর্জিতে আরো বলা হয়, ‘বিবাদীর দায়েরকৃত মিথ্যা মোকদ্দমার কারণে মুরতজা মানসিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। যা বিবাদী আইনত পরিশোধ করতে বাধ্য বটে’। তাই চারটি খাতে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩ কোটি পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়।

চলতি বছরের ১৫ অক্টোবর বাদি নিজেই বিবাদীর কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানালে তিনি বিষয়টি আমলে নেননি। তাই তিনি ক্ষতিপূরণ পেতে আদালতের দ্বারস্থ হন।