আহমেদ জালাল, বিশেষ প্রতিনিধিঃ ভোলার মেঘনা নদী সংলগ্ন ভাষান চরে র্যাবের সাথে বন্দুক যুদ্ধে জলদস্যু বাহিনীর প্রধান বাবুল হাওলাদার নিহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দেশী বিদেশী বিপুল পরিমানে আগ্নেয়াস্ত্র।
জানা গেছে, মঙ্গলবার ভোর ৪ টায় বরিশাল র্যাব ৮ সিপিসি-১ এর দু’টি দল মেঘনা নদীতে অভিযান চালায়। র্যাব সদস্যরা জানতে পারে জলদস্যু বাবুল হাওলাদার তার সহযোগীদের নিয়ে ভাসানচরে অবস্থান করছে। র্যাব সদস্যরা ভাসানচরে বাবুলকে আটক করতে অভিযান চালায়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে বাবুল বাহিনী র্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। র্যাব সদস্যরা আতœরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। প্রায় সোয়া এক ঘন্টা বন্দুক যুদ্ধের পর বিপরীত দিক থেকে কোন গুলির শব্দ না পেয়ে জলদস্যুদের অবস্থানের দিকে র্যাব সদস্যরা এগিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক জলদস্যুকে পরে থাকতে দেখতে পায়। পরে স্থানীয়রা লাশটি জলদস্যু বহিনীর প্রধান বাবুলের বলে সনাক্ত করেন।
বিষয়টি তাৎক্ষনিকভাবে স্থানীয় থানা পুলিশ, পলিশ সুপার ও ভোলা জেলা প্রশাসককে অবহিত করে র্যাব-৮। থানা পুলিশ ঘটনা স্থল থেকে বিক্ষিপ্ত অবস্থায় ১টি বিদেশি এসবিবিএল, এয়ারগান, গুলি ভর্তি ম্যাগাজিনসহ ১টি ২২ পিস্তল, ২টি বিদেশী এলজি, ১২ রাউন্ড বন্দুকের তাজা কার্তুজ, ১৭ রাউন্ড বন্দুকের ফায়ারকৃত গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় জনসাধারনের উপস্থিতিতে ঘটনাস্থলে থানা পুলিশ বন্দুক যুদ্ধে নিহত বাবুলের সুরতহাল সম্পন্ন করে।
সাম্প্রতিক সময়ে ভোলা জেলার চরফ্যাশন, তজুমুদ্দিন, লালমোহন ও মনপুরা উপজেলা বিধৌত মেঘনা নদীতে জলদস্যুদের কর্মকান্ড প্রকট আকার ধারন করে। বিশেষ করে মেঘনা নদী সংলগ্ন সোনারচর, চরনিজাম, চরকালকিনি, চরপাতিলা, ভাসানচর, চর সুলক্ষি এলাকাগুলি জলদস্যুদের অভয়ারন্যে পরিনত হয়েছে। বর্তমানে জলদস্যু বাবুল বাহিনী, কালাম বাহিনী, শামসুদ্দিন বাহিনী মেঘনার বিভিন্ন চর অঞ্চলের জলদস্যুতা নিয়ন্ত্রন করে আসছিল। প্রতিনিয়ত জেলে অপহরনের মাধ্যমে মুক্তিপন আদায় এবং মুক্তিপনের টাকা না পেলে জেলেদের হত্যা করে নদীতে ভাসিয়ে দেবার ঘটনা অহরহ ঘটছে। জলদস্যুদের নৃশংসতার মাত্রা সীমাহীন পর্যায়ে যাবার কারনে প্রায়ই জেলেদের সাথে জলদস্যুদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গত ১৩ ডিসেম্বর চরফ্যাশনের চরশাহজালালে থানা পুলিশ বাবুল বাহিনীর একটি গোপন আস্তানায় অভিযান চালায়। অভিযানে উভয় পক্ষের মধ্যে ৩০ মিনিট গুলিবিনিময়ের ঘটনায় ডাকাতির কাজে ব্যবহ্নত বেশ কিছু অস্ত্র উদ্ধার হয়। ওই সময় ৫ পুলিশ সদস্য আহত হলেও বাবুল বাহিনীর সদস্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে গত ১৪ ডিসেম্বর ভোলার দক্ষিন উপকূলের ভাসানচর সংলগ্ন মেঘনায় আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে জলদস্যুদের গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১০ জলদস্যু ঘটনাস্থলে নিহত হয় এবং বিপুল পরিমান আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়। এধরনের দু’টি চাঞ্চল্যকর ঘটনার প্রেক্ষিতে র্যাব এলাকায় তাদের গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে।