বরিশাল সংবাদদাতাঃ সম্প্রতি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বরিশাল নগরীর রেবা বেগম ও খোকা মিয়া নামের এক দম্পতি নজিরবিহীন ভূমিকা ও অবদান রাখাকে নিয়ে লেখালেখির পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সন্ধ্যায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের পক্ষ থেকে দম্পতিকে ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করেন। জানা গেছে, বাঙ্গালী জাতি যখন স্বাধীনতার নেশায় যখন পাক হানাদার বাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তখন বাংলার গ্রাম-গঞ্জ, অলি-গলি সব স্থানেই পাক হানাদাররা অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। যার ধারাবাহিকতায় পাক বাহিনী যখন বরিশাল নগরীতে প্রবেশ করে হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম সহ সর্বস্তরের মানুষের উপর হত্যা ধর্ষণ, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ এবং অমানুষিক কর্মকাণ্ড চালাতে থাকে ঠিক ওই সময়ে নিজ জীবনের মায়াকে বিসর্জন দিয়ে হানাদারদের হাত থেকে নিরীহ মানুষকে বাঁচাতে কাজ করেন এই খোকা ও রেবা দম্পতি। এই দম্পতি তখন বাস করতেন কোতয়ালী থানার পুকুরের পূর্ব পাড়ে।
গতকাল সন্ধ্যায় ল’ কলেজ সংলগ্ন বাস ভবনে শুভেচ্ছা প্রদান অনুষ্ঠানে তার সাথে একান্ত আলাপে জানা গেছে, হানাদারদের হত্যা, লুট, ধর্ষণে দিশেহারা মানুষ যখন শহর ছাড়ে, ঠিক তখন তিনি হিন্দুদের বাঁচাতে নিজ টাকায় টুপি কিনে হিন্দুদের মাথায় পরিয়ে এবং কালিমার কয়েকটি আয়ত্ব শিখিয়ে তাদরকে সুকৌশলে রক্ষা করেন। কথাগুলো বলতে বলতে তারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এ জন্য তারা এক সপ্তাহ নগরীর হালিমা খাতুন স্কুলের টর্চার সেলেও আটক ছিলেন। এর নেপথ্যের মূল নায়ক ছিলেন, নগরীর কতিপয় রাজকাররা। তিনি আরো বলেন যে, বিজয় দিবসের দু’দিন আগে পাক বাহিনী তাকে আটক করে কোতয়ালী থানায় নিয়ে যায়। এ সংবাদটি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে আবুল হাসানাত আব্দুল¬াহ খবরটি শোনামাত্র তিনি মুক্তিকামী লোকজনসহ রেবাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনেন। এছাড়াও যুদ্ধে তার অসংখ্য অবদান রয়েছে। যা আমাদের অনেকেরই অজানা। তবে দেশ স্বাধীন হলেও এই দম্পতি তেমন কোন স্বীকৃতি পাননি। শুধু জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর পকেট থেকে দেয়া একটি ছবিই তার জীবনের স্বাধীনের একমাত্র চিহ্ন হিসেবে আজও বহন করে চলছেন।
এদিকে গতকাল ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন, বরিশাল জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের আহবায়ক হাসান মাহমুদ বাবু, যুগ্ম আহবায়ক মো. শাহিন খান, সদস্য সচিব এহসান রাব্বি। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের সদস্য বিন্দু, শিমু, জহির, বিকাশ, রিমন, সাকিল, হাসান সহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ।